‘খালেদা জিয়া সাধারণ বন্দি, পরছেন কারা পোশাক’
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া জেলকোড অনুসারে সাধারণ কারাবন্দি হিসেবে কারাগারে আছেন এবং তিনি কারা পোশাক পরিহিত অবস্থায় রয়েুছেন বলেও জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন। আজ রোববার পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে কারা সদর দপ্তরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, কোর্ট থেকে ডিভিশনের আদেশ দেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ মাধ্যমগুলোতে দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু আমরা এখনও কোনো নির্দেশনা পাইনি। আজ তার আইনজীবীরা ডিভিশনের আবেদন নিয়ে এসেছিলেন। আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে তা পাঠিয়ে দিয়েছি। সরকারি নির্দেশনা অনুসারে আমরা ব্যবস্থা নেবো।
প্রসঙ্গত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ৫ বছরের সাজা দেয়া হয়েছে খালেদা জিয়াখে। এর পর তার ঠাঁই হয়েছে পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে। ওই কারাগারের সাবেক প্রশাসনিক ভবনের জ্যেষ্ঠ কারা তত্ত্বাবধায়কের দপ্তরটিকে তার থাকার উপযোগী করা হয়েছে। ওই কক্ষে খালেদা জিয়া একা থাকছেন। তার সেবার জন্য দীর্ঘদিনের গৃহকর্মী ফাতেমাকে সঙ্গে রাখার ব্যাপারে আদালতের আদেশ এখনো হাতে পায়নি কারা কর্তৃপক্ষ। তবে সহায়তার জন্য কর্তব্যরত নারী কারারক্ষীরা প্রয়োজনে তার সার্বিক খোঁজখবর রাখছেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কারা মহাপরিদর্শক বলেন, ১৯৬৪ ও ২০০৬ সালের কারা বিধি অনুযায়ী বর্তমানে যারা সাংসদ, তারাই ডিভিশন পান। সাবেক প্রেসিডেন্টও পান। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী পান না। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একজন সেবিকা প্রথমদিন পুলিশ আমাদের দিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু জেলকোডে এই ধরনের কিছু না থাকায় আমরা সেবিকাকে ১ ঘণ্টা রেখে ফেরত দিয়েছি। এছাড়া তার খাওয়া-দাওয়া সব কারাগারের খাবার অনুসারেই দেওয়া হচ্ছে। বাইরে থেকে শুকনা খাবার তার আত্মীয়-স্বজনরা দিয়ে গেলেও গ্রহণ করা হচ্ছে।
চিকিৎসার ব্যাপারে আইজি প্রিজন বলেন, এখানে একজন ডাক্তার ও একজন নার্স চিকিৎসায় নিয়োজিত আছেন। আরও আছেন ৪জন নারী কারারক্ষী। যদি প্রয়োজন মনে করা হয় বা জরুরি হয় তাহলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সহায়তা নেওয়া হবে। আর প্রথম শ্রেণীর কারাগারের ক্ষেত্রে কাশিমপুর নারী কারাগার তার জন্য ভালো হতো। কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়া ও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সেখানে তাকে নেওয়া হবে না। এখানেই সব ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে। যেহেতু সরকার কেন্দ্রীয় কারাগারকে এখনও পতিত্যক্ত ঘোষণা করেনি তাই এখানেই সব সম্ভব হবে।
সৈয়দ ইফতেখার বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদার রায়ের সময় কোর্ট থেকে কোনো নির্দেশনা আসেনি। তাই জেলকোড অনুসারে যে রিকমেন্ডেশন আছে, সে অনুযায়ীই কোর্টের নির্দেশ আসার আগ পর্যন্ত তিনি সাধারণ কারাবন্দি হিসেবেই থাকবেন। ২০০৬ সালে জেলকোডে একটি পরিবর্তন আসে। সেখানে সাবেক প্রেসিডেন্টকে কারাগারে প্রথম শ্রেণীর মর্যাদা দেওয়ার কথা বলা আছে। কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। এছাড়া সংসদ সদস্যদের ব্যাপারেও বলা আছে। খালেদা জিয়া এই ধরনের কোনো আওতার মধ্যে পড়ছেন না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।পিডিএসও/মুস্তাফিজ