জিয়াউদ্দিন রাজু

  ০৫ জুলাই, ২০২০

ঢাকা-৫ আসন : শোডাউনে প্রার্থীরা, উচ্ছ্বাস নেই ভোটারের

রাজধানীর প্রতিটি আসনকেই গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে রাজনৈতিক দলগুলো। সেই বিবেচনায় ঢাকা-৫ আসনটিও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গত ৬ মে ঢাকা-৫ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লা মারা যান। এই আসনটি শূন্য হওয়ার পর থেকেই ক্ষমতাসীন দলের বেশকিছু প্রার্থী নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন জোড়ালভাবে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের অনুসারী নেতাকর্মীদের দিয়ে শোডাউনের মাধ্যমে নিজেদের প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন। এক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকেই বেশি ব্যবহার করছেন প্রার্থীরা।

এছাড়া মহামারি করোনাভাইরাসকে উপেক্ষা করে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা, মিটিং, শোডাউন চালিয়ে যাচ্ছেন নেতারা। ৫ আসনের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ জনবহুল স্থানে পোস্টার-ব্যানার বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে। তবে এত কিছুর পরও ভোটারদের মাঝে নির্বাচনী আমেজ খুব একটা লক্ষ্য করা যায়নি। গত কয়েক দিন ধরে সরেজমিন ওই আসনটির পর্যবেক্ষণ করলে এমন চিত্র উঠে আসে। ভোটাররা বলেন, মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে মানুষ নিজের জীবন এবং জীবিকা নিয়ে বেশ চিন্তিত। এই মুহূর্তে রাজনৈতিক বিষয় তাদের কাছে মুখ্য বিষয় নয়। ওই এলাকার সচেতন নাগরিকরা বিনা প্রয়োজনে নিজের বাসা থেকে বের হতেই নারাজ। অনেকে আবার এই মুহূর্তে নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। শুধু ঢাকা-৫ আসনটিই নয়, শূন্য থাকা সব আসনের ভোটাদের মাঝে একই চিত্র দেখা যায়।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ঢাকা-৫ আসনে দেখা গেছে নির্বাচনী শোডাউন। কেউ মোটরবাইক দিয়ে শোডাউন দিচ্ছেন কেউবা আবার বড় বড় বিলবোর্ড দিয়ে বা চায়ের দোকানের আশপাশে পোস্টার-ব্যানারের মাধ্যেমে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার রাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এক প্রার্থীর জনসভাও দেখা গেছে। শুক্রবার মোটরবাইকে মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে কর্মীরা শোডাউন দিয়েছেন। তবে শোডাউন কিংবা প্রচারণায় জনসম্পৃক্ততা বা ভোটাদের অবস্থান চোখে পড়েনি।

আওয়ামী লীগের দফতর সূত্র জানিয়েছে, অনেকেই নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন বলে তাদের কাছে খবর আছে। তবে সেটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে কাউকে নির্দেশনা দেয়নি। এ সময়টা দেশের জন্য কঠিন সময়। সামাজিক দূরত্ব মেনে সবাইকে চলাচলের আহ্বানও জানাচ্ছে দলটি। করোনার এ সময়ে শুধু ঢাকা-৫ আসনেই নয়, শূন্য হওয়া কোনো আসনেই আমরা প্রার্থী ইচ্ছুকদের কোনো ধরনের শোডাউনের পক্ষে নয়। দলটি বরাবরই বলে আসছি সব ধরনের দলবদ্ধতা, সভা-সমাবেশ বাদ দিতে।

সূত্রটি আরো জানায়, এছাড়াও নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশনার। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের পরে আমরা দলীয়ভাবে মাঠে কাজ করব এবং প্রার্থীদের বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। শুধু ঢাকা-৫ আসনই নয় এই মুহূর্তে যত শূন্য আসন রয়েছে আমরা আসনেই প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণার বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেইনি।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের শীর্ষ এক নেতা জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রচারণা চালাক বা বড় বিলবোর্ড নিজের অবস্থান জানান না কেন এই দুর্যোগে আওয়ামী লীগ কাছে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই গুরুত্ব বিষয়। এখন মানুষের পাশে দাঁড়ানোই রাজনীতির মুখ্য অংশ। করোনার এ দুর্যোগে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের সাংগঠনিক কর্মকান্ডের অংশ। এছাড়া নির্বাচনের বিষয়ে ইসির সিদ্ধান্ত এলেই তারপর দলীয়ভাবে এসব বিষয়ে বিবেচনা করা হবে। তবে আমরা বরাবরই সভা-সমাবেশ এড়িয়ে চলতে সব নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানাই।

নির্বাচনের বিষয়ে ইসি সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন কবে হবে এসব বিষয় এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে করোনার পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে নির্বাচন।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ভোটার,উচ্ছ্বাস,ঢাকা-৫ আসন,শোডাউন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close