ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে ৬ নম্বরে টাইগাররা
বাংলাদেশের দুর্দান্ত জয়
অবশেষে আয়ারল্যান্ডের ত্রিদেশীয় সিরিজে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধেও দুর্দান্ত এক জয় তুলে নিল বাংলাদেশ। টস হেরে ফিল্ডিংয়ের পর ২৭১ রানের জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নেমে শুরুতেই সৌম্যের বিদায়। তবে এর পরও ১০ বল বাকি থাকতে ৫ উইকেটের দারুন এক জয় পায় বাংলাদেশ। আর এই জয়ের ভিত গড়ে তুলেন দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তামিম ও সাব্বির। এরপর দ্রুত কয়েকটি উইকেট পতনের পর আবার হাল ধরার চেষ্টা করেন সাকিব-মুশফিক। তারপর মুশফিক ও রিয়াদ। অতপর ডাবলিনের ক্লনটার্ফে রচিত হলো নতুন এক অধ্যায়। টাইগারদের থাবায় শেষ পর্যন্ত কুপোকাত হল নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশ জিতল ৫ উইকেটের ব্যবধানে। ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে দারুণ এই জয়ে প্রথমবারের মতো আইসিসির ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে ৬ নম্বর স্থান নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। সাতে নেমে গেছে শ্রীলঙ্কা। ফলে ২০১৯ বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে আর কোন অনিশ্চয়তা নেই। সরাসরিই খেলবে টাইগার শিবির।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে ২৭০ রান করে নিউজিল্যান্ড। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৪ রান করেন শূন্য রানে জীবন পাওয়া অধিনায়ক টম লাথাম। ব্রুম ৬৩ ও টেইলর ৬০ রানে অপরাজিত ছিলেন। বাংলাদেশের হয়ে মাশরাফি, সাকিব ও নাসির দুটি, মুস্তাফিজ ও রুবেল একটি করে উইকেট লাভ করেন। বাংলাদেশ দলে আজ একটাই পরিবর্তন। আগের ম্যাচে অভিষেক হয়েছিল সানজামুল ইসলামের। তিনি আজ নেই। তার পরিবর্তেই দলে ঠাঁই পেয়েছেন নাসির হোসেন।
ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে হারানোর অভিজ্ঞতা আছে বাংলাদেশের। কিন্তু বিদেশের মাটিতে এতদিন নিউজিল্যান্ড ছিল দুর্বোধ্য এক ধাঁধাঁই। সেই ধাঁধাঁর জবাব পাওয়া গেল বুধবার ডাবলিনে। বিদেশের মাটিতে এল নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম জয়। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে ২৭০ রান করে নিউজিল্যান্ড। জবাবে বাংলাদেশ জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ১০ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটর বিনিময়ে। জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলেই ছক্কায় হাঁকিয়ে দারুণ সূচনা করেন ওপেনার তামিম ইকবাল। যাতে রেকর্ড হয়ে গেছে। বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে প্রথম বলে ছক্কা মারা রেকর্ড ছিল না। কিন্তু তা তামিম করে দেখান ডাবলিনে।
তবে প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই গোল্ডেন ডাক মারেন সৌম্য সরকার। প্যাটেলের করা বলে ক্যাচ তুলে দেন অ্যান্ডারসনের হাতে। শূন্য রাতে সাজঘরে ফেরেন বাংলাদেশ ওপেনার। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে হাল ধরেন তামিম ও সাব্বির। দুজনই এক পর্যায়ে ফিফটি পূর্ণ করেন। যা ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তামিমের ৩৬তম ও সাব্বিরের ৫ম ফিফটি। দুজনেই ভালো আগাচ্ছিলেন। তবে হঠাতই ছন্দপতন। সান্টনারকে সীমানার বাইরে পাঠানোর জন্য হাঁকালেন ব্যাট। কিন্তু না, তালুবন্দী হলেন বেনেটের হাতে। ৮০ বলে ৬৫ রানে সাজঘরে ফেরেন তামিম। যার মধ্যে ছিল ছয়টি চার ও একটি ছক্কার মার। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তামিম-সাব্বির যোগ করেন ১৩৬ রান।
তামিমের বিদায়ে পর ভুলবুঝাবুঝিতে রান আউট হন সেট ব্যাটসমস্যান সাব্বির রহমান। সান্টনারের বলে মোসাদ্দেক ব্যাট হাঁকিয়ে খানিকটা দৌড় দিয়েও ফিরে আসেন ক্রিজে। তবে অপর প্রান্তে থাকা সাব্বির চলে আসেন মোসাদ্দেকের প্রান্তে। অনায়াসে স্ট্যাম্প ভেঙে দেন নিল ব্রুম।
৮৩ বলে ৯ চারে ৬৫ রান করে ফেরেন সাব্বির। যার মধ্যে ছক্কা ছিল না। তবে ছিল নয়টি বাউন্ডারি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে সাব্বিরের এটি ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। আগেরটি ছিল অপরাজিত ৬৪ রান। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও। ১৩ বলে ১০ রান করে প্যাটেলে বলে এলবিডব্লিউর শিকার হন তিনি। বাংলাদেশের দলীয় রান তখন ৩ উইকেটে ১৬০ রান।
পঞ্চম উইকেট জুটিতে বাংলাদেশকে আশা জাগিয়েছিলেন মুশফিকুর রহীম ও সাকিব আল হাসান। দুজনে যোগ করেন ৩৯ রান। কিন্তু এরপরই ফাঁদে পড়েন সাকিব আল হাসান। লাফিয়ে ওঠা বেনেটের বল সীমান ছাড়া করতে গিয়ে সান্টনারের হাতে বন্দী সাকিব। ৩২ বলে দুই চারে ১৯ রান করে সাজঘরে ফেরেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে বাংলাদেশকে অবিস্মরণীয় জয় এনে দেন মুশফিক ও রিয়াদ।পিডিএসও/মুস্তাফিজ