রাজশাহী প্রতিনিধি
রাসিক নির্বাচন
দলীয় প্রার্থী হচ্ছেন হাই ভোল্টেজ লিটন ও বুলবুল
রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে মেয়র পদের প্রার্থী হতে আওয়ামী লীগের এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও বিএনপির মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের পক্ষে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে তা জমা দেয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে রাজধানীর দলীয় সভানেত্রীর কার্যালয় থেকে লিটনের পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার ও বর্তমান মেয়র বুলবুলের পক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন দলের রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। আর হাই ভোল্টেজ দুই প্রার্থীই নিজ নিজ দলের পক্ষে মনোনিত হচ্ছেন এমনটিই নিশ্চিত করেছেন দলীয় সূত্র।
এ বিষয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, দলীয় মনোনয়নপত্র উত্তোলন করার পর এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনসহ ধানমন্ডির ৩/এ সড়কের দলীয় কার্যালয়ে দুপুর ১২টার দিকে তারা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপের কাছে তা জমা দিয়েছেন। অন্যদিকে, বুলবুলের মনোনয়নপত্র জমা হয়েছে কি না বিষয়ে জানতে বুধবার রাত পৌনে ৯টা পযর্ন্ত মুঠোফোনের মাধ্যমে অনেকবার চেষ্ঠা করা হলেও তারা কল রিসিভ না করায় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এদিকে, রাজশাহী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সিটি নির্বাচনের সহকারি রিটানিং অফিসার আতিয়ার রহমান গতকাল বুধবার রাত ৯টায় প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, দলীয় মনোনয়ন ফরম দলের কাছে জমা দেয়ার পর দল তাদের প্রার্থী নিশ্চিত করে একটি সনদ দেবে। এতে নির্বাচনের জন্য ওই প্রার্থীর দলীয় প্রতীক বরাদ্দ হবে। এরপর প্রার্থীকে আবার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে হবে। সেটি জমা দেয়ার সময় দল থেকে পাওয়া সনদ সংযুক্ত করতে হবে। এরপর তিনি দলীয় প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হবেন এবং দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করবেন।
তবে সিটি নির্বাচনে শুধু মেয়র পদেই দলীয় প্রতীক ব্যবহার করা হবে। সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদের প্রার্থীদের বিভিন্ন দল সমর্থন দিতে পারবে। তবে তারা দলীয় মনোনয়ন পাবেন না। ফলে তারা দলীয় প্রতীকও পাবেন না। রাসিকের বিভিন্ন ওয়ার্ডে নির্বাচনে অংশ নিতে মঙ্গলবার পর্যন্ত ১৩৪ জন কাউন্সিলর ও নারী কাউন্সিলর পদের প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
গত ১৪ জুন থেকে ছুটির দিনসহ প্রতিদিনই সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হচ্ছে। ২৮ জুন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেয়া যাবে। আগামী ১ ও ২ জুলাই নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা সৈয়দ আমিরুল ইসলাম মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করবেন। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ জুলাই। আর নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে ৩০ জুলাই।
নির্বাচন কর্মকর্তা আরো বলেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিতে বুধবার পযর্ন্ত ১৫৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১৪ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৪৪ জন। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজশাহী নির্বাচন কমিশনের কার্যালয় থেকে তারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। তবে এ দিন পর্যন্ত কোন মেয়র প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেননি। রাসিক’র মোট ওয়ার্ডের সংখ্যা ৩০টি। এর মধ্যে ১০টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড। এখানে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১৮ হাজার ১৩৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫৬ হাজার ৮৫ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৬২ হাজার ৫৩ জন। ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৩৭টি।
উল্লেখ্য, রাজশাহীতে মেয়র পদে প্রথম ভোট হয়েছিল ১৯৯৪ সালে। তৎকালীন সময় জিতেছিলেন বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিনু। ২০০২ সালের দ্বিতীয় নির্বাচনেও জয় পান তিনি। ২০০৮ সালে মিনু কারাগারে থাকায় ভোটে দাঁড়ান নি। বিএনপি প্রার্থী করে সে সময়ের যুবদল নেতা বুলবুলকে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের ওই নির্বাচনে জিতেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী লিটন। তবে ২০১৩ সালের নির্বাচনে তিনি বুলবুলের কাছে প্রায় ৫০ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।
পিডিএসও/রানা