হাসান ইমন

  ১৭ জানুয়ারি, ২০২০

নির্বাচনী প্রচারে প্রতিশ্রুতির বন্যা

আগামী ৩০ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোটগ্রহণের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই জমে উঠছে নির্বাচনী আমেজ। পাড়া মহল্লায়, অলিগলি চলছে মেয়র প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা। ভোটারদের মন জয় করতে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, যানজট, জলজট, বায়ুদূষণ রোধ, আধুনিক বর্জ্য বস্থাপনাসহ আধুনিক ও স্মার্টসিটি গড়ে তোলার যেসব প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন মেয়র প্রার্থীরা, তা নিয়েই এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

ফজলে নূর তাপসের প্রতিশ্রুতি : দিনরাত ২৪ ঘণ্টা, সপ্তাহের সাত দিন, বছরে ৩৬৫ দিন সিটি করপোরেশনের সেবা কার্যক্রমের দরজা খোলা রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ফজলে নূর তাপস। তিনি বলেন, উন্নত ঢাকা গড়তে ৩০ বছর মেয়াদি মহাপরিকল্পনা করেছি। সেখানে প্রত্যেকটি রাস্তাঘাটের অবকাঠামো উন্নয়নের বিষয় থাকবে। গুরুত্ব পাবে ডেঙ্গুসহ পয়ঃনিষ্কাশনের বিষয়গুলোও। সব নাগরিকের জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করা হবে। মাদকসহ অন্যান্য অপরাধমূলক সামাজিক ব্যাধিগুলো দূর করা হবে। এলাকাভিত্তিক সমস্যা সমাধান করা হবে। রাস্তা-ঘাট পুনর্বিন্যাস করে জনগণের ভোগান্তি কমানো হবে। এছাড়া ঐতিহ্য ঢাকা, সুন্দর ঢাকা, সচল ঢাকা, সুশাসিত ঢাকা ও উন্নত ঢাকা-পাঁচটি প্রতিশ্রুতির পরিবেশসম্মত আধুনিক উন্নত ঢাকা গড়ে তোলা হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

ইশরাকের প্রতিশ্রুতি : ভোটে জয় পেলে তিন মাসের মধ্যে ঢাকায় পাবলিক টয়লেটের সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। প্রত্যেক ওয়ার্ডে জনবসতি অনুপাতে পাবলিক টয়লেট প্রতিস্থাপন করার কথা বলেছেন তিনি। সেখানে নারীদের এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে স্বল্পসময়ের মধ্যে বায়ু দূষণরোধে কর্মসূচি প্রণয়ন করে বসবাসযোগ্য নগরী গড়ে তোলা হবে। যানজট সমস্যায় জাতিকে বছরে ৩৬ হাজার কোটি টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। তাই গণপরিবহনের নির্বিঘেœ চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠানামা বন্ধ এবং নিকট দূরত্বে বাস স্টপেজ স্থাপন করা হবে। বেশ কিছু এলাকা মহানগরীর আওতাভুক্ত হয়েছে। যেখানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। জলাবদ্ধতা নিরসনসহ নতুন এলাকাগুলোকে নিয়ে একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে। আর অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ির জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ইউটিলিটি টানেল নির্মাণ করা হবে। এছাড়া ফলজসহ অন্যান্য গাছের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণ নিমগাছ লাগানো হবে। কারণ নিমগাছ বায়ু দূষণরোধে অত্যন্ত কার্যকর।

আতিকুলের প্রতিশ্রুতি : পরিকল্পিত ‘স্মার্ট ঢাকা’ গড়ে তোলা হবে। এছাড়া ঢাকাকে যানজটমুক্ত করার উদ্যোগ নেব। জলাবদ্ধতা নিরসনে এরই মধ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। আশা করছি, পর্যায়ক্রমে ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন করতে পারব। গত ৯ মাসে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। এই কঠোর অনুশীলনের পর ভবিষ্যতে তা ভালোভাবে প্রয়োগ করতে পারব। মাদকমুক্ত ঢাকা গড়তে চাই। ঢাকাকে জলজট, যানজট, মাদকমুক্ত করব। ৪৮ হাজার এলইডি লাইট স্থাপনের কার্যক্রম চলছে। ঢাকাকে গড়ে তোলা হবে একটি নারীবান্ধব শহর হিসেবে। উত্তর সিটির পুরো এলাকা সিসিটিভির আওতায় আনা হবে। শিশুদের জন্য পার্ক, খেলার মাঠ গড়ে তোলা হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প নেওয়া হবে। নবসংযুক্ত ওয়ার্ডগুলোকে উন্নয়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। রাস্তাঘাটসহ সব ধরনের আধুনিক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

তাবিথ আউয়ালের প্রতিশ্রুতি : জলবদ্ধতা ও সরু এলাকায় যানজট নিরসনে কাজ করব। নারী-শিশুসহ সবার নিরাপত্তায় কাজ করব। খোলা জায়গায় হাঁটার ব্যবস্থা করা হবে। বয়স্ক মানুষ, কর্মজীবী নারী-পুরুষ যাতে রাতে চলাচল করতে পারে সে জন্য সড়কে বাতি ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করব। দিনেও মানুষের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া ‘বর্জ্য অব্যবস্থাপনা, বায়ুদূষণ, পানিদূষণ, শব্দদূষণ, অধিক বাড়িভাড়া, যানজট, ফুটপাত দখল, মশার উৎপাত এবং তা থেকে প্রাণঘাতী রোগের বিস্তার—এমন ১২টি নাগরিক সমস্যা এরই মধ্যে আমরা চিহ্নিত করেছি। এই ১২টি জায়গায় আমরা সমন্বয় ও গুরুত্বের ভিত্তিতে একযোগে কাজ করতে চাই। একই সঙ্গে নজর থাকবে দুর্নীতি দমনে। কেননা একজন সুইপার থেকে মেয়রের দফতর পর্যন্ত দুর্নীতি ছড়িয়ে আছে।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
প্রতিশ্রুতি,সিটি নির্বাচন,প্রতিবেদন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close