নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৭ মে, ২০২০

জুনের শুরুতে উঠতে পারে লকডাউন!

বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবের কারণে সবকিছু স্থবির হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণাসহ সবকিছু বন্ধ আছে। টানা প্রায় দুই মাস ‘লকডাউন’-এর কারণে মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে নিরুপায় হয়ে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষ।

এই পরিস্থিতিতে সাধারণ ছুটি দফায় দফায় বাড়ালেও ‘লকডাউন’ কিছুটা শিথিল করেছে সরকার। তবে জুনের শুরু থেকে উঠিয়ে নেওয়া হতে পারে চলমান লকডাউন পরিস্থিতি ও সাধারণ ছুটি। ঈদ পর্যন্ত করোনাভাইরাস পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।

সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। আবার সবকিছু বন্ধের কারণে মানুষের জীবনও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে শ্রমজীবী, খেটে খাওয়া মানুষের জীবিকার প্রশ্ন সামনে বড় করে দেখা দিয়েছে। তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রতিবছর জুনে পরবর্তী অর্থবছরের জাতীয় বাজেট দেওয়া হয়। এ পরিস্থিতিতে কার্যত লকডাউন চালিয়ে যাওয়া নিয়ে সরকার উভয় সংকটে পড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে মানুষের জীবিকার জন্য কার্যক্রম সচল রাখতে ধীরে ধীরে শিথিল করা হচ্ছে। যদিও ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি বাড়ানো হয়েছে।

এ দফার ছুটি শেষ হওয়ার পর জুন থেকে ছুটি ও লকডাউন’ তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ও জনসমাগমের ওপর নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকবে বলে তারা জানিয়েছেন। যদিও সবকিছু নির্ভর করবে করোনা পরিস্থিতি কোন দিকে যায় তার ওপর। এপ্রিলের শেষ এবং মে মাসের প্রথম দিকে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম বলছেন তারা। তাই এই পরিস্থিতি শিথিল, গার্মেন্ট, মার্কেট খুলে দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। প্রতিদিনই ১ হাজারের ওপরে নতুন আক্রান্ত হচ্ছেন। সেইসঙ্গে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। এই সংখ্যা আরো ঊর্ধ্বগতির হলে উল্টো চিন্তা-ভাবনাও করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে মানুষের জীবন বাঁচাতে লকডাউন পরিস্থিতি আরো কঠোর করা হতে পারে বলেও সরকারের ওই নীতিনির্ধারকরা জানান।

গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ছুটি সংক্রান্ত নির্দেশনার পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে চলমান ছুটি ৩০ মে পর্যন্ত বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এছাড়া স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ১৩ দফা নির্দেশনা মেনে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ প্রয়োজন অনুসারে খোলা রাখার নির্দেশনাও দেয় সরকার। এদিকে, এই সময়ের মধ্যে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে আরো ছুটি বাড়িয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিকল্প পন্থাও চিন্তা-ভাবনা করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা।

কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ঈদ পর্যন্ত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে। সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে ‘লকডাউন’ উঠানো বা না উঠানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ঈদ পর্যন্ত পরিস্থিতি কী হয়, তার ওপর সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এটি নিয়ে আরো চিন্তাভাবনা করা হবে। আমরাও তো চাই পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে আসুক। এজন্য কিছু কিছু শিথিল করা হয়েছে। ঈদের পর পরিস্থিতি কী হবে, সেটা দেখা হবে। তারপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত। তবে স্কুল-কলেজ খোলা, জনসমাগম এগুলো করা যাবে না।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সবকিছু নির্ভর করে পরিস্থিতির ওপর। এই সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি কী হয়, সেটা দেখতে হবে। এ সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি আছে।পরামর্শক কমিটি আছে। তাদের সুপারিশ ও মতামতের ভিত্তিতে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
করোনা পরিস্থিতি,লকডাউন,সরকার,বাজেট
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close