reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৮ আগস্ট, ২০১৭

শোকাবহ আগস্ট

গভীর হয়ে বসেছে শোক। সে মুহূর্ত, সে হত্যাযজ্ঞ, রক্তের সে বয়ে চলা, মুহুর্মুহু কাঁদাচ্ছে মানুষকে, আজো এত বছর পরও। জীবনকে তুচ্ছ করে ছিনিয়ে আনা স্বাধীনতায়, স্বাধীন রাষ্ট্রে, এমন করে প্রাণ দিতে হবে, কে ভেবেছিল কবে! যে বাঙালির জন্য এত ত্যাগ, এত তিতিক্ষা, বারবার ফিরে আসা মৃত্যুর দুয়ার থেকে সেই বাঙালিকে ছুড়ে দিয়ে নরকে, গুটিকয় লোভাতুর পশুর এমন নির্মম হত্যাযজ্ঞ—ভেবেছিলেন কি পিতা! ভাবেননি। এমন ভাবনা ছিল অবিশ্বাস্য বাঙালির কাছেও। আর তাই বারবার মনে করে মুখ, উজ্জ্বল চোখের দ্যুতি, আজো শ্রদ্ধায়, নৈবেদ্যে, প্রতিদিন প্রতিক্ষণে ফিরে আসেন পিতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

১৯৭৫ সালে এই আগস্টেই সেনাবাহিনীর কিছু ক্ষমতালোভী সেনা কর্মকর্তা, নির্মমভাবে হত্যা করে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে। হত্যাযজ্ঞকে আরো পৈশাচিক, আরো বর্বরোচিত করতে, মুছে দিতে স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস, রক্তে ভাসায় প্রিয় স্ত্রী, সন্তান, স্বজনদেরও। রক্তে ভাসে সিঁড়ি, মেঝে, উঠোন। একদিন মুছে যায় সে রক্তের দাগ। তার গভীর ক্ষত ওঠে মানুষের বুকে। বাঙালির মানসপটে, স্বর্ণাক্ষরে লেখা হয় অমর সে নাম-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

স্কুলজীবন থেকে শুরু করে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বাঙালির প্রতিটি মুক্তি আন্দোলনে, অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে, তার ছিল দৃপ্ত পদচারণা। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন সেই কৈশোর থেকেই। তখন ১৯৩৪ সাল। বঙ্গবন্ধু সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। চোখের চিকিৎসায় টানা দু’বছর বন্ধ রইল লেখাপড়া। ’৩৬ সালে চোখের চিকিৎসার পর ফিরে এলেন মাদারীপুরে। কোনো কাজ নেই। লেখাপড়া বন্ধ। খেলাধুলাও নেই। কেবল একটিই কাজ, বিকেলে সভায় যাওয়া। মন দিয়ে শোনা, স্বদেশিদের আগুনঝরা বক্তৃতা।

তখন স্বদেশি আন্দোলনের যুগ। মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জের ঘরে ঘরে জ্বলছে স্বদেশিরা। মাদারীপুরের স্বদেশি পূর্ণ দাস যেমন ইংরেজের আতঙ্ক, তেমনি কোনো কিছুরই তোয়াক্কা নেই সুভাষ বোসের দলের স্বদেশিদেরও। স্বদেশিদের কাজই ছিল কিশোর-তরুণদের দলে ভেড়ানো। একদিন সভায় বসে থাকা কিশোর বঙ্গবন্ধুর ওপর নজর পড়ল স্বদেশিদের। বঙ্গবন্ধুর মনে তখন দারুণ ইংরেজ বিদ্বেষ। স্বদেশিদের বক্তব্য শোনেন। রক্তে টগবগ ফোটে দ্রোহ। ভাবেন, ইংরেজদের আর এদেশে থাকার অধিকার নেই। স্বাধীনতার আনতে হবে। ইংরেজ তাড়াতে হবে।

ব্যস, ধীরে ধীরে বঙ্গবন্ধু ভক্ত হয়ে গেলেন স্বদেশি নেতা সুভাষ বসুর। শুরু হলো মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জে স্বদেশিদের সভা-সমাবেশে ও মিছিলে আসা যাওয়া। উঠা-বসা শুরু হলো স্বদেশিদের সঙ্গেই। এক-দু’কান করে, বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে। পেছনে লাগে গোয়েন্দা বিভাগের লোকজন। একদিন গোপালগঞ্জের এসডিও, দাদা খান সাহেবকে হুঁশিয়ারি করে দিলেন, নাতির কর্মকাণ্ড নিয়ে। কিন্তু কে শোনে কার কথা। স্বদেশিদের দলে ভিড়ে, কিশোর বঙ্গবন্ধুর চোখে তখন কেবলই ইংরেজ তাড়াও আন্দোলন, স্বাধীনতা, মুক্তির স্বপ্ন।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বঙ্গবন্ধুকে হত্যা,শোকাবহ আগস্ট
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist