নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৮ মে, ২০২০

ভয়কে দূরে ঠেলে মসজিদে মুসল্লিরা

করোনাভাইরাসের ভয়কে দূরে ঠেলে মসজিদে নামাজ পড়া শুরু করেছেন মুসল্লিরা। সরকার অনুমতি দেওয়ার পর গতকাল বৃহস্পতিবার জোহরের ওয়াক্ত থেকে মসজিদে জামাতে নামাজ আদায় শুরু করেছেন সাধারণ মুসল্লিরা।

এর আগে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবজনিত কারণে সারা দেশে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় ৪ এপ্রিল এবং ২৩ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, জুমা এবং রমজান মাসের তারাবির জামাত সীমিত আকারে আদায়ের জন্য নির্দেশনা দেয়।

এরপর দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম-ওলামারা পবিত্র রমজানুল মোবারক মাসের গুরুত্ব বিবেচনা করে মসজিদে নামাজ আদায়ের শর্ত শিথিল করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান। তারই পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার জোহরের ওয়াক্ত থেকে মসজিদে জামাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার অনুমতি দেয় সরকার।

গতকাল বৃহস্পতিবার বায়তুল মোকাররমে জোহরের নামাজ পড়ে মাহবুব নামে একজন বলেন, মসজিদ আল্লাহর ঘর। মসজিদে নামাজ পড়ে যে শান্তি পাওয়া যায়, ঘরে নামাজ পড়ে সেই শান্তি পাওয়া যায় না। তই করোনা নিয়ে ভয় থাকলেও মসজিদে নামাজ পড়তে এসেছি। সরকারের দেওয়া নির্দেশনা মেনেই মসজিদে নামাজ আদায় করা হয়েছে।

বায়তুল মোকাররমে নামাজ আদায় করা আরেক মুসল্লি বলেন, আমরা যারা নামাজি তারা যেন একটা অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলাম। আজ থেকে মন খুলে মসজিদে আসার পরিবেশ শুরু হয়েছে। আশা করি এটা অব্যাহত থাকবে। আশা করি আমরা সবাই স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলব।

রামপুরার বিভিন্ন মসজিদেও মুসল্লিদের জামাতে নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে। সালামবাগ জামে মসজিদে নামাজ আদায় করে মহিউদ্দিন নামে এক ব্যক্তি বলেন, সরকারের থেকে নিষেধাজ্ঞা থাকায় অনেকদিন মসজিদে নামাজ আদায় করা হয়নি। এখন সরকার মসজিদে নামাজ আদায় করার অনুমতি দিয়েছে। তাই মসজিদে জোহরের নামাজ আদায় করলাম। অনেক ভালো লাগছে।

মসজিদে নামাজ পড়তে মানতে হবে যেসব শর্ত:

মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। মুসল্লিরা প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসবেন। মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা সাবান-পানিসহ হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং মুসল্লিদের অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে।

প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে অজু করে সুন্নত নামাজ আদায় করে মসজিদে আসতে হবে। অজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। কাতারে নামাজে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব অর্থাৎ তিন ফুট পরপর দাঁড়াতে হবে। এক কাতার অন্তর অন্তর কাতার করতে হবে।

শিশু, বয়োবৃদ্ধ, যেকোনো অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি জামাতে অংশ নিতে পারবেন না। সংক্রমণ রোধ নিশ্চিতকল্পে মসজিদের অজুখানায় সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না।

সর্বসাধারণের সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। মসজিদে ইফতার ও সেহরির আয়োজন করা যাবে না। খতিব, ইমাম এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটি বিষয়গুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবেন।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মসজিদ,মুসল্লি,মসজিদে জামাত,করোনা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close