দুর্দান্ত জয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ
মাহমুদুল্লাহর অসাধারণ দৃঢ়তায় স্বাগতিক শ্রীলংকাকে ২ উইকেটে হারিয়ে নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে পৌঁছে গেছে বাংলাদেশ। শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে ১ বল বাকী থাকতেই দারুণ ছক্কা হাঁকিয়ে নাটকীয়ভাবে দলকে ফাইনালে তুলে দেন তিনি। ১৮ বলে ৪৩ রানের এক ঝড়ো ইনিংস খেলে বীরের বেশে মাঠ ছাড়েন মাহমুদউল্লাহ। তার ইনিংসে ছিল ৩টি ৪ ও ২টি ছক্কার মার। এই সিরিজে ২ বার মুখোমুখি হয়ে লঙ্কানদের ২ ম্যাচেই হারালো টাইগাররা। প্রথম দেখায় মুশফিকের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৩৫ বলে ৭২ রান করে ২১৫ চেজ করে রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ। এর আগে আজ শুক্রবার শ্রীলঙ্কার ছুঁড়ে দেওয়া ১৬০ রানের টার্গেট ১ বল ও ২ উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। এই জয়ের ফলে আগামী ১৮ মার্চ রোববার শিরোপা লড়াইয়ে ভারতকে মোকাবিলা করবে টিম বাংলাদেশ। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে খেলাটি শুরু হবে যথারীতি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়।
অবশ্য আজকের ম্যাচের মাঝ পথে মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার সাকিবের বিদায়ে ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ। ত্রিদেশীয় টি-২০ সিরিজের ফাইনাল নির্ধারণী ম্যাচে শ্রীলঙ্কার ছুঁড়ে দেওয়া ১৬০ রানের টার্গেটে হঠাৎই যেন ছন্দপতন। ৩৩ রানে ২ উইকেট হারানোর পর তামিম-মুশফিকের জুটিতে আসে ৬৪। ১৩তম ওভারে ২৮ রানে বিদায় নেন মুশফিক। অর্ধশতক হাঁকিয়ে ৫০ রানে ফেরেন তামিম। স্পিন বলে তামিমের মতো এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে ব্যাট থেকে উইকেটরক্ষকের হাতে ধরা পড়েন সৌম্য। ১০ রানে আউট হন তিনি।
ইসুরু উদানার করা ১৯তম ওভারে ম্যাচে কিছুটা উত্তেজনা ছড়ায়। প্রথম ২ বলের বাউন্সারের পর নো বলের আবেদন জানালেও তাতে সাড়া দেননি আম্পায়াররা। দ্বিতীয় বলটিতে মাহমুদউল্লাহকে স্ট্রাইক দিতে গিয়ে রানআউট হন মোস্তাফিজুর রহমান। তৃতীয় বলে ৪ ও চতুর্থ বলে ২ রান নেন মাহমুদউল্লাহ। শেষ ২ বলে জিততে দরকার ছিল ৬ রান। ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগ অঞ্চল দিয়ে চোখ ধাঁধানো ছক্কায় দলকে নিয়ে যান ফাইনালের মঞ্চে।
দলীয় ৩৩ রানে ২ উইকেট হারানোর পর ৬৪ রানের জুটি গড়ে জয়ের পথ দেখান তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম। অর্ধশতক হাঁকিয়ে ৫০ রানে ফেরেন তামিম। মুশফিকের ব্যাট থেকে আসে ২৮ রান। ইনজুরি কাটিয়ে প্রায় দু’মাস পর দলে ফেরা অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ৭ রান করে আউট হন। সাব্বির রহমান ১৩, সৌম্য সরকার ১০ রানে বিদায় নেন। অফস্পিনার আকিলা ধনাঞ্জয়া দু’টি উইকেট লাভ করেন। একটি করে নেন আমিলা আপনসো, দানুস্কা গুনাথিলাকা, জীবন মেন্ডিস ও ইসুরু উদানা।
এর আগে টস জিতে শ্রীলঙ্কাকে ব্যাটিংয়ে পাঠান বাংলাদেশ দলপতি সাকিব। দলীয় ৪১ রানে ৫ উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলে ৭ উইকেটে ১৫৯ রানের লড়াকু স্কোর গড়ে লঙ্কানরা। ঘুরে দাঁড়ানো ব্যাটিংয়ে ৯৭ রানের পার্টনারশিপ উপহার দেন কুশল পেরেরা ও থিসারা পেরেরা। ১৯তম ওভারে থামেন ওয়ানডাউনে নামা কুশল পেরেরা। তার ৪০ বলে ৬১ রানের দায়িত্বশীল ইনিংসটিতে ছিল ৭টি চার ও ১টি ছক্কার মার। শেষ ওভারে ফেরেন থিসারা পেরেরা। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৩টি করে চার-ছক্কার সাহায্যে করেন ৩৭ বলে ৫৮। ওপেনার দানুস্কা গুনাথিলাকা ৪, কুশল মেন্ডিস ১১, উপুল থারাঙ্গা ৫ (রানআউট), দাসুন শানাকা (০), জীবন মেন্ডিস (৩) রানে সাজঘরের পথ ধরেন। ইসুরু উদানা ৭ ও আকিলা ধনাঞ্জয়া ১ রানে অপরাজিত থাকেন।
ইনজুরি কাটিয়ে প্রায় দু’মাস পর দলে ফেরা সাকিব আল হাসান ২ ওভারে ৯ রানের বিনিময়ে একটি উইকেট নেন। ৪ ওভারে ৩৯ রান খরচায় দু’টি উইকেট লাভ করেন মোস্তাফিজুর রহমান। একটি করে পান রুবেল হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ ও সৌম্য সরকার। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান বেশি থাকায় বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলামকে বোলিংয়েই আনেননি সাকিব।পিডিএসও/মুস্তাফিজ