নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১০ নভেম্বর, ২০১৯

সেলিম খানদের সামনে আনবে কে

ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগে কয়েকজন জনপ্রিয় নেতার মাঝে সেলিম খান একজন। দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে বেশ কয়েকবার মারাত্বক আহত হওয়াদের তালিকাতেও তার নাম সবার আগে। বৃহত্তর উত্তরা এলাকায় গত ২০ বছর সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন যুবলীগের। এসব কারণে অত্র এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে সেলিম খানের রয়েছে বিশাল কর্মী বহর। সেই বহর নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিটি কর্মসূচিতে অংশ নিতে কোনও অজুহাতের আশ্রয় নেননি তিনি। তারপরও কমিটি গঠনের সময় কিছু হাইব্রিড নেতার চাপে পড়ে যান বার বার।

এবারও তেমন আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না তার অনুসারী নেতারা। যদিও চলমান শুদ্ধি অভিযানের পর যুবলীগ ফিরে আসতে পারে স্বগৌরবে। তারা মনে করছেন, সব যোগ্যতার বিচারে মহানগর উত্তর কমিটিতে গতবার সেলিম খান সাংগঠনিক সম্পাদকের তালিকায় ছিলেন। বিষয়টি সেই সময়ে অনেক নগর ও কেন্দ্রীয় নেতার মুখে মুখেও ছিল। সংগঠন করতে গিয়ে বার বার নির্যাতন ও হামলার মুখোমুখি হওয়ার কারণে তৎকালীন যুবলীগের চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদকের পছন্দের তালিকায় ছিলেন তিনি। কিন্তু ক্ষমতা লোভী কিছু হাইব্রিড শ্রেণির অনৈতিক হস্তক্ষেপে তিনি নেমে যান সম্পাদকীয়তে। পদ পান তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদকীয়তে। এ নিয়ে সেলিম খান রাগ বা অভিমান রাখেননি মনে। নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন প্রিয় সংগঠনের হয়ে। অথচ শেষ পর্যন্তও সবাই জানতেন সেলিম খানই হচ্ছেন সাংগঠনিক।

এবার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্ত্বি হবে বলে মনে করেননা সংগঠনটির অনেকেই। তারা বলছেন, চলমান শুদ্ধি অভিযানের পর যুবলীগ একটি সোনার সংগঠনে রূপ নিবে। ফিরে পাবে সংগঠনের হারানো ঐতিহ্য। অন্তত আওয়ামী লীগ দলীয় প্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনা এবার তেমনটি হতে দিবেন না বলেই মনে করছেন তারা। তাই আশায় বুক বেধেঁছেন অবহেলিত ও ত্যাগী নেতারা। তাদের মাঝে অন্যতম সেলিম খানও। তিনি এবার নগর উত্তর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন।

তিনি মনে করেন, বর্তমানে যারা এ পদে আসতে চান তাদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার থেকে তিনিও কোনও অংশে কম নয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর দলীয় সাইনবোর্ড ব্যবহার করে কোথায় একটি পয়সা ইনকাম করেননি। সুবিধা পেতে ব্যবহার করেননি নিজে পদ পদবিও। তাই গত ১০-১২ বছরে সেলিম খানদের মতো লোকদের হয়তো অনেকেই চিনেন না। তার ভাষায়, নিজে একজন ব্যবসায়ী হিসেবে যা আয় করি তার অর্ধেক নিজের পরিবারের পিছনে ব্যয় করি, বাকিটা দিয়ে রাজনীতি ও গরীব আত্মীয় স্বজনদের সহযোগিতা করি। এর বাইরে আহামরি কোনও সম্পদও নেই আমার। দীর্ঘ ৩০ বছর রাজনীতি করে শুধু একটি ক্যারিয়ার গড়েছি। রাজনীতিতে ত্যাগ আর নির্যাতনের বাইরে আমার আর কোনও সম্পদ নাই। এখন আপনাদের সহযোগিতায় এগিয়ে যেতে চাই।

সেলিম খানের এসব কথার প্রমানও পাওয়া যায় রাজনৈতিক জীবন বৃত্তান্তে। সেখানে দেখা যায়, জোট সরকারের সময় আহসান উল্লাহ মাষ্টারের হত্যার ঘটনায় ডাকা হরতালে পিকেটিং এর সময় সেলিম খান পুলিশের বেদড়ক মারধরের ফলে বাম হাত ভাঙাসহ মেরুদণ্ডে প্রচণ্ড আঘাত পান। সেই সময়ে কোনও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো অবস্থা না থাকায় তৎকালীন এমপি ও বর্তমান ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার বাসায় প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। পরে যুবলীগ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির নানকের সহায়তায় ভারতের চেন্নাইয়ে বিনাকা মিশন হসপিটালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হন।

এর বাইরে জোট সরকারের সময় সজীব ওযাজেদ জয় তার স্ত্রীকে নিয়ে প্রথম বারের মতো দেশে আসার প্রাক্কালে বিমানবন্দরে পুলিশের হামলার শিকার হয়ে জাহানারা ক্লিনিকে চিকিৎসারত অবস্থায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী সেই দিনই জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে আহত হিসেবে অনেকের সাথে তার নামও উল্লেখ করেন।

এছাড়া ১/১১ এর সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গ্রেফতার হলে, বিমান বন্দর এলাকায় সাইদ সিদ্দিকী ও তার নেতৃত্বে বিশাল প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। যেটি সেসময় বিবিসিসহ আন্তজার্তিক মিডিয়ায় ব্যপক প্রচার পায়। উল্লেখ্য সেলিম খান যে কোনও রাজনৈতিক মিছিল বা সমাবেশে স্লোগান ধরতে বেশ পারদর্শী।

পিডিএসও/রি.মা

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সেলিম খান,যুবলীগ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close