reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

ড্রয়ের সঙ্গে রয়েছে অনেক প্রাপ্তিও

উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার শেষদিনে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে দুর্দান্ত ড্র করেছে বাংলাদেশ। ৭ উইকেট অক্ষত রাখার যে চ্যালেঞ্জটা টাইগাররা হাতে নিয়েছিলেন, সেটা মোকাবিলা করেছেন দারুণভাবেই। পরাজয়ের মুখে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ ম্যাচে ফিরে এসেছিল মূলত মুমিনুল হক ও লিটন দাশের ব্যাটিং দৃঢ়তায়। তাদের সৌজন্যে হারা ম্যাচে ড্র করে জয়ের গৌরব নিয়ে মাঠ ছেড়েছে স্বাগতিক শিবির। নিষ্ফলা এই লড়াইয়ে খন্ড খন্ড কিছু এই টেস্টে ছিল পাদপ্রদীপে। সংক্ষিপ্তাকারে সেগুলোই তুলে ধরা হলো

মুমিনুলের জোড়া সেঞ্চুরি

বাংলাদেশের টেস্ট স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান ভাবা হতো তাকে। বাংলাদেশের ব্র্যাডম্যানের উপাধিও তো দেওয়া হয়েছিল মুমিনুল হক সৌরভকে। সেই তাকেই কি না টেস্ট দল থেকে বাদ দিয়েছিলেন টাইগারদের সাবেক কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। সদ্য সমাপ্ত ঢাকা টেস্টে তার দলের বিপক্ষেই মুমিনুল করেছেন দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি করে লঙ্কান কোচকে দাঁতভাঙা একটা জবাব দিয়েছেন ‘পকেট রকেট’। পঞ্চম ও শেষ দিনে লিটন দাশকে নিয়ে চতুর্থ উইকেটে ১৮০ রানের রেকর্ড জুটি গড়েন তিনি। তাতেই নিশ্চিত জয়বঞ্চিত হয়েছে শ্রীলঙ্কা। ব্যাট হাতে রাজসিক নৈপুণ্যের সুবাদ প্রত্যাশিতভাবেই ম্যাচ সেরা হয়েছেন মুমিনুল।

সফল অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ

হাথুরুসিংহের বাংলাদেশ অধ্যায়েই টেস্ট দল থেকে ছিটকে দেওয়া মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। মুমিনুলের সঙ্গে তিনিও টাইগারদের ঐতিহাসিক শততম টেস্টে দর্শক কাতারে ছিলেন অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার। লঙ্কান কোচের বিদায়ের পর প্রত্যাশিতভাবেই দলে ফিরেছেন তিনি। ভাগ্যক্রমে সাকিব আল হাসানের ইনজুরি মাহমুদউল্লাহর কাঁধে এসে পড়ে দলের দায়িত্ব। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশকে নেতৃত্ব তিনি দিলেন হাথুরুর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই। সুযোগ পেয়ে হাথুরুকে জবাবটা দিয়েছেন তিনিও। প্রথম ইনিংসে তো সেঞ্চুরির খুব কাছে গিয়ে ফিরে এসেছেন। মাত্র ১৭ রান করলেই অভিনায়ক হিসেবে অভিষেকে সেঞ্চুরির বিরল এক কীর্তিও মালিক হয়ে যেতে পারতেন মাহমুদউল্লাহ। দ্বিতীয় ইনিংসের লঙ্কানদের জয়বঞ্চিত করতে অবদান রেখেছে তার ব্যাট। সর্বোপরি তার নেতৃত্বে শেষ দিনে বাংলাদেশ যেভাবে চ্যালেঞ্জটা জয় করেছে সেটার বিশেষণ হতে পারে এক কথায় অসাধারণ।

টার্নের আশা শুধুই মরীচিকা

চট্টগ্রাম টেস্টের বাংলাদেশ দলে রাখা হয়েছিল ৬ জন স্পিনার। একাদশেও অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল স্পিনারদের। এ সবকিছুই আভাস দিয়েছিল যে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের বাইশ গজ হবে স্পিনবান্ধব। সংবাদ সম্মেলনে দুই দলের প্রতিনিধিরাও তো এক রকম ঘোষণা দিয়েছিলেন। ব্যাটসম্যানদের পরীক্ষা দিতে হবে এমনটাও বলেছিলেন গণমাধ্যমকে। সেটা তো হয়ই-নি উল্টো বোলারদের পরীক্ষা নিয়েছেন ব্যাটসম্যানরা। করেছেন রানোৎসব। পাঁচ দিনের টেস্ট ১৫৩৩ রান দেখেছে চট্টগ্রাম টেস্ট। সেশন যায় দিন যায়, স্পিনাররা কিছুতেই যেন পাচ্ছিলেন না প্রত্যাশিত টার্ন। যে আশায় ওভারের পর ওভার বোলিং করেছিলেন স্পিনাররা; সেটা শেষ পর্যন্ত মরীচিকা হয়েই থাকল। শেষ দিন তো দিমুথ করুনারত্নে তো সরাসরি উইকেট নিয়েই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন, ‘এই উইকেট টেস্টের জন্য উপযুক্ত নয়।’

নিষ্প্রাণ গ্যালারি

চট্টগ্রাম টেস্টের আগা-গোড়া দেখেছে গ্যালারির হাহাকার। পাঁচ দিনের এদিনও প্রত্যাশিত দর্শক উপহার দিতে পারেনি জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম। নিষ্প্রাণ গ্যালারিতেই দুই দলের ব্যাটসম্যানরা করেছেন রানোৎসব। স্টেডিয়ামমুখী মানুষের সংকটের কারণটা টিকিট মূল্য। চট্টগ্রাম টেস্টে সর্বনিম্ন টিকিটের মূল্য ধার্য করা হয়েছিল ৮০ টাকা। দ্বিতীয় সর্বনিম্ন টিকিট আবার দুশো টাকা। তবে মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের প্রবেশাধিকার উন্মুক্ত করা দেওয়া হয়েছিল। তবু প্রত্যাশিত দর্শক পায়নি চট্টগ্রাম টেস্ট।

শতক-দ্বিশতকের আক্ষেপ

চট্টগ্রাম টেস্টে দুই দলের ব্যাটসম্যানরা তৃপ্তি নিয়ে ব্যাটিং করেছেন। পাঁচ দিনের এই লড়াইয়ে ৫টি সেঞ্চুরি করেছেন ব্যাটসম্যানরা। মুমিনুল, ধনঞ্জয়া ও কুশল মেন্ডিস তো দ্বিশতকের আশা জাগিয়েও ফিরেছেন হতাশা নিয়ে। অল্পের জন্য ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি পাননি এই ত্রয়ী। দুর্ভাগ্য সঙ্গ হয়েছে চান্দিমাল, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিক এবং লিটনের। এই চারজন শতকের সুবাস পেয়ে ফিরে এসেছেন সাজঘরে। সবমিলিয়ে এই টেস্টটা কম-বেশি আক্ষেপ উপহার দিয়েছে দুই দলের সাতজন ব্যাটসম্যানকে।

রেকর্ড বইয়ে ঝড়

বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথমটা রীতিমতো রেকর্ড বইয়ে ঝড় তুলে দিয়েছে। দুই দলের তিন ইনিংসে অসংখ্য রেকর্ড উপহার দিয়েছে চট্টগ্রাম টেস্ট। যেটার অধিকাংশগুলোই হয়েছে বাংলাদেশের। সেটা ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দুরকমই। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে এক টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছেন মুমিনুল। বাংলাদেশের মাঠে এক টেস্টে সর্বোচ্চ ৭১৩ রান করেছে শ্রীলঙ্কা। তৃতীয় উইকেটে মুশফিক-মুমিনুল গড়েছেন রেকর্ড জুটি। অভিষেকে উইকেটশূন্য থেকে ১০০ রান দেওয়ার লজ্জার রেকর্ড গড়েছেন সঞ্জামুল। বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে লাল বলে দুশো রান দেওয়ার বিব্রতকর রেকর্ড গড়েছেন তাইজুল ইসলাম।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
জাতীয় ক্রিকেট দল,টেস্ট,টাইগার,মুমিনুল
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist