দ্বিগুণের বেশি ভাড়া নিচ্ছে পাঠাও-উবার
রাজধানীতে বাসচাপায় ২ শিক্ষার্থী নিহতের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে রাজধানীতে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। আজ শনিবার পর্যন্ত টানা ৭ম দিনের মতো শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ঢাকার গণপরিবহন অচল হয়ে পড়েছে। এই সুযোগে রাইড শেয়ারিং অ্যাপভিত্তিক পরিবহন সেবা নিচ্ছেন যাত্রীরা। সেইসঙ্গে আসছে দফায় দফায় ভাড়া বাড়ার অভিযোগও।
গ্রাহক সংখ্যা বাড়ায় বাড়তি ভাড়া হাঁকাচ্ছে রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলো। তবে কোম্পানির প্রতিনিধিরা বলছেন, তাদের পক্ষ থেকে ভাড়া বাড়ানো হয়নি। সুনির্দিষ্ট কোনো চালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলো।
পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে গ্রাহকরাই এই সমস্যা সৃষ্টি ও বিকাশ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) বলছে, রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলো তাদের নিজস্ব ভাড়া তালিকায় গাড়ি চালাচ্ছে। তাদের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট ভাড়া নির্দেশনা নেই। আর এ কারণেই ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্যের সৃষ্টি হচ্ছে। শিগগিরই রাইড শেয়ারিং নীতিমালা চূড়ান্ত করে নির্দিষ্ট আইনের আওতায় নেওয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার।
উত্তরা থেকে নিয়মিত কারওয়ান বাজারে এসে অফিস করেন বদরুল আলম। তিনি জানান, চলমান আন্দোলনে রাইড শেয়ারিং অ্যাপের মাধ্যমে অফিসে আসেন। তবে সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার হচ্ছে, পাঠাও কিংবা উবারের চালকরা অ্যাপে নয়, কনট্রাক্ট ভাড়ায় আসছেন। এ জন্য নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে। আগে যেখানে দেড় শ টাকায় আসা যেত, এখন তা তিন শ টাকায় আসতে হচ্ছে।
রাজধানীর শনির আখড়া থেকে ধানমন্ডিতে অফিস করেন উপল বড়ুয়া। তিনিও গত কয়েকদিন উবার আর পাঠাও সার্ভিসে অফিস করছেন। তিনি জানালেন, আগের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে তাকে। পরিবহন শূন্যতার সুযোগে যাত্রীর পকেট কাটছে পাঠাও-উবার।
ব্যক্তিগত গাড়িকে উন্মুক্ত করে ভাড়ায় বারোয়ারি খাটাবার পদ্ধতি নিয়ে গত বছর ঢাকার রাস্তায় নামে ‘উবার’, ‘পাঠাও’, ‘ওভাই’, ‘জিওটু’সহ বেশকিছু রাইড শেয়ারিং অ্যাপ। সপ্তাহে ২০ হাজার টাকা, মাসে ৮০ হাজার টাকা কামানোর মতো আকর্ষণীয় সব অফারে সংগ্রহ করা হয় গাড়িসহ চালক। একজন উবার চালক বলেন, ‘এ পর্যন্ত ১৭৮০ ট্রিপ মেরেছি। সপ্তাহে ২০ হাজার টাকার অফার দেয় আমাদেরকে। অন্যের গাড়ি চালিয়ে আমি এখন নিজেই একটি গাড়ি কিনে নিয়েছি।’
আবার ৪০ থেকে ৭০ শতাংশ ছাড়ের বিজ্ঞাপনে আগ্রহী হয়ে ওঠে যাত্রীরাও। একজন উবার যাত্রী বলেন, প্রায় সময়ই ডিসকাউন্ট দেওয়া হয়। ৩০ শতাংশ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ডিসকাউন্ট মেলে। এ কারণেই তারা উবার ব্যবহার করছেন।
আবার এসব সার্ভিসের বিরুদ্ধে যাত্রীদের সবচেয়ে বড় অভিযোগ হচ্ছে, পিক আওয়ার, ঝড়-বৃষ্টি আর নানা অজুহাতে সেই ভাড়া বেড়ে যায় কয়েকগুণ। যাত্রীরা বলেন, ঢাকার মধ্যে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে ২৫০০ টাকা লাগে। এই খরচে আমরা চলাচল করলে তো একটা গাড়ি কিনে ফেলা যায়।
পিডিএসও/তাজ