‘জামায়াত নিষিদ্ধের আইনি প্রক্রিয়া চলছে’
জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তার আশা, এই প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ হবে।
বৃহস্পতিবার মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, জামায়াতের পরিকল্পনায় দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করা হয়েছিল। যারা দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করেছে তাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ বাঙালিদের স্বাধীনতার স্বপ্ন ভুলণ্ঠিত করতে ভারী অস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়া পাকিস্তানি সেনাবাহিনীতে সহযোগিতা করেছিল জামায়াত। এ দেশের মানুষদের দমনে তারা গড়ে তুলেছিল রাজাকার বাহিনী। সে সময়ের সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বাঙলি নিধনের নানা পরিকল্পনাও তুলে ধরে দলটি। কেবল জামায়াত নয়, দলটির সে সময়ের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘ সে সময় গড়ে তুলে আলবদর নামে এক খুনি বাহিনী। এই বাহিনীই জড়িত ছিল বুদ্ধিজীবী হত্যায়। স্বাধীনতার চার বছর পর আলবদর বাহিনীর তিন প্রধান নেতা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ এবং মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।
পাকিস্তানের পক্ষে অস্ত্র ধরে বাঙালি নিধনে সহায়তা করায় মুক্তিযুদ্ধের পর জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের আমলে তারা আবার রাজনীতি করার অধিকার ফিরে পায়। তবে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুরু হওয়ার পর আবারও জামায়াত নিষিদ্ধের দাবি জোরালো হয়েছে। এরইমধ্যে নির্বাচন কমিশনে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। ফলে তারা ভোটে অংশ নেয়ার অধিকার হারিয়েছে। পাশাপাশি জামায়াত নিষিদ্ধে একটি মামলা চলছে উচ্চ আদালতে। গত ৭ ডিসেম্বর গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জামায়াত নিষিদ্ধের বিষয়ে প্রশ্ন রেখেছিলেন গণমাধ্যম কর্মীরা। সেদিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বিষয়টি আদালতের ওপর নির্ভর করছে।
তবে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জামায়াত নিষিদ্ধে সব ধরনের চেষ্টা নিচ্ছি। জামায়াত নিষিদ্ধের আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তবে সবাইকে চোখ কান খোলা রাখতে হবে, বিশেষ করে নতুন প্রজন্মকে। কারণ, জামায়াতে ইসলামীদের বিশ্বাস করা যায় না। এদের পূর্বসুরীরাই তো বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
পিডিএসও/হেলাল