হাসমত আলী, গাজীপুর

  ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

ভ্যানবাজারে দাম কম ক্রেতাদের স্বস্তি

গাজীপুরে প্রতিনিয়তই বাড়ছে মানুষ। তাই ভোক্তাদের নিত্যদিনের চাহিদা পূরণে এখানকার বিপণী বিতান ও বাজারের দোকান পাটের বিপরীতে সড়ক-মহাসড়কের পাশে গড়ে উঠেছে ভ্যানগাড়ির দোকান। এসব ভ্যানগাড়িতে কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে ব্যবসা করছেন ব্যবসায়ীরা। বিকেল থেকে রাতেও চলে এসব দোকানে বিকিকিনি। তুলনামূলক কম দামে পণ্যও পাওয়া যায় এই ভ্যানবাজারে। ক্রেতারা এসব ভ্যানবাজার থেকে কম দামে পাচ্ছেন দরকারি জিনিস। এতে তাদের স্বস্তি মিলছে।

টঙ্গী, চান্দনা চৌরাস্তা, বোর্ডবাজার, কোনাবাড়ি, সফিপুরসহ জেলার ব্যস্ততম এলাকাগুলো মার্কেটগুলোতে একটি ছোট্ট দোকানও ভাড়া নিতে স্থানভেদে তিন থেকে ১০ হাজার বা তার চেয়েও বেশি টাকা ভাড়া দিতে হয়। জামানত গুনতে হয় কয়েক লাখ টাকা। তরকারি বাজারগুলোতে স্থান ভেদে ৩০ হাজার থেকে শুরু করে লক্ষাধিক টাকা জামানত দিতে হয়। এরপর দোকান সাজানোর পুঁজি। কাজের সন্ধানে গাজীপুর আসা নিম্ন আয়ের মানুষের পক্ষে এ জাতীয় দোকান ভাড়া নেওয়া অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একটি ভ্যানগাড়ি দৈনিক ৮০ থেকে ১০০ টাকায় ভাড়া পাওয়া যায়। আর দু-চার হাজার টাকা পুঁজি হলে বিভিন্ন প্রকারের সবজি, ফলমূল অথবা, ফুসকা, চটপটি, রুটি-হালুয়া জাতীয় খাবারের দোকান আর ২০-২৫ হাজার টাকা পুঁজি হলে সোয়েটার, গেঞ্জি, প্যান্ট ইত্যাদি জাতীয় গার্মেন্টপণ্যের ব্যবসা করা যায়। তাই কাজের সন্ধানে গাজীপুরে আসা অনেক মানুষ এখন এসব ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

একই পণ্য অনেক সময় বিপণী বিতান কিংবা কাঁচাবাজারগুলো থেকে ভ্যানগাড়ির হাটে কমদামে পাওয়া যায়। অনেক সময় চাহিদা অনুযায়ী, পণ্যটি ভ্যানগাড়ির বদৌলতে হাতের নাগালে পাওয়া। তাই নিম্ন আয়ের মানুষ থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তদের কাছে এ বাজারের কদর দিন দিন বেড়ে চলছে। এখন এসব পণ্যবাহী ভ্যানগাড়ি বিভিন্ন আবাসিক এলাকা, সড়ক-মহাসড়কের পাশে ও অলি-গলিতে দেখা যায়।

রিকশা-ভ্যানগাড়িতে করে সাধারণত লাউ, বেগুন, বররটি, মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, শসাসহ নানা ধরনের শাক-সবজি, বাদাম, ফুসকা, চটপটি, হালুয়া-রুটি, চিতই-তেলের পিঠা জাতীয় খাবার, জুতা, মোজা, সোয়েটার, প্যান্ট, গেঞ্জি, বাচ্চাদের কাপড় জাতীয় গার্মেন্টপণ্য, নানা ধরনের কসমেটিক- ইমিটেশনের গহনা, বৈদুতিক বাতি, ঘড়ি, বেসলেট, ব্যাল্ট, মানিব্যাগ ইত্যাদি বিক্রি হয়।

গাজীপুর জেলা শহরে জোড়পুকুর এলাকায় রাজবাড়ি সড়কের পাশে রিকশা-ভ্যানে করে বিভিন্ন প্রকারের শাক-সবজি বিক্রি করেন আজিজুল হক। তার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁওয়ে। তিনি ভাড়া থাকেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের হাড়িনাল এলাকায়। প্রায় চার বছর আগে কাজের সন্ধানে গাজীপুর এসে পাঁচ হাজার টাকায় একটি পুরাতন ভ্যানগাড়ি কিনে আর ৪-৫ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে এ ব্যবসা শুরু করেন। তিনি জানান, সকালে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তার কাঁচামালের আড়ৎ থেকে শাক-সবজি কিনে আনেন। পরে সেগুলো ধুয়ে পরিষ্কার করে বিকেলে জোড়পুকুর এলাকায় বিক্রি করতে আনেন। তিনি জানান, বিক্রি মোটামুটি ভালো। প্রায় সব দিনই সবপণ্য বিক্রি হয়ে যায়। মাঝে মধ্যে কিছু পণ্য থেকে যায়। এতে গড়ে দৈনিক ৫০০-৭০০ টাকা রোজগার হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বাজারে একটি দোকান নিতে ৩০-৪০ হাজার টাকা অগ্রিম দিতে হয়, যা তার নেই।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের দক্ষিণ ছায়াবীথি এলাকার আবুল বাসার। তিনি ঢাকার বনানীতে একটি বেসরকারি অফিসে চাকরি করেন। তিনি জানান, সবসময় বাজারে যাওয়ার সময় হয় না। রাস্তার পাশেই এখন ভ্যানগাড়িতে শাক-সবজি বা অন্যান্য পণ্য পাওয়া যায়। দামও কম। তাই কিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist