ক্রীড়া ডেস্ক
আজ কী অপেক্ষা করছে মেসিদের জন্য?
প্রত্যাশা বিয়োগ প্রাপ্তি সমান আনন্দ কিংবা হতাশা (প্রত্যাশা-প্রাপ্তি = আনন্দ/হতাশা)। আর্জেন্টিনার আগের ম্যাচটিকে এই সূত্রে ফেললে তাদের সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের জন্য হতাশা অবশিষ্ট আছে। কারণ, আইসল্যান্ডের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার সমর্থকরা যে পারফরম্যান্স ও ফল প্রত্যাশা করেছিল প্রাপ্তিটা তেমন হয়নি। যাকে ঘিরে আর্জেন্টিনার এত এত স্বপ্নের বিচ বপন, সেই লিওনেল মেসি আইসল্যান্ডের বিপক্ষে তার নিকষ কালো ছায়া হয়েছিলেন। ভাগ্যদেবী তাকে সুযোগের ডালি সাজিয়ে দিলেও তিনি সেগুলোর সদ্ব্যবহার করতে পারেননি। নিশ্চিত গোলের সুযোগ পেনাল্টিও মিস করেন ভিন গ্রহের ফুটবলার খ্যাত মেসি। তাতে বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া সবচেয়ে কম জনসংখ্যার দেশ আইসল্যান্ডের বিপক্ষে পয়েন্ট খোয়াতে হয় আলবিসিলেস্তাদের।
প্রথম ম্যাচে পয়েন্ট হারানোয় ফেভারিট আর্জেন্টিনা এখন চাপের মুখে। সেই চাপ মাথায় নিয়েই আজ ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামবে তারা। এই ম্যাচে জয় ভিন্ন অন্য কোনো ফল হলে অপ্রত্যাশিতভাবে সুতোয় ঝুলে যাবে ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালিস্টদের পরের রাউন্ডে যাওয়ার প্রত্যাশিত স্বপ্ন। এমন অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে না চাইলে ক্রোয়েটস পরীক্ষায় সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হতে হবে হোর্হে সাম্পাওলির শিষ্যদের। আর সেই সাফল্য আসতে পারে লিওনেল মেসির বিশ্বস্ত পা ছুঁয়ে। আগের ম্যাচে নিজের সেরাটা দিতে না পারা লিওনেল মেসিকে কেন্দ্র করেই ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ভালো কিছু করার স্বপ্নজাল বুনছে আর্জেন্টিনা।
আগের ম্যাচে সুবিধা করতে না পারলেও বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলারের ওপর আস্থা আছে সতীর্থদের। তাকে সব ধরনের সহায়তা দিতে তারা প্রস্তুত। যেমনটা জানালেন মেসির সতীর্থ পাওলো দিবালা, ‘আমরা সবাই তার পাশে আছি। সেও জানে যে, আমাদের ওপর তিনি যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি নির্ভর করতে পারেন। তাকে সব সময় সহায়তা করতেই আমরা এখানে এসেছি। আমরা সব সময় তার পাশে আছি।’
আগের ম্যাচে ড্র করায় এই ম্যাচে একাধিক পরিবর্তন আনতে পারেন আর্জেন্টিনার কোচ সাম্পাওলি। আইসল্যান্ডের বিপক্ষে ৪-২-৩-১ ফর্মেশনে খেললেও ক্রোয়েটসদের বিপক্ষে ৩-৪-৩ ফরম্যাটে খেলতে পারে। সম্মুখভাগের ক্রিয়েটিভিটি বাড়াতে ডি মারিয়ার পরিবর্তে ক্রিস্টিয়ান পাভনকে সুযোগ দিতে পারে। মিডফিল্ডের শক্তি বাড়াতে পিএসজির জিওভানি লো সেলসোকে সুযোগ দেওয়া হতে পারে শুরুর একাদশে। একাদশে আসতে পারেন লুকাস বিগলিয়াও।
এদিকে প্রথম ম্যাচে জয় পাওয়ায় রীতিমতো উড়ছে ক্রোয়েশিয়া। এই ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে তারা দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করতে চায়। আজ আর্জেন্টিনাকে তারা হারিয়ে দিতে পারলে ২০ বছর পর ব্যাক টু ব্যাক ম্যাচে জয় তুলে নেওয়ার নজির স্থাপন করবে। ক্রোয়েশিয়া এর আগে কখনোই গ্রুপ পর্বে তাদের দ্বিতীয় ম্যাচে হারেনি (জয় ৩টি, ড্র ১টি)। ২০০২ বিশ্বকাপে দ্বিতীয় ম্যাচে তারা ইতালিকে ২-১ গোলে হারিয়ে দিয়েছিল। অবশ্য দক্ষিণ আমেরিকার দলের বিপক্ষে তাদের সুখস্মৃতি নেই। এর আগে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আমেরিকার দলের বিপক্ষে চার ম্যাচ খেলে একটিতেও জয় পায়নি। তিনবার হেরেছে ব্রাজিলের কাছে। একবার আর্জেন্টিনার কাছে।
বিশ্বকাপে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হচ্ছে ক্রোয়েশিয়া। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে শেষ ষোলো নিশ্চিত হওয়ার পর শেষ ম্যাচে আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হয়েছিল ক্রোয়েটসরা। সেই ম্যাচে আর্জেন্টিনার কাছে ১-০ ব্যবধানে হেরেছিল ক্রোয়েশিয়া। সব মিলিয়ে চতুর্থবারের মতো মুখোমুখি হচ্ছে দল দুইটি। বিশ্বকাপের বাইরে তিনবারের মুখোমুখিতে দুইবার জিতেছে আর্জেন্টিনা। একবার হয়েছে ড্র। পরিসংখ্যান কথা বলছে আর্জেন্টিনার পক্ষে। মেসি-অ্যাগুয়েরোরা কী এই পরিসংখ্যানকে আজ সমৃদ্ধ করতে পারবেন?
আজকের খেলা
ডেনমার্ক-অস্ট্রেলিয়া (সন্ধ্যা ৬টা)
ফ্রান্স-পেরু (রাত ৯টা)
আর্জেন্টিনা-ক্রোয়েশিয়া (রাত ১২টা)পিডিএসও/হেলাল