রাজীবপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
সেচ মৌসুমে চিলমারীতে তেলশূন্য মেঘনা বার্জ : চাষিরা হতাশ
চিলমারীর ভাসমান তেল ডিপো মেঘনা পেট্রোলিয়াম বার্জ বোরো মৌসুমের শুরুতেই তেলশূন্য হয়ে পড়েছে। এ অবস্থা চলছে দুই মাস ধরে। এই ডিপোগুলো থেকে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর ও লালমনিরহাট জেলায় তেল সরবারহ করা হয়। স্থানীয় তেল ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন দফতরে জানিয়ে ও অভিযোগ করেও কোনো ফল না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন। সেচ মৌসুমে ডিপোতে তেল না থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণেই ডিপোটি তেলশূন্য হয়ে পড়েছে। নতুন করে তেল আনছে না মেঘনা ডিপোর কর্মকর্তরা। শুধু যমুনা অয়েল কোম্পানির একটি মাত্র বার্জ চালু থাকলেও তা দিয়ে চাহিদা মিটছে না।
সেচ মৌসুমের শুরুতেই একটি বার্জ দীর্ঘদিন ধরে তেলশূন্য থাকায় ইরি-বোরো আবাদ সংকটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ী ও কৃষকরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট ও জামালপুর জেলার প্রান্তিক কৃষক ও ব্যবসায়ীদের জ্বালানি চাহিদা শুধু যমুনা অয়েল কোম্পানির মাধ্যমে মেটানো সম্ভব নয়। এসব অঞ্চলের বেশির ভাগ এলাকা চরাঞ্চল কৃষকরা বিদ্যুৎ সুবিধা না থাকায় শুধু জ্বালানি তেলের ওপর তাদের চাষাবাদ নির্ভরশীল। রাজীবপুর বাজারের তেল ব্যবসায়ী তৈয়ব আলী জানান, সড়কপথে তেল পরিবহন করলে লিটারপ্রতি ৭ থেকে ৮ টাকা বেশি খরচ হয়। তাই জনগণের সুবিধার্থে ডিপোতে তেলের মুজদ বাড়িয়ে এ এলাকার তেলের চাহিদা পূরণ করা দরকার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেঘনা অয়েল কোম্পানির ডিএস আবু সাঈদ জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তেল সরবরাহ করলে বিতরণে কোনো বাধা নেই। কোম্পানির এজিএম (সাপ্লাইয়ার ও ডিস্ট্রিবিউশন বিভাগ) টিপু সুলতান জানান, নদীর পানি এখন খুব কম তেলভর্তি জাহাজ আটকে যায় তাই পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। মেঘনা অয়েল কম্পানির ডিজিএম মীর সাইফুল্লাহ আল খায়ের জানান, বার্জটিতে ছিদ্র দেখা দেওয়ায় তা মেরামত না করে তেল সরবরাহ করা যাবে না। তিনি আরো বলেন, দ্রুত বার্জপি ঠিক করে তেল সরবরাহ করা হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে ১৯৮৯ সাল থেকে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলায় জোরগাছ ঘাটে ভাসমান তেলের ডিপো পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল নামে তিনটি কোম্পানি কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, জামালপুর ও লালমনিরহাট জেলায় তেল সরবরাহ করে থাকে। কয়েক বছরের আড়ে পদ্মা তেল কোম্পানির বার্জটি মেরামতের অজুহাতে অন্যত্র সরিয়ে নেয়। এর বাকি দুই কোম্পানি মেঘনা ও যমুনা অয়েল কোম্পানি এ অঞ্চলে তেল সরবরাহ করে আসছে। এ দুটি বার্জের ধারণক্ষমতা সাড়ে ১০ লাখ লিটার। গত কয়েক মাস ধরে মেঘনা কোম্পানি তাদের বার্জ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকায় স্থানান্তর করে। বার্জটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকায় নোঙর করায় তেল বিক্রি শূন্যের কোটায় নেমে আসে। ওই একই সময় অপেক্ষাকৃত ভালো যোগাযোগের স্থানে যমুনা অয়েল কোম্পানি তাদের বার্জটি স্থানান্তর করে। এতে তাদের বিক্রি বেড়ে যায়। জ্বালানি চাহিদা পূরণে হিমশিম খাচ্ছে যমুনা অয়েল কোম্পানি।
"