শান্তিপূর্ণভাবে দেশব্যাপী পালিত হলো পবিত্র ঈদুল ফিতর
যথাযোগ্য মর্যাদায় ধর্মীয় ভাব গম্ভীর পরিবেশে ও ব্যাপক উৎসব উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সোমবার রাজধানীসহ সারাদেশে মুসলিম উম্মাহ’র বড় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে।
নামাজ শেষে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। পরে মুসল্লিরা পরস্পর ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন হাসপাতাল, জেলখানা, শিশু সদন, ভবঘুরে কেন্দ্র ও দুঃস্থ কল্যাণ কেন্দ্রে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়।
রাজধানীতে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় ঈদগাহে সকাল সাড়ে ৮টায়। এখানে নামাজ আদায় করেন রাষ্ট্রপতি, বিচারপতিরা, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা, মুসলিম বিশ্বের কূটনীতিকরাসহ সর্বস্তরের মানুষ। জাতীয় ঈদগাহে নারীদের জন্যও আলাদা নামাজের ব্যবস্থা করা হয়।
পাশাপাশি বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদেও ঈদের পাঁচটি জামাত হয়। সকাল ৭টা, ৮টা, ৯টা, ১০টা এবং ১১টায় ঈদের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবছরের মতো এবারো কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দৈনিক পত্রিকাগুলো বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে চ্যানেলে প্রচারিত হচ্ছে ঈদের বিশেষ অনুষ্ঠানমালা।
ঈদ উপলক্ষে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও সড়কে আলোকসজ্জা, জাতীয় পতাকার সঙ্গে ঈদ মোবারক ও লা ইলাহা ইল্লাহু মুহাম্মাদুর (রা.) খচিত পতাকা দিয়ে সড়ক দ্বীপগুলোর শোভাবর্ধণ করা হয়েছে।
খুলনা : সারাদেশের মতো খুলনায় পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। মহানগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও সড়কদ্বীপ বাংলা ও আরবিতে ঈদ মোবারক খচিত ব্যানারে সজ্জিত করা হয়। প্রধান ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয় খুলনা টাউন জামে মসজিদে সকাল আটটায়। জামাতে ইমামতি করেন খুলনা টাউন জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মোহাম্মদ সালেহ। কোর্ট জামে মসজিদে সকাল সাড়ে আটটায় একটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
ঈদের জামাতে কেসিসির মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, খুলনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদ, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আবদুস সামাদ, জেলা প্রশাসক মোঃ আমিন উল আহসানসহ বিভিন্ন রাজনৈদিক দলের নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করেন।
মাগুরা : মাগুরা শহরের নোমানী ময়দানে সকাল ৯টায় পৌরসভার উদ্যোগে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাতে নামাজ অদায় করেন জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় বিশ্বসেরা অল-রান্ডাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এছাড়া নোমানী ময়দানে জেলা প্রশাসক আতিকুর রহমান, পুলিশ সুপার মুনিবুর রহমান, পৌর মেয়র খুরশিদ হায়দার টুটুলসহ জেলার সর্বস্তরের মানুষ নামাজ আদায় করেন। মোনাজাত পরিচালনা করেন মাগুরা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা মোঃ রইচ উদ্দিন। নামাজ আদায় শেষে মুসল্লিরা দেশ ও জাতির কল্যাণ কমানা করে মহান আল্লাহ’র কাছে হাত তুলে মোনাজাত করা হয়।
নড়াইল : শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে সকাল ৮টায় প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জমাতে জাতীয় ক্রিকেটের ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা, জেলা প্রশাসক মোঃ এমদাদুল হক চৌধুরী, পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম, জেলা পরিষদ প্রশাসক অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর বিশ্বাসসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ জেলার এই প্রধান জামাতে নামাজ আদায় করেন।
টাঙ্গাইল : ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সকাল সাড়ে আটটায় টাঙ্গাইল ঈদগাঁ মাঠে প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষ অংশ নেয়। এছাড়া জেলার বিভিন্ন বিনোদন স্পটগুলোতে জনসাধারণ উপচেপড়া ভিড়ের মধ্য দিয়ে ঈদ উদযাপন করেছে।
বরগুনা : জেলা শহরসহ পাঁচ উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে বিভিন্ন ঈদগাহ ও মসজিদে সকাল ৮টা ও সাড়ে ৮টায় ঈদের নামাজের জামাতগুলো অনুষ্ঠিত হয়।
জয়পুরহাট : জয়পুরহাটের বিভিন্ন উপজেলায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা শহরের প্রধান ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় জয়পুরহাট কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দান। এছাড়াও জয়পুরহাট চিনিকল জামে মসজিদে দুইটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়, কালেক্টরেট ঈদগাহ ময়দান, পুলিশ লাইন ঈদগাহ ময়দান, তেঘরবিশা ঈদগাহ ও হাতিল মাঙ্গনীপাড়া ঈদগাহ ময়দান, খনজনপুর ও কাশিয়াবাড়ী ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
শরীয়তপুর : জেলার ছয় উপজেলার দুই শতাধিক স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলার প্রধান ঈদ জামাত সোমবার সকাল ৮টায় শরীয়তপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জেলার সরকারী বেসরকারী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বসহ সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ঈদের নামাজ আদায় করেন। ঈদের নামাজের পূর্বে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক মো: মাহমুদুল হোসাইন খান জেলাবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান।
এছাড়া পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নাটোর, বগুড়া, জামালপুর, নেত্রকোনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, সিলেট, বরিশাল, গাজীপুর, দিনাজপুর, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, রাজশাহী, নওগাঁ, নারায়ণগঞ্জ, লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারিসহ দেশের সব জেলার উপজেলায় যথাযোগ্য মর্যাদায় ধর্মীয় ভাব গাম্ভীর্য পরিবেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশজুড়ে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা।
পিডিএসও/রিহাব