ক্রীড়া ডেস্ক

  ১৬ জুলাই, ২০১৮

ফাইনালের নায়ক গ্রিজম্যান

রাশিয়া বিশ্বকাপের শুরুতে যেসব বড় তারকা নিয়ে মাতামাতি ছিল তাদের মধ্যে ছিলেন আঁতোয়ান গ্রিজম্যান। বর্তমান ফুটবল বিশ্বে মেসি, রোনালদোর পরই উচ্চারিত হয় তার নাম। বিশ্বকাপে ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় তারকাও তিনি। অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্ব গুণের জন্য কোচ দিদিয়ের দেশম আর্মব্যান্ডটা পরিয়ে দিয়েছিলেন গ্রিজম্যানের হাতে। কোচের ভরসার প্রতিদানটা হাতেনাতেই দিয়েছেন তিনি। দুই দশক পরে ফ্রান্সকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেছেন এই ২৭ বছর বয়সী ফরওয়ার্ড।

কাল লুঝনিকিতে ফাইনালে জয়ের নায়কও গ্রিজম্যান। মাঠে ক্রোয়াশিয়াকে পরাজয় উপহার দেওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। ফরাসিদের তিনটি গোলের কারিগরই তিনি। তার মধ্যে পেনাল্টি থেকে একটি গোলও আদায় করে নিয়েছেন এই অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ফরওয়ার্ড। গোল্ডেন বলের অন্যতম দাবিদারও ছিলেন গ্রিজম্যান। যদিও পুরস্কারটি জিতে নিয়েছেন ক্রোয়েশিয়ার প্রাণভোমরা লুকা মডরিচ। তবে ফাইনালের ম্যাচ সেরার স্বীকৃতিটা ঠিকই উঠেছে গ্রিজম্যানের হাতে।

২০১৬ ইউরোতে ঘরের মাঠে শিরোপাটা তুলে দিতে হয়েছিল পর্তুগালের হাতে। এবার তারই আক্ষেপ ঘোচালেন গ্রিজম্যান। রাশিয়া বিশ্বকাপে ৪ গোল (৩টি পেনাল্টি) ও ২ অ্যাসিস্ট করে দলকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শিরোপাটায় যে জেতালেন তিনি। গ্রিজম্যান ৭ ম্যাচে মাঠে ছিলেন ৫৭০ মিনিট। ইউরোতে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার হাতে উঠলেও এবার বঞ্চিত থাকতে হলো তাকে। তবে তা নিয়ে কোনো খেদ নেই গ্রিজম্যানের। দলের বিশ্বকাপ জয়েই তিনি খুশি। ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সেই কথাটি শোনালেন তিনি। ‘রাশিয়া আসার আগে থেকে আমরা বিশ্বকাপটা জিততে চেয়েছি। আজ আমরা একটা দল হিসেবে সেই সাফল্যটা পেয়েছি। চ্যাম্পিয়ন হওয়া সত্যিই বিশেষ কিছু। বিশেষ আনন্দের।’

১৯৯৮ সালে ঘরের বিশ্বকাপে জিনেদিন জিদান, দিদিয়ের দেশমদের হাত ধরে প্রথম চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ফ্রান্স। এবার সেই রথী-মহারথীদের পাশে নিজের নামটা স্বর্ণাক্ষরে লিখে ফেললেন গ্রিজম্যান। গ্রিজম্যান নিজেও মহারথী বটে। ক্লাব ক্যারিয়ারেও নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। লা লিগার ক্লাব অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের এই ফরওয়ার্ডকে পেতে এমনিতে মুখিয়ে আছে বার্সেলোনার মতো বড় ক্লাবগুলো। বিশ্বকাপের পরে হয়তো কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার বস্তা নিয়ে এই ফ্রেঞ্চম্যানকে দলে ভিড়াতে চাইবেন ইউরোপের অন্যান্য নামিদামি ক্লাব। কেননা নিজের অভিষেক বিশ্বকাপেই যে ফ্রান্সকে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সাফল্য এনে দিয়েছেন গ্রিজম্যান।

কাল ম্যাচ শেষে কোচ দিদিয়ের দেশমের প্রশংসাপত্রটাও পেলেন গ্রিজম্যান। দেশম তার দলের প্রাণভোমরা ও প্রিয় শিষ্য নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সে (গ্রিজম্যান) অসাধারণ একজন। সে কেবল গোলে ভূমিকা রাখে না। মাঝমাঠেও সে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।’

কথাটা যে মিথ্যা নয়, কাল তা প্রমাণ করেছেন গ্রিজম্যান। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে মাঠের সর্বত্র ছড়ি ঘুুরিয়েছেন তিনি। মধ্যমাঠ থেকে যেমন সহায়তা করেছেন পগবাকে। তেমনি কিলিয়ান এমবাপ্পে ও অলিভিয়ের জিরোকেও সাহায্য করেছেন আক্রমণভাগে। এমনকি রক্ষণভাগে এসে রাফায়েল ভারানে, স্যামুয়েল উমিতিতিদের সঙ্গে দেয়াল তুলেছেন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।

গ্রিজম্যান জন্মগ্রহণ করেছেন ফ্রান্সের ম্যাকাও শহরে। ২১ মার্চ ১৯৯১ সালে। ফুটবল ক্যারিয়া শুরু করেন ম্যাকাও যুবদলে। এরপর চলে আসেন রিয়াল সোসিয়াদে। ঐখানে থেকে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। অ্যাটলেটিকোর এখন মূল খেলোয়াড়ও তিনি। ২০১৪ সালে ফ্রান্সের জাতীয় দলে অভিষেক ঘটে তার। এরপর থেকে দলের প্রাণভোমরা হয়ে উঠতে বেশি দিন সময় লাগেনি গ্রিজম্যানের।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist