‘পাসপোর্ট জমা দেওয়া মানে নাগরিকত্ব ত্যাগ নয়’
‘লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সেই দেশের আইন অনুযায়ী পাসপোর্ট জমা দিয়ে ট্রাভেল পারমিট নিয়েছেন। পাসপোর্ট জমা দেওয়া মানে নাগরিকত্ব ত্যাগ নয়।’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা জানিয়েছেন।
এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে সামাজিক মাধ্যম ও গণমাধ্যমে তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করেছেন মর্মে যে প্রচার চালাচ্ছে তা রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক। মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম লন্ডনে অবস্থিত তারেক রহমানের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে ‘অদ্ভুত তথ্য’ দিয়েছেন দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, জন্মসূত্রে বাংলাদেশি নাগরিক তারেক রহমানের পাসপোর্ট যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের মাধ্যমে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে জমা দেওয়ার একটি নথি দেখিয়েছেন বর্তমান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তারেক রহমানের নাগরিকত্ব বিষয়ে তিনি যে অদ্ভুত, যুক্তিহীন ও বেআইনি মন্তব্য করেছেন—আমরা (বিএনপি) তার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, জমা রাখার জন্য বৃটিশ স্বরাষ্ট্র বিভাগ থেকে তার পাসপোর্ট লন্ডন হাইকমিশনে পাঠানোর যে তথ্য প্রচার করা হচ্ছে তার দ্বারাও কোনো আইন কিংবা যুক্তিতে প্রমাণ হয় না যে, তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেছেন। এ ধরণের উদ্ভূত ধারণাকে তত্ত্ব কিংবা তথ্য হিসেবে সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন কিংবা ফেসবুকে প্রচার উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচার ছাড়া আর কিছু হতে পারে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, তারেক রহমান বিশ্বের অসংখ্য বরেণ্য রাজনীতিবিদ, সরকারবিরোধী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মতোই সাময়িকভাবে বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন এবং সঙ্গত কারণেই তা পেয়েছেন। এই প্রক্রিয়ার স্বাভাবিক অংশ হিসেবেই তিনি যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র বিভাগে তার পাসপোর্ট জমা দিয়েছেন। সে দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার পাসপোর্ট জমা রেখে তাকে ট্রাভেল পারমিট দেওয়া হয়েছে।
কাজেই এই মুহূর্তে বাংলাদেশের পাসপোর্ট তার কোনো কাজে লাগছে না। যখনই তিনি দেশে ফেরার মতো সুস্থ হবেন তখনই তিনি দেশের অন্যান্য নাগরিকের মতোই পাসপোর্টের জন্য আবেদন জানাতে এবং তা অর্জন করতে পারবেন।
এ সময় তিনি আরো বলেন, এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে যে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে—দেশের জনগণ তার জবাব জানার জন্য অপেক্ষা করছে। দেশের জনগণ ক্ষোভের সাথে লক্ষ্য করেছে যে, তাদের কষ্টার্জিত বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে লন্ডন সফরকারী বিশাল বহরের একমাত্র অর্জন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সংগ্রহ করা তারেক রহমানের ২০০৮ সালে ইস্যু করা পাসপোর্টের ৩টি পাতা এবং ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র বিভাগের অসংখ্য ভুলে ভরা এক লাইনের রহস্যজনক একটি চিঠির ফটোকপি। কি বিচিত্র এই সরকার! কি দুর্বল তাদের অপকৌশল !
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা দৃঢ়তার সাথে স্পষ্ট ভাষায় দেশবাসীকে জানাতে চাই যে, তারেক রহমান জন্মসূত্রে বাংলাদেশের একজন গর্বিত নাগরিক। তিনি তার এই প্রিয় দেশের নাগরিক ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন ইনশাআল্লাহ।
পিডিএসও/তাজ