আদালত প্রতিবেদক
হেফাজতের আসামিকে সাজা
লোহাগাড়ার ওসিকে বদলির নির্দেশ
পুলিশ হেফাজতে থাকা ফৌজদারি মামলার আসামিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়ার ঘটনায় চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানার ওসি শাহজাহানকে বদলির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি সৈয়দ মো. দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের বেঞ্চ গতকাল সোমবার এ আদেশ দেন। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে সতর্ক থাকার অঙ্গীকার করায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলম, লোহাগাড়া থানার এসআই হেলাল খান ও ওয়াসিম মিয়াকে নিঃশর্ত ক্ষমার পাশাপাশি রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
আদালতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও তিন পুলিশের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মওদুদ আহমদ ও আবদুুল মতিন খসরু ও আইনজীবী ফারজানা শারমিন; রিটের শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
মনজিল মোরসেদ পরে সাংবাদিকদের বলেন, চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় পুলিশ হেফাজতে থাকা ফৌজদারি মামলার এক আসামিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, থানার ওসি, এসআই ও এএসআইকে গত ১৪ জানুয়ারি তলব করে ২৮ জানুয়ারি তাদের ব্যাখ্যা দিতে বলেন হাইকোর্ট।
তিনি বলেন, শুনানিতে আমরা ওই ম্যাজিস্ট্রেটের পাওয়ার সিজ করার আরজি জানিয়েছিলাম। কিন্তু নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও তিন পুলিশের আইনজীবী সাবেক দুই আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও আবদুুল মতিন খসরু বললেন, যেহেতু এ-সংক্রান্ত রুল চলমান, তাই এ আদেশ দেওয়াটা ঠিক হবে না। পরে আদালত ওই ম্যাজিস্ট্রেটকে ও তিন পুলিশকে নিঃশর্ত ক্ষমা করে দিয়ে রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাদের ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
গতকাল সোমবারও লোহাগাড়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) মাহবুব আলম, ওসি শাহজাহান এবং এসআই হেলাল ও এএসআই ওয়াসিম আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাজা চ্যালেঞ্জ করে করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে একই বেঞ্চ ১৪ জানুয়ারি রুলসহ আদেশ দিয়েছিলেন।
দুই পুড়িয়া গাঁজাসহ হাতেনাতে ধরার অভিযোগে লোহাগাড়ার আধুনগরের বাসিন্দা মো. বেলাল হোসেন ১৪ অক্টোবর ভ্রাম্যমাণ আদালত আট মাসের সাজা দেন। সে সাজার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে তিনি রিট আবেদন করেন। পরে এ রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ১৪ জানুয়ারি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বেলাল উদ্দিনকে দেওয়া সাজা কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।
একই সঙ্গে রিট আবেদনকারীকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না তা-ও রুলে জানতে চাওয়া হয়। চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্রসচিব, লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ পাঁচ বিবাদীকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
"