ঈদের ছুটি ৬ দিন : ঝুলে আছে সিদ্ধান্ত
ঈদ উপলক্ষ্যে সরকারি ছুটি ৬ দিন করাসহ অন্যান্য ধর্মীয় উৎসবে ছুটি বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রস্তাব দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। রোববার পর্যন্ত এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি পাওয়া যায়নি। প্রধানমন্ত্রী যদি সম্মতি দেন, তাহলে প্রস্তাবটি মন্ত্রিসভায় উঠবে। ফলে বিষয়টি এখনো অনিশ্চয়তার মধ্যেই আছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য পাওয়া গেছে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২ সেপ্টেম্বর ঈদ হতে পারে। বর্তমানে ঈদের সরকারি ছুটি ৩ দিন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সূত্রমতে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ইনোভেশন ইউনিটের প্রস্তাবনা অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ছুটি বাড়াতে গত জুলাই মাসে এই প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। প্রস্তাবে ইনোভেশন ইউনিটের দেওয়া বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরে বলা হয়, পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার ছুটিতে ঢাকাসহ অন্য বড় শহরগুলো থেকে সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীসহ বেশির ভাগ মানুষ ঈদ উদ্যাপনের জন্য গ্রামের বাড়ি বা নিজ শহরে যান। কিন্তু ছুটি সীমিত থাকায় পরিবহনের ওপর মাত্রাতিরিক্ত চাপ, দুর্ঘটনা বৃদ্ধিসহ দূরপাল্লার যাত্রাপথে দীর্ঘ জটের সৃষ্টি হয়। এতে মানুষকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। মারাত্মক দুর্ঘটনায় অনেক প্রাণহানিও ঘটে। আবার ঈদ শেষে অফিস খোলার পরবর্তী দু-এক দিন সরকারি-বেসরকারি কার্যালয়ে কর্মচারীরাও ঠিকমতো উপস্থিত থাকেন না। সার্বিক বিবেচনায় বিভিন্ন প্রধান ধর্মীয় উৎসবের সময় সরকারি ছুটি বাড়ানো হলে জনদুর্ভোগ লাঘব হবে। পাশাপাশি ছুটি বাড়লে উৎসবের আগে ও পরে যাত্রাপথে জনদুর্ভোগ ও দুর্ঘটনায় প্রাণহানি কমবে। উৎসব পালনও স্বাচ্ছন্দ্যময় হবে।
এসব বিবেচনায় নৈমিত্তিক ছুটি বিদ্যমান ২০ দিন থেকে কমিয়ে ১৪ দিন করে বাকি ছয় দিন দুই ঈদের ছুটির সঙ্গে তিন করে সমন্বয় করতে প্রস্তাব করা হয়। তবে সে ক্ষেত্রে ঈদের সঙ্গে ঐচ্ছিক ছুটি বাতিল হবে। এ ছাড়া অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসবের সরকারি ছুটির সঙ্গে দুদিন করে চার দিন ঐচ্ছিক ছুটির প্রস্তাব করা হয়।
প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো প্রস্তাবে যুক্তি হিসেবে আরও বলা হয়, পবিত্র ঈদে ছুটি বাড়ানো হলে মোট ছুটির সময় ঠিক থাকবে। ফলে সরকারি কার্যক্রমের জন্য সময় কমবে না। এতে সরকারি কাজেরও ক্ষতি হবে না। অন্য ধর্মের মানুষদের জন্যও ছুটির ভারসাম্য থাকবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা রোববার বলেন, এই সিদ্ধান্তটি হতে হবে নির্বাহী আদেশে। এ জন্য প্রস্তাবটি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের প্রয়োজন আছে। আর সেটি করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি লাগবে। যদি প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দেন, তাহলেই সেটি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হবে। আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহার আগে সোমবার ও ২৮ আগস্ট মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক হওয়ার কথা আছে।
জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী রোববার সন্ধ্যায় বলেন, এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
গত কয়েক বছর ধরেই ঈদের ছুটি বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। এর আগে ২০১০ সালেও একবার ঈদের ছুটি পাঁচ দিন করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু পরে তা নাকচ হয়ে যায়।
পিডিএসও/রিহাব