জিয়াউদ্দিন রাজু

  ০৫ এপ্রিল, ২০১৯

ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েও হচ্ছে না

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বয়স প্রায় ১০ মাস অতিবাহিত হচ্ছে। গত বছরের ৩১ জুলাই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি এবং গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করেন ২৯তম কমিটিতে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদেরই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করে নেওয়ার কথা। এর মধ্যে দফায় দফায় কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার ঘোষণা দিয়েও তা বাস্তবায়ন করতে পারেননি শোভন ও রাব্বানী।

এ কমিটির বয়স প্রায় বছর খানেক হতে চললেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে না পারায় ক্ষোভ জানিয়েছে সংগঠনটির পদপ্রত্যাশী ও সাবেক নেতারা। এর কারণ যথাযথ প্রস্তুতি ও সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করছেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা। তারা বলছেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী একটি কমিটির বয়স সাধারণত দুই বছর। কিন্তু বর্তমান কমিটি বছর পার করতে যাচ্ছে তবুও পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে ব্যর্থ। কারণ তারা সাবেক নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছেন না। ফলে ভুলত্রুটি বা কোনো ধরনের সমস্যায় পড়লেও তার সমাধান আসছে না। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর হাতেগড়া ছাত্র সংগঠন। এত বড় একটি সংগঠনে নানা ধরনের সমস্যা থাকতেই পারে, কিন্তু সবার সমন্বয় করে সমাধান করতে হবে।

অন্যদিকে ছাত্রলীগের সূত্র বলছে, গত ১০ বছার এককভাবে ক্ষমতায় থাকায় ছাত্রলীগের ব্যাপক জনপ্রিয়তা বেড়েছে। বেড়েছে নেতাকর্মী ও সমর্থক বা অনুসারী। এত নেতাকর্মীর ফলে পদপ্রত্যাশীদের নির্বাচিত করা কিছুটা কঠিন। কারণ বিগত দিনে ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারীর অভিযোগ রয়েছে। তাদের বাছাই করা বা তাদের বাদ দিয়ে কমিটি দিতে কিছুটা সমস্যার মুখোমুখী হতে হচ্ছে। ফলে যোগ্য ও ত্যাগী কর্মীরা যাতে বঞ্চিত না হন সে জন্য দফায় দফায় পূর্ণাঙ্গ কমিটির চেষ্টা থাকলেও ব্যর্থ হয়েছে।

তবে পদপ্রত্যাশীদের একটি অংশ বলছে, পূর্ণাঙ্গ কমটির তালিকার জন্য খসড়া অনুযায়ী যাদের নাম এসেছে বা যাদের বায়োডাটা কালেক্ট করা হয়েছে তাদের সঙ্গে এখন পর্যন্ত আলোচনা করে সঠিক সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি। সর্বশেষ পদপ্রত্যাশীদের তালিকা নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে শোভন ও রাব্বানী দেখা করার কথা থাকলেও এখনো করেননি। ফলে ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতার কিছুটা দুর্বলতা দেখা যাচ্ছে।

সাধারণত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নেতাকর্মীদের বড় একটি অংশ কেন্দ্রীয় কমিটিতে চলে আসেন। কিন্তু এবার কেন্দ্রীয় কমিটি না হওয়ায় ঢাবি কমিটিও আটকে আছে। ঢাকা মহানগরের দুই গুরুত্বপূর্ণ শাখারও একই সংকট। তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়ে গেলেই ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ ও ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণেরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিয়ে দেওয়া হবে। ঢাবির শাখা ছাত্রলীগের পাশাপশি উত্তর-দক্ষিণের নেতারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

উল্লেখ্য, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ২৯তম সম্মেলনের প্রায় আড়াই মাস পরে গত বছরের ৩১ রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি এবং গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করে কমিটি গঠিত হয়।

কেন্দ্রীয় সভাপতি সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও ঢাবি, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয় সেদিন। ঢাবির সভাপতি হয়েছেন সঞ্জিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে সাদ্দাম হোসাইনকে।

একই সঙ্গে ঢাকা মহানগর-উত্তরের সভাপতি হয়েছেন মো. ইব্রাহিম এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন সাইদুর রহমান হৃদয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হয়েছেন মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন মো. জোবায়ের আহমেদ। এরপর থেকেই কেন্দ্রসহ চার ইউনিটির পূর্ণাঙ্গ কমিটির জন্য শুরু হয় কয়েক হাজার নেতাকর্মীর অপেক্ষা। সেই অপেক্ষা যেন শেষই হচ্ছে না। সেই থেকেই নানা প্রশ্ন, সিভি দিয়ে পরীক্ষা দিলাম, ফল প্রকাশ হবে কবে?

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ছাত্রলীগ,পূর্ণাঙ্গ কমিটি,কেন্দ্রীয় কমিটি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close