প্রধানমন্ত্রী বন্যা পরিস্থিতি দেখতে কুড়িগ্রাম যাচ্ছেন
বন্যা পরিস্থিতি দেখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার কুড়িগ্রাম যাচ্ছেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
সরকারি এই কর্মকর্তা বলেন, প্রধানমন্ত্রী রাজারহাট উপজেলার পাঙ্গারাণী লক্ষ্মীপ্রিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করবেন।
রাজারহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুনুর মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, আগামী ২০ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজারহাট সফরে আসছেন। তিনি পাঙ্গারাণী লক্ষ্মীপ্রিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে বানভাসিদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ শেষে জনসভায় বক্তব্য দেবেন।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, আজ বৃহস্পতিবার সকালে কুড়িগ্রাম ফেরিঘাট পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার এবং চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। পানি কমার সঙ্গ সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ব্যাপক ভাঙন। পুরোপুরি পানি না নামা পর্যন্ত ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামতের সুযোগ নেই।
সিভিল সার্জন আমিনুল ইসলাম বলেন, বন্যাদুর্গতদের চিকিৎসা সেবা দিতে ৯০টি মেডিকেল টিম মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে। জরুরি প্রয়োজনীয় ওষুধ, স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মজুত আছে। ভয়াবহ বন্যার কারণে পানিতে ডুবে গেছে ৯০টি কমিউনিটি ক্লিনিক। পানি সড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব ক্লিনিক চিকিৎসা সেবা দেওয়ার উপযোগী করা হবে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক আবু ছালেক মোহাম্মদ ফেরদৌস খান স্বাক্ষরিত জেলা নিয়ন্ত্রণ কক্ষের তথ্য থেকে জানা যায়, জেলার নয় উপজেলার ৬২টি ইউনিয়নের ৮২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা এক লাখ ১৭ হাজার ৩০২টি, যার লোকসংখ্যা চার লাখ ৭৯ হাজার ৮২০ জন। এখন পর্যন্ত বন্যার পানিতে মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ ৪৪ কিলোমিটার। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৬০৭টি। কাঁচা ও পাকা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৪২ দশমিক ৫০ কিলোমিটার। নদী ভাঙনে বিলীন হয়েছে ২ হাজার ৬৯৪টি বাড়ি। ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্র, উঁচু রাস্তা ও বাঁধে আশ্রিত লোকসংখ্যা এক লাখ ১৭০ জন।
জেলা প্রশাসক জানান, বন্যা দুর্গতদের মাঝে ইতিমধ্যে ৮৫১ দশমিক ৩৮০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। অর্থ বিতরণ করা হয়েছে ২৩ লাখ ৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া দুই হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়। এখনো মজুত আছে ১৫০ মেট্রিক টন চাল ও সাড়ে নয় লাখ টাকা। চাহিদা মোতাবেক ঢাকা থেকে প্রয়োজনীয় ত্রাণ সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে। কোথাও কোনো সংকট নেই।
পিডিএসও/রিহাব