ফোরজি চালুর ঘোষণা ও সেবা নিয়ে প্রশ্ন
দেশে আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ফোরজি চালুর ঘোষণা দেয়া ও সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। তারা জানায়, ফোরজি সম্বলিত হ্যান্ডসেটের অপর্যাপ্ততা, ফোরজি সিম পরিবর্তন, বিটিএস (বেজ ট্রান্সসিভার স্টেশন) তৈরিসহ অসংখ্য সমস্যার সমাধান না করে ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ফোরজি চালুর ঘোষণা গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়।’
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রতিষ্ঠানটি দাবি করছে ফোরজি নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করতে মোবাইল অপারেটরদের কমপক্ষে ৬০ মেগাহার্জ তরঙ্গ প্রয়োজন। কিন্তু তাদের তরঙ্গ রয়েছে সর্বোচ্চ ৩৭ মেগাহার্জ। এই অল্প মেগাহার্জ তরঙ্গ দিয়ে বিপুল জনগোষ্ঠিকে দ্রুতগতির ফোরজি পরিষেবা দেয়া সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘১৩ ফেব্রুয়ারি টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন ফোরজি তরঙ্গ নিলাম অনুষ্ঠিত করে। তাতে বর্তমানে সক্রিয় অপারেটর রাষ্ট্র মালিকানাধীন টেলিটকসহ চারটির মধ্যে অংশ নিয়েছে দুটি অপারেটর। রবি মার্জার করায় তার তরঙ্গ সব অপারেটরের চাইতে বেশি ৩৬ দশমিক ৪ মেগাহার্টজ থাকায় নিলামে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকে।
গ্রামীণফোন ১৮০০ ব্যান্ডের পাঁচ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কিনেছে। এতে গ্রামীণফোনের তরঙ্গের পরিমাণ দাঁড়ালো ৩৭ মেগাহার্টজ। বাংলালিংক ১৮০০ ব্যান্ডের ৫ দশমিক ৬ মেগাহার্টজ এবং ২১০০ ব্যান্ডের ৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কিনেছে। এতে বাংলালিংকের তরঙ্গের পরিমাণ দাঁড়ালো ৩০ দশমিক ৬ মেগাহার্টজ। তরঙ্গের প্রতিযোগিতায় রবির চাইতে গ্রামীণফোনের শূন্য দশমিক ৬ মেগাহার্টজ বেশি।
মহিউদ্দীন আহমেদ আরও বলেন, ‘আমাদের প্রশ্ন এতদিন ধরে রবি ৩৬ দশমিক ৪ মেগাহার্টজ দিয়ে যে থ্রিজি সেবা গ্রাহকদের দিয়েছে সেটার মান কি থ্রিজি পর্যায়ে ছিল? এ পরিমাণ তরঙ্গ ইন্টারনেটের গতি ছিল সর্বোচ্চ ৫ এমবিপিএস। ফোরজির জন্য গতি নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ এমবিপিএস। যেখানে এতদিন এ তরঙ্গ দিয়ে গড়ে ৬ এমবিপিএস গতিই আনা গেলো না সেখানে একই পরিমাণ তরঙ্গ দিয়ে বর্তমান বিটিএস ব্যবহার করে কীভাবে ইন্টারনেটের মান বাড়াবে ফোরজি?’
তিনি উল্লেখ করেন, তরঙ্গ বিক্রি করে সরকার পাঁচ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে যা কি-না জনগণের কাছ থেকেই পরোক্ষভাবে আদায় করা হয়েছে। তারপরও নিয়ন্ত্রণ কমিশন ও অপারেটররা গ্রাহকদের মিথ্যা তথ্য ও আশ্বাস দিচ্ছে যা অত্যন্ত দুঃখ ও লজ্জাজনক। কারণ ২০ এমবিপিএস গতি পেতে প্রয়োজন ৬০ মেগাহার্টজ তরঙ্গের।
পিডিএসও/তাজ