মুহাজিরুল ইসলাম রাহাত, সিলেট

  ০৬ নভেম্বর, ২০১৮

বাংলাদেশের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ

জয় থেকে ২৯৫ রানে পিছিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আলোকস্বল্পতার কারণে দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগে ১০.১ ওভারে বিনা উইকেটে ২৬ রান করে বাংলাদেশ। আজ ফের উইকেটে এসেছেন দুই ওপেনার লিটন দাস (১৪) ও ইমরুল কায়েস (১২)। জিততে হলে বাংলাদেশকে গড়তে হবে ইতিহাস। কঠিন এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য টাইগাররা হাতে পাচ্ছে দুদিন ও ১০ উইকেট।

চতুর্থ ইনিংসে রান তাড়া করে জেতা সব সময়ই কঠিন। কিন্তু অনিশ্চয়তার ক্রিকেটে অসম্ভব বলে কিছুই নেই। জিততে হলে সতর্ক হয়েই খেলতে হবে স্বাগতিকদের। তাহলে আসবে জয়, ভেঙে যাবে অতীতের সব রেকর্ড। কারণ বাংলাদেশের মাটিতে এত রান তাড়া করে জেতার নজির নেই কোনো দলেরই। এ ছাড়া বাংলাদেশও টেস্টে এত বড় লক্ষ্য তাড়া করে জিততে পারেনি কখনো।

২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে রেকর্ড ২১৫ রান তাড়া করে জিতেছিল। চতুর্থ ইসিংসে এটাই টাইগারদের সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। বাংলাদেশের মাটিতে ২০০৮ সালে চট্টগ্রাম টেস্টে সর্বোচ্চ ৩১৭ রানের লক্ষ্য জয়ের রেকর্ড গড়েছিল নিউজিল্যান্ড। সিলেট টেস্টই অতীতে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশকে। সিলেটের স্পিন সহায়ক উইকেটে ২০০ রান তাড়া করে জেতাই কঠিন। সেখানে এ ম্যাচে জিততে হলে দারুণ কিছু করে দেখাতে হবে মাহমুদউল্লাহদের।

তৃতীয় দিনে ১৪০ রানে এগিয়ে থেকে সাবধানী শুরু করেন সফরকারী দুই ওপেনার ব্রায়ান চারি ও অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। তবে উইকেটে তাদের বেশিক্ষণ টিকে থাকতে দেননি বাংলাদেশের স্পিনাররা। ১১তম ওভারে উদ্বোধন জুটিতে প্রথম আঘাত হানেন মেহেদি হাসান মিরাজ। মাঝে বেশকিছু সুযোগ মিললেও উইকেট আসেনি। মিরাজের ঘূর্ণিতে বোল্ড হয়ে চার রান করে ফেরেন ব্রায়ান চারি।

দলীয় ১৯ রানে প্রথম উইকেট পতনের পর সেই ধাক্কা সামাল দেয় জিম্বাবুয়ে। উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন টেলর এসে ওয়ানডে মেজাজে খেলতে থাকেন। আক্রমণাত্মক হয়ে খেলতে গিয়েই ২৫ বলে চারটি চারে ২৪ রান করে তাইজুলের বলে ইমরুলের দুর্দান্ত ক্যাচের শিকার হয়ে ফিরে গেছেন তিনি।

প্রথম সেশনে দুই উইকেট পড়ে যাওয়ার পর বড় লিড পেতে জিম্বাবুয়ের হাল ধরেছিলেন দলপতি মাসাকাদজা ও উইলিয়ামস। প্রথম ইনিংসের মতো ভয়ানক হয়ে ওঠার চেষ্টায় ছিলেন দুজন। এই জুটিতে আসে ৫৪ রান। ভয়ংকর হয়ে ওঠা এই জুটিটা আবারও ভেঙে দেন মিরাজ। প্রথম ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরিয়ানকে এই ইনিংসে দুই রানের জন্য এবার আক্ষেপে পুড়তে হয়েছে। মিরাজের বলে রিভার্স সুইপ করতে গেলে লেগ বিফোরের কাটা পড়েন মাসাকাদজা। ৪৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন প্রতিরোধ গড়তে থাকা মাসাকাদজা।

অধিনায়কের বিদায়ের পর শন উইলিয়ামসের বিদায় নিশ্চিত করেন তাইজুল। একইভাবে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে তিনি বোল্ড হন ২০ রানে। উইকেটে আসা নতুন ব্যাটসম্যান পিটার মুরকে দাঁড়াতেই দেননি তাইজুল। শর্ট লেগে তার ক্যাচ তুলে নেন লিটন দাস। অবশ্য চোট নিয়ে এরপর মাঠ ছাড়তে হয়েছে তাকে। পরিচর্যা নিয়ে আবার ফিরেছেন মাঠে। পাল্টে যাওয়া পরিস্থিতিতে তাইজুলের ঘূর্ণি আগ্রাসনে সফরকারীদের ব্যাটিং বিপর্যয় নিশ্চিত হয় সিকান্দার রাজা বিদায় নিলে। ২৫ রানে ব্যাট করতে থাকা মারকুটে এই ব্যাটসম্যানকে ঘূর্ণি বলে বোল্ড করেন তাইজুল। শেষ দিকে রেগিস চাকাভা ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজা মিলে পুঁঁজি বাড়ানোর চেষ্টায় ছিলেন। দলীয় ১৬৫ রানে মাসাকাদজাকে ফেরান মিরাজ। খানিক পর নাজমুল ইসলাম অপুর বলে মাহমুদউল্লাহর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান চাকাভা (২০)। এরপর আসা-যাওয়ার মিছিলে যোগ দেন ব্রেন্ডন মাভুতা (৬) ও চাতারা (৮)। এরপর দ্রুত চাতারাকে ফিরিয়ে ১১ তুলে উইকেট বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারির তালিকায় নাম লেখান তাইজুল।

বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে জিম্বাবুয়ে তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৮১ রানে অল আউট হয়। এর আগে প্রথম ইনিংসে ১৩৯ রানের লিড পায় তারা। দুই ইনিংস মিলিয়ে তাদের লিড বেড়ে হয় ৩২০ রান। এই ইনিংসেও পাঁচটি উইকেট নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। গত ইনিংসে নেন ছয়টি। ২৮.৪ ওভারে দিয়েছেন ৬২ রান। দুই ইনিংসে মিলিয়ে ১১ উইকেট নিয়েছেন এই বাঁ-হাতি স্পিনার। মিরাজ তিনটি ও দুটি উইকেট নেন নাজমুল।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
চ্যালেঞ্জ,বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে,তাইজুল ইসলাম,মিরাজ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close