কক্সবাজার প্রতিনিধি
টেকনাফে ডিপথেরিয়ায় ৩০ রোহিঙ্গা শিশুর মৃত্যু
আক্রান্ত আরো ৭, আতঙ্ক
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে রোহিঙ্গাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে ডিপথেরিয়া রোগ। এই ছোঁয়াছে রোগটি রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে স্থানীয়দের মাঝেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ৩০টি রোহিঙ্গা শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে স্থানীয় আরো সাতজন শিশু। এতে রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
চিকিৎসকরা জানায়, ডিপথেরিয়া একটি ছোঁয়াছে রোগ। এই রোগ এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত হয়। সম্প্রতি এই রোগ উখিয়া-টেকনাফে অবস্থানরত রোহিঙ্গা আশ্রয় এলাকায় প্রাদুর্ভাব ঘটছে। রোগটি রোহিঙ্গা বসতি এলাকাসহ আশপাশের স্থানীয়দের মাঝেও ছড়িয়ে পড়ছে। শীতের তীব্রতা যতই বাড়ছে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে ডিপথেরিয়া রোগ ততই বেড়ে চলছে। আক্রান্ত হচ্ছে শিশু-কিশোর। বর্তমানে এই রোগ নিয়ে কাজ শুরু করেছে দেশি-বিদেশি সংস্থাসমূহ।
উপজেলা সদর হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত এক সপ্তাহে রোহিঙ্গা আশ্রয় ক্যাম্পের পার্শ্ববর্তী এলাকা টেকনাফের হোয়াইক্যং উনচিপ্রাং এলাকায় একজন, চাকমারকুল এলাকার একজন ও হ্নীলা এলাকায় পাঁচজন শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এসব শিশুর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, ডিপথেরিয়ায় আক্রান্তের খবরে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক শুরু হয়েছে। অভিভাবকরা তাদের ছেলে মেয়েদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুমন বড়–য়া জানান, ডিপথেরিয়া হলো এক ধরনের ব্যাকটরিয়া। এই রোগে এক হতে ১৮ বছর বয়সি শিশুরাই আক্রান্ত হয়ে থাকে। বিশেষ করে অপুষ্টিজনিত এবং ঘন বসতিপূর্ণ এলাকার শিশুরাই এ রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। তিনি বলেন, এই রোগের তিনটি টিকা রয়েছে। যেসব শিশু এই টিকা নিয়েছে তাদের ডিপথেরিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম।
তিনি আরো জানান, মিয়ানমার থেকে আগত শিশুদের বেশির ভাগ অপুষ্টিজনিত সমস্যায় ভুগছে। জন্মের পর তাদের কোনো টিকা দেওয়া নাই। এ কারণে ডিপথেরিয়াসহ নানা রোগ তাদের সহজে আক্রান্ত করে। তাছাড়া রোহিঙ্গাদের ঘনবসতি, খাওয়া দাওয়া ও পয়ঃপ্রণালি স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বর্তমানে কক্সবাজারের বেশ কিছু মেডিক্যাল টিম এই রোগের ওপর কাজ করছে। সেখানে দেশি-বিদেশি সংস্থাগুলোও কাজ শুরু করছে। যার ফলে এই রোগ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। তবে শিগগিরই শিশুদের রক্ষার্থে আগামী ১৩ জানুয়ারি হতে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতি ইউনিয়নে এক দিন করে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
"