নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২১ আগস্ট, ২০১৯

ভয়াল ২১ আগস্ট

যেভাবে বেঁচে যান শেখ হাসিনা

২০০৪ সালের ২১ আগস্টের ভয়াল সেই হামলায় মূল টার্গেট ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে নেতাকর্মীদের মানবঢালে প্রাণে বেঁচে যান তিনি। সেই দিনের ওই নির্মম দৃশ্যের বর্ণনা দিতে গিয়ে সেসময় একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ঘটনার দিন বিকেল ৪টার দিকে শুরু হয় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের বক্তব্য দেওয়ার পালা। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা তখনো মঞ্চে পৌঁছাননি। দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা শেখ হাসিনার বক্তব্য শোনার অপেক্ষায় ছিলেন।

ঘটনার পর আন্তর্জাতিক এক গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু বলেন, নেত্রীর বক্তব্য শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হঠাৎ করে বিকট শব্দ শুনলাম। প্রথমে ঠিক বুঝতে পারলাম না, এদিক-ওদিক তাকালাম। তখন চারপাশে চিৎকার শুনতে পেলাম।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, যখন গ্রেনেড হামলা শুরু হলো, তখন মঞ্চে বসা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা শেখ হাসিনার চারপাশে ঘিরে মানবঢাল তৈরি করেন—যাতে তার শরীরে কোনো আঘাত না লাগে। যেসব নেতা শেখ হাসিনাকে ঘিরে মানবঢাল তৈরি করেছিলেন, তাদের মধ্যে ছিলেন ঢাকার সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফ। তখন মাথায় গ্রেনেডের স্লিন্টার বিদ্ধ হন হানিফ। পরে ২০০৬ সালে তিনি মারা যান।

ঘটনার পর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদন বলা হয়, সে সময়কার ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ফুটেজ ও মানবসৃষ্ট সেই কর্ডনটি তৈরি করেছিলেন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আমির হোসেন আমু, মহীউদ্দীন খান আলমগীর, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ সেলিম, তৎকালীন মেয়র ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ।

গ্রেনেড হামলার পর এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, নেতাকর্মীরা জীবন দিয়ে আমার জীবন রক্ষা করেছিলেন। আমার নেতাকর্মীরা সবাই আমাকে এমনভাবে ঘিরে রেখেছিলেন যে, অনেকেই ইনজুরড (আহত) হন। তাদের রক্ত এখনো আমার কাপড়ে লেগে আছে। আমার নেতাকর্মীরা তাদের জীবন দিয়ে আমাকে বাঁচিয়েছেন।

গ্রেনেড হামলার দিন আওয়ামী লীগের ওই সমাবেশের খবর সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন বিবিসি বাংলার তৎকালীন সংবাদদাতা হাসান মাসুদ। ঘটনার ভয়াবহতার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি প্রথম যে দৃশ্যটা সেখানে দেখেছিলাম, সেটি ছিল আইভি রহমানের। আমি ওনাকে দেখে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলাম। উনি বসা, চোখ দুটো খোলা, নির্বাক। ঠিক মঞ্চের সামনে দুই পাশে দুজন লোক তাকে ধরে রেখেছে। আইভি রহমানকে দেখে আমি ঘটনার ভয়াবহতা বুঝে গেলাম। মঞ্চের চারপাশে প্রচুর স্যান্ডেল-জুতা পড়েছিল। প্রচুর নিহত ও আহত মানুষ ছিল চারপাশে। কারো হাত নেই, কারো পা নেই।’

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
শেখ হাসিনা,আওয়ামী লীগ,হামলা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close