মোঃ শাহ আলম, খুলনা
প্রকল্প ব্যয় ২৬৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা
খুলনায় তৈরি হচ্ছে উন্নত গরু প্রজননের মিনিল্যাব
কৃত্তিম পদ্ধতিতে উন্নতমানের ষাঁড় ও গাভী জন্ম দিতে নগরীর রূপসা বাইপাস রোড সংলগ্ন চক হাসানখালী মৌজায় ‘বুল কাফ রিয়ারিং ইউনিট কাম মিনিল্যাব’ স্থাপন করছে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর।
২৬৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে খাদ্য নিরাপত্তা ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় ডিম, দুধ ও মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধিসহ কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অনন্য অবদান রাখবে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিতে প্রাণিসম্পদ সাব সেক্টরের অবদান দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। খাদ্য নিরাপত্তা ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় ডিম, দুধ ও মাংসের গুরুত্ব অপরিসীম। খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে প্রাণিজ আমিষ বিশেষ করে ডিম, দুধ এবং মাংসের অনেক ঘাটতি রয়েছে। এ ঘাটতি পূরণে ২৬৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে বুল কাফ রিয়ারিং ইউনিট মিনিল্যাব স্থাপনের মাধ্যমে উন্নতমানের ষাঁড় ও সিমেন তৈরিতে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষে সম্প্রতি ওই প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম ও মাস্টারপ্ল্যান শুরু হয়েছে। নগরীর রূপসা বাইপাস রোড সংলগ্ন চক হাসানখালী মৌজায় পাঁচ একর জমির ওপর প্রকল্পটি স্থাপন করা হচ্ছে। প্রকল্পে রয়েছে অফিস কাম ল্যাব ভবন, বুল কাফ শেড, গ্রোয়িং বুল কাফ শেড, বুল শেড রানসহ, সিমেন কালেকশন শেড, গবাদি পশুর খাদ্য গুদাম, আইসেলেশন শেড, এক্সারসাইজ ইয়ার্ড, বাউন্ডারি ওয়ালসহ ইন্টারন্যাল আরসিসি রোড, ওভারহেড ওয়াটার ট্যাঙ্ক এবং পাম্প হাউস ও অবশিষ্টাংশ ইত্যাদি। আগামী ২০২০ সালে ডিসেম্বর মাসে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
গবাদিপশু পালনকারী খামারি সরদার মোশারফ হোসেন বলেন, প্রকল্পটি খামারিদের জন্য খুব প্রয়োজনীয়। আর এই উদ্যোগটি খুব ভালো। এর মাধ্যমে গবাদিপশু পালনে খামারিদের উন্নয়নের পাশাপাশি দেশেরও উন্নয়ন হবে বলেও জানান তিনি।
খামারি মো. আরশাদ হোসেন বলেন, সরকার প্রকল্পটি গ্রহণের ফলে চাষিদের জন্য ভালো হলো। এর ফলে চাষিরা চাষ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারবে।
অপর এক খামারি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এই প্রকল্পটি গ্রহণ করায় খুলনার চাষিরা আরো এক ধাপ অগ্রসর হলো। তবে প্রকল্পটি যথাযথভাবে সম্পন্ন করার কথা তিনি বলেন।
খুলনা পোল্ট্রি ফিশ ফিড শিল্প মালিক সমিতির মহাসচিব প্রাণীপ্রেমী এসএম সোহরাব হোসেন বলেন, আগে তারা ১০-১৫ দিন প্রশিক্ষণ নিয়ে বিভিন্ন ধরনের খামার শুরু করতেন। তবে প্রকল্পটি শেষ হলে সেখানে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একটি দক্ষ কর্মী বাহিনী গড়ে উঠবে। একই সঙ্গে গবাদিপশুর চাষটি সময় উপযোগী, আধুনিক পদ্ধতির ও আন্তর্জাতিক মানের হবে।
প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. বেলাল হোসেন বলেন, বুল কাফ রিয়ারিং ইউনিট কাম মিনিল্যাবে উন্নতমানের ষাঁড় ও সিমেন তৈরি করা হবে। পরবর্তীতে ওই ষাঁড় ও সিমেন স্বল্পমূল্যে দেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে সরবরাহ করা হবে। অতএব প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দেশে খাদ্য নিরাপত্তা ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় ডিম, দুধ ও মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধিসহ কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অনন্য অবদান রাখবে। শিশুখাদ্য প্রাপ্তিও নিশ্চিত হবে, গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগি লালন-পালনের মাধ্যমে কর্মসংস্থান ও আয় বৃদ্ধি করে জীবনমান উন্নতকরণে সহায়ক হবে।
"