প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী
শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে হারাতে পারলে এক ম্যাচ হাতে থাকতেই লিগ শিরোপা নিশ্চিত হবে ঢাকা আবাহনীর। এমন সমীকরণ নিয়েই শুক্রবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ২১তম রাউন্ডে মাঠে নামে আকাশী-নীলরা। এক পয়েন্ট পিছিয়ে থাকা শেখ জামালেরও ভালো সম্ভাবনা ছিল শিরোপা জেতার। তবে তার জন্য ঢাকা আবাহনীকে হারাতে বা অন্তত ড্র করতে হতো। আর জিততে হতো নিজেদের পরের ম্যাচে। কিন্তু পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী তা হতে দিলো না। প্রতিবেশি ক্লাবকে ২-০ গোলে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই শিরোপা নিশ্চিত করলো দলটি। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে আবাহনীর হয়ে গোল করলেন নাসির উদ্দিন চৌধুরী ও সানডে সিজোবা। ঐতিহ্যবাহী দলটির এটি ষষ্ঠ লিগ শিরোপা।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের এবারের আসরে সবচেয়ে হাইভোল্টেজ ম্যাচ ছিল এটি। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শুক্রবার সন্ধ্যায় ম্যাচ মাঠে গড়ানোর আগে থেকেই যা নিয়ে আলোচনা ছিল ফুটবল পাড়ায়। আবাহনী ঐতিহ্যে অনেক এগিয়ে। তবে পিছিয়ে ছিল না শেখ জামালও। দলটির সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স ছিল দুর্দান্ত। তাছাড়া তিনবার লিগ শিরোপা জয়ের অভিজ্ঞতা আছে তাদেরও। কিন্তু আবাহনী এদিন প্রথমার্ধেই লিড নিয়ে নেয়। একই সঙ্গে ম্যাচের লাগামটাও নিয়ে নেয় নিজেদের হাতে। মাহবুব হোসেন রক্সির শেখ জামাল তাই আর পেরে উঠেনি। বরং আবাহনীর ক্রোয়েশিয়ান কোচ দ্রাগো মামিচ চলে যাওয়ার পর গোলকিপার কোচ থেকে মূল কোচের দায়িত্ব পাওয়া আতিকুর রহমান আতিক প্রধান কোচের ভূমিকায় প্রথমবারের মতো শিরোপা জেতেন।
ম্যাচের ২৩ মিনিটে প্রথম গোলটি পায় আবাহনী। কর্নার কিক থেকে সোহেল রানার কিক প্রথমে ইমন মাহমুদ নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন। সেখান থেকে ফের বল পান সোহেল রানা। দারুণভাবে শেখ জামাল রক্ষণকে বোকা বানিয়ে গোলমুখ বরাবর ক্রস করেন তিনি। গোলমুখেই ছিলেন ডিফেন্ডার নাসির উদ্দিন চৌধুরী। দুর্দান্ত হেডে বল জালে জড়িয়ে দেন তিনি। আগের ম্যাচেও গোল করেছিলেন নাসির।
আগের দিন শেখ জামাল ধানমন্ডির অধিনায়ক দিদারুল হক বলেছিলেন, তাদের রক্ষণভাগ গোল হজম না করলে আক্রমণের ভাগের খেলোয়াড়রা গোল করবেই। দলটির বিদেশিরাই এমন আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছিল অধিনায়ককে। তাছাড়া লিগে আবাহনীর চেয়ে গোল স্কোরিংয়ে এগিয়ে ছিল শেখ জামালই। কিন্তু এদিন শুরুতে গোল আদায় করে নিয়েই শেখ জামালের উপর চাপ তৈরি করে আকাশী-নীলরা। যে চাপা আর জয় করতে পারেনি শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব।
উল্টো ম্যাচের একেবারে শেষ দিকে দ্বিতীয় গোল আদায় করে আবাহনী। ৯৪ মিনিটে সানডে সিজোবা গোল করেন। আর সেই গোল হতেই ক্লাব হাউজ গ্যালারি থেকে মাঠে ঢুকে উদযাপন শুরু করে দেন আবাহনী সমর্থকরা। ম্যাচের তখনও মিনিট খানেক বাকি। পরে আবাহনীর খেলোয়াড়-কর্মকর্তাদের তৎপরায় মাঠ ছাড়ে সেই দর্শকরা। কিন্তু বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি তাদের খেলোয়াড়দের সঙ্গে আনন্দ উদযাপনে সামিল হতে।
টানা ৯ ম্যাচে জয় নিয়ে একম্যাচ হাতে থাকতেই এই শিরোপা আবাহনীর। ২১ ম্যাচে ৫১ পয়েন্ট তাদের। লিগে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলবে তারা চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে। যেটি এখন কেবলই আনুষ্ঠানিকতার। অথচ ১৭তম রাউন্ড পর্যন্ত শীর্ষে ছিল চট্টগ্রাম আবাহনীই।
পিডিএসও/রিহাব