ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৭ জানুয়ারি, ২০১৯

বিতর্কের নাম ‘ডিআরএস’

ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস)। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) যোগ করা হলো এই প্রযুক্তি। যা নিয়ে প্রথমদিন থেকেই বিতর্ক। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে খেলোয়াড়দের রিভিউর একই ফলাফল নিয়ে দেখা যাচ্ছে বিভ্রান্তি। এই বিতর্ক নিয়েই এগোচ্ছে বিপিএলের ষষ্ঠ আসর।

মূলত ব্যাটের এজ পরখ করে দেখার অন্যতম উপায় শব্দ-নির্ভর কোনো প্রযুক্তি স্নিকোমিটার বা আল্ট্রা এজ নেই বিপিএলের ডিআরএস সিস্টেমে। তাতে করে প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে দুই রকম ফল এসেছে। প্রথমদিনে রাজশাহী কিংস-ঢাকা ডায়নামাইটস ম্যাচে অন্তত দুটি একই রকম রিভিউয়ের ফল এসেছে ভিন্ন। ঢাকার ব্যাটিংয়ের অষ্টম ওভারে কাইস আহমেদের বলটা আড়াআড়ি খেলতে গিয়েছিলেন হযরতউল্লাহ জাজাই। পরবর্তীতে রাজশাহীর জোরালো আবেদনেও আউট দেননি আম্পায়ার। রাজশাহী নিয়েছিল রিভিউ। তবে টিভি আম্পায়ারের ভরসা ছিল শুধু স্লো মোশনের রিপ্লে। বেশ কয়েকবার দেখার পর তিনি জাজাইকে মাঠে থাকার অনুমতি দেন।

এরপর রাজশাহী ইনিংসের চতুর্থ ওভারে আন্দ্রে রাসেলকে স্কুপ করতে গিয়ে উইকেটকিপারের হাতে ধরা পড়েছিলেন মোহাম্মদ হাফিজ। ঢাকার আবেদনে অন-ফিল্ড আম্পায়ার রানমোরে মার্টিনেজ দিয়েছিলেন আউট। পরে সঙ্গীর সঙ্গে আলোচনা করে হাফিজ নিয়েছেন রিভিউ। এবারও টিভি আম্পায়ার রিপ্লে দেখেছেন বেশ কয়েকবার, শুনতে চেয়েছেন স্টাম্প-মাইকের আওয়াজ। সবকিছুর পরপর তিনি হাফিজকে দিয়েছেন নট আউট। সাধারণত প্লেয়ার্স রিভিউয়ের সিদ্ধান্ত অন-ফিল্ড আম্পায়ারকে দিয়ে দেওয়া হলেও এ সিদ্ধান্ত আবার দেখানো হয়েছে স্টেডিয়ামের মাঠের বড় স্ক্রিনে। রাসেল-পোলার্ডরা সেটা দেখেছেন একরাশ বিস্ময় নিয়ে। এর আগে প্রথম ম্যাচেও হয়েছে একটি রিভিউ, মোহাম্মদ শাহজাদকে আম্পায়ার দিয়েছিলেন এলবিডাব্লিউ। প্যাডে লাগার আগে বল ব্যাটে লেগেছে কি না, সেটা দেখতে আম্পায়ার সহায়তা নিয়েছিলেন ‘জুমার’ এর!

প্রথমদিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও অপ্রত্যাশিত ঘটনা। এর শিকার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। ইনিংসের অষ্টম ওভারের প্রথম বলে আল আমিনের বলে ব্যাট চালাতে গিয়ে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের হাতে ধরা পড়েন সাবেক অজি অধিনায়ক। মুহূর্তেই বল-ব্যাট সংঘর্ষ হয়েছে এমন দাবি তুলে জোরালো আবেদন করেন পেসার আল আমিন। আর তা প্রথম দিকে আউট না দিলেও রিভিউর জেরে আউট হন স্মিথ। ফলে ১৬ রানের স্কোরটি আর বড় করা সম্ভব হয়নি কুমিল্লা অধিনায়কের। বিষয়টি যে তিনি মেনে নিতে পারেননি সেটা তার চোখে মুখে স্পষ্ট হয়েছে।

স্মিথের আউট নিয়ে ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস কোচ সালাউদ্দিনকে। তিনি বলেছেন, ‘বিষয়টি (ডিআরএস) নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। ডিআরএসের এজ পরখ করার যে প্রযুক্তি স্নিকোমিটার বা আল্ট্রা এজ থাকবে না সেটা আগেই আমাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাই বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য না করাই ভালো।’ তবে তিনি মনে করেন, বিপিএলে ডিআরএস পদ্ধতি মেনে চলা উচিত। কারণ দিনে দিনে বাংলাদেশ ক্রিকেটে উন্নত করছে।

দিনের একই ম্যাচে আম্পায়ারের আরেকটি সিদ্ধান্ত নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে। সিলেটের ইনিংসের ৪.৩ ওভারের সময় পাকিস্তানি অলরাউন্ডার শোয়েব মালিকের বল ফ্লিক করে স্কয়ার লেগে পাঠিয়ে একটু দৌড়ে আবার নিজের বক্সের দিকে ফিরে যান হৃদয়। ততক্ষণে অনস্ট্রাইক প্রান্তে দৌড় শুরু করেন ওয়ার্নার। ফলাফল যা হওয়ার তাই হলো। সিলেটের অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ককে ১৪ রানে আউট হয়ে মাঠ ছাড়তে হলো। কিন্তু কে আগে দাগ ছুঁয়েছে সেটি দেখার জন্য বার বার টিভি রিপ্লের আশ্রয় নিয়েছেন তৃতীয় আম্পায়ার। সেখানে দেখা যায়, হৃদয়ের আগেই দাগ স্পর্শ করেছেন ওয়ার্নার। আম্পায়ারের এই সিদ্ধান্তই অভিষিক্ত ম্যাচে বেশিদূর এগোনোর সুযোগ পায়নি বাংলাদেশি তরুণ।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ডিআরএস,বিতর্ক,বিপিএল,রিভিউ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close