আমির হোসেন
মেসির সামনে ফ্রান্স
আর্জেন্টিনার দুইবারের চ্যাম্পিয়ন। গেল বছরের ফাইনালিস্ট। দলে আছেন বিশ্বের সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি। অন্যদিকে ফ্রান্স একবার শিরোপা ঘরে তুলেছে। তাদের দলে ইউরোপের সেরা সেরা সব ফুটবলার রয়েছে। আক্রমণভাগ প্রতিপক্ষকে ছিড়ে-ফুড়ে ফেলার মতো।
দুটিই যে সেরা দল সেটা নিয়ে কারো দ্বিমত থাকার কথা নয়। কিন্তু শনিবার রাতেই এই দুই দলের একটিকে দেশে ফেরার বিমানের টিকিট কাটতে যেতে হবে। সেমিফাইনালে যাওয়ার মতো দুটি দলের একটি দ্বিতীয় রাউন্ডেই বিদায় নিতে যাচ্ছে। কে বিদায় নিবে? আর্জেন্টিনা নাকি ফ্রান্স? পরিসংখ্যান, তথ্য-উপাত্ত কী বলে?
এবারই প্রথম বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। ১৯৭৮ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে তাদের দেখা হয়েছিল। সেবার আর্জেন্টিনা ২-১ গোলে হারিয়ে দিয়েছিল ফ্রান্সকে। তবে সব মিলিয়ে দল দুটি ১১ বার মুখোমুখি হয়েছে। পরিসংখ্যান অবশ্য আর্জেন্টিনার দিকেই খুব করে হেলে আছে। তার মধ্যে আর্জেন্টিনা জিতেছে ৬ বার। আর ফ্রান্স জিতেছে ২ বার। সবশেষ ২০০৭ ও ২০০৯ সালে দল দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলেছে। দুটি ম্যাচেই জিতেছে আর্জেন্টিনা। একটিতে ১-০ ও অপরটিতে ২-০ ব্যবধানে। আজও কি জয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারবে আলবিসিলেস্তারা?
কাজটা অবশ্য সহজ হবে না। কাগজে-কলমে আর্জেন্টিনার চেয়ে এখন শক্তিশালী দল ফ্রান্স। তাদের খেলোয়াড়দের কম্বিনেশনও নজরকাড়া। পারফরম্যান্সও চোখে লাগার মতো। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে তারা শেষ ষোলোতে স্থান করে নিয়েছে। অন্যদিকে কাঠখড় পুড়িয়ে শেষ ষোলোতে আসতে হয়েছে আর্জেন্টিনাকে। তারপরও তাদের দলে আছেন বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় লিওনেল মেসি। তার দিনে যেকোনো প্রতিপক্ষ খড়কুটোর মতো উড়ে যেতে পারে। কিন্তু বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে লিওনেল মেসির পারফরম্যান্স বলতে গেলে একেবারেই উল্লেখযোগ্য নয়। এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো বিশ্বকাপ খেলছেন মেসি। কিন্তু নকআউট পর্বে একবারও জালের নাগাল পাননি তিনি। নকআউট পর্বে ৬৬৬ মিনিট খেলে এখনো গোলশূন্য তিনি।
লিও পারবেন কি তার এই বেমানার খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে? তার সতীর্থরা তাকে যোগ্য সহায়তা দিলে হয়তো পারবেন তিনি। যেমনটা বলেছেন আর্জেন্টিনার কোচ হোর্হে সাম্পাওলি, ‘তার সতীর্থদের কাছ থেকে সহায়তা প্রয়োজন। তাহলেই কেবল সে তার সেরা খেলাটা উপহার দিতে পারবে। তার মানবিক দিকটা অসাধারণ। সে এমনই একজন ব্যক্তি যে অনুভব করতে পারে, কান্না করতে পারে, ভোগান্তির শিকার হতে পারে, আবার জিতলে খুশি হতে পারে। তাকে আমি দুঃখের সময় দেখেছি। আবার দেখেছি খুশির সময়ও। মানুষ বলে থাকে সে আর্জেন্টিনার হয়ে খেলাটা উপভোগ করে না। আসলে কথাটা সত্য নয়।’
ফ্রান্সের তারকা ফুটবল অ্যান্তোনিও গ্রিজমান এখনো তার কারিশমা দেখাতে পারনেনি। তিনি কি তাহলে তার সেরাটা শেষ ষোলোর জন্য তুলে রেখেছেন? গ্রিজমান বলেন, ‘আশা করছি শেষ ষোলোতে আমি আমার সামর্থের প্রমাণ দিতে পারব। এটা ঠিক ইউরোর মতো হচ্ছে। শেষ ষোলোর আগে আমি গোল পাইনি। দেখা যাক। আর্জেন্টিনার বিপক্ষের ম্যাচে আমি আত্মবিশ্বাসী।’
আর্জেন্টিার বিপক্ষের ম্যাচে ফ্রান্সের কোচ দিদিয়ের দেশম দলে পাবেন না ম্যানচেস্টার সিটির বেঞ্জামিন মেন্ডিকে। তিনি পেশির ইনজুরিতে ভুগছেন। তবে লুকাস হার্ন্দান্দেজ খেলতে পারবেন এই ম্যাচে। ডেনমার্কের বিপক্ষের ম্যাচে তাকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল।
আর্জেন্টিনা দলে কোনো ইনজুরি নেই। ফ্রান্সের বিপক্ষে আজ আগের ম্যাচের একাদশই মাঠে নামাতে পারেন সাম্পাওলি। মিডফিল্ডার এনজো পেরেজের সামান্য উরুর সমস্যা আছে। তবে খেলতে সমস্যা হবে না তার। এটা হতে যাচ্ছে সাম্পাওলির ১৫তম ম্যাচ এবং এই প্রথম তিনি অপরিবর্তিত একাদশ মাঠে নামাতে যাচ্ছেন।
পিডিএসও/তাজ