নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৩ আগস্ট, ২০১৯

ইয়াসমিন হত্যার ২৪ বছর

‘নির্যাতনের ঘটনা দ্রুত নিষ্পত্তিতে নতুন আইন করতে হবে’

‘ইয়াসমিন হত্যার ২৪ বছর পরও একই ঘটনা এখনো চলছে। আজকে দুই থেকে সাত বছরের শিশুও ধর্ষিত হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে গণজাগরণ গড়ে তুলতে হবে। সেইসঙ্গে নির্যাতনের ঘটনার দ্রুতবিচার নিষ্পত্তির জন্য নতুন আইন করতে হবে।’

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি এ কথা বলেছেন। আলোচিত গৃহশ্রমিক ইয়াসমিন হত্যার ২৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে নারী শ্রমিক জমায়েতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আইনজীবীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এই শ্রমিক নেত্রী আরো বলেন, ‘আপনারা কোনো অপরাধীর পক্ষে দাঁড়াবেন না। সেইসঙ্গে এমন একটা আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে যেন শিশুরা একা স্কুলে যেতে পারে, খেলতে পারে, নারীরা একা চলাফেরা করতে পারে।’ এ সময় তিনি নারীসমাজের প্রতি রাজধানী থেকে গ্রাম পর্যন্ত সংগঠিত আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

ধর্ষণ-নিপীড়ন-সহিংসতা প্রতিরোধে সর্বত্র সম্মিলিত আন্দোলন গড়ে তুলি’ প্রতিপাদ্যে অসরকারি উন্নয়ন সংগঠন ‘কর্মজীবী নারী’ এই নারীশ্রমিক জমায়েত করে। সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া রফিক বেবীর সভাপতিত্বে সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন জাতীয় গার্হস্থ্য নারীশ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক মুর্শিদা আখতার, প্রগতিশীল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শিরীন সিকদার, গার্মেন্টস নেত্রী শেখ শাহনাজ প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন কর্মজীবী নারী’র সমন্বয়ক রাজীব আহমেদ।

সমাবেশে ইয়াসমিনের হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ফাঁসি দাবি করে বক্তারা বলেন, ইয়াসমিন হত্যার ২৪ বছর হল, কিন্তু নারী নির্যাতন বন্ধ হয়নি। বরং মেয়েশিশুরাও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। ঘৃণ্য অপরাধীরা অপরাধ ধামাচাঁপা দেওয়ার জন্য ধর্ষণের পর হত্যাও করছে। নারী-পুরুষের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা, খেটে-খাওয়া মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার যেই স্বপ্ন নিয়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছিল সেখানে আমরা বারবার হোঁচট খাচ্ছি।’

নারী ও শিশু নির্যাতনের ভয়াবহতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বক্তরা বলেন, ঘুরেফিরে একইপ্রশ্ন বারবার, নির্যাতন ও সহিংসতা কেন কমছে না, কোথায় আমাদের গলদ? বর্তমান সময়ের রিফাত হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী মিন্নিকে নানাভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে! নারী বলেই কি মিন্নির প্রতি অমানবিকতা?’

সমাবেশ থেকে প্রতিটি নির্যাতনের বিচার এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান হয়। এছাড়া প্রশাসনকে নারী নির্যাতন বন্ধে এগিয়ে আসা এবং দায়িত্ব পালনে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৫ সালে ২৪ আগস্ট ঢাকার গৃহকর্মী ইয়াসমিন আক্তার (১৪) দিনাজপুরের দশমাইল এলাকায় নিজ বাড়িতে ফিরছিল। পথিমধ্যে দিনাজপুরের কতিপয় অসাধু পুলিশ সদস্যদের দ্বারা রাতভর দলবদ্ধ ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তিনি। এ ঘটনার প্রতিবাদী মিছিলে পুলিশের গুলিতে ৭ জন স্থানীয় মানুষ নিহত হন।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ইয়াসমিন হত্যা,শিরীন আখতার এমপি,ধর্ষণ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close