হাসান ইমন

  ২৯ অক্টোবর, ২০১৯

সরকারি সহায়তায় চলবে হাতিরঝিল রক্ষণাবেক্ষণ

হাতিরঝিল প্রকল্পের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ। পুরাপুরি কাজ শেষ হলে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৫ সদস্যের একটি ইউনিটের হাতে তুলে দেবে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। ক্যাপ্টেন বা মেজর লেভেলের একজন প্রধান হয়ে প্রকল্পটি মনিটরিং করবেন। এ খাতে বছরে খরচ ২০ কোটি টাকা। আর এ প্রকল্প থেকে আয় হবে ৯ থেকে ১০ কোটি টাকা। আর বাকি টাকা সরকারি বরাদ্দ থেকে খরচ করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হাতিরঝিল অ্যাম্পিথিয়েটারের উত্তর পাশে নির্মিত হচ্ছে ১০তলা বিশিষ্ট মাল্টিস্টোর কার পার্কিং। এরই মধ্যে ভবনটির অধিকাংশই কাজ শেষ। ভবনটির পুরাপুরি কাজ শেষ হলেই হাতিঝিল প্রকল্পের ইতি টানা হবে। গত ৬ মে বেগুনবাড়ি খালসহ হাতিরঝিল এলাকায় সমন্বিত উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালন স্কিম প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই চিঠিতে বলা হয়, হাতিরঝিল প্রকল্পটি উন্মুক্ত স্থান হওয়ায় দেশি-বিদেশি পর্যটক ও সাধারণ মানুষের কাছে ‘গ্রহণযোগ্য বিনোদনকেন্দ্র’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। নগরবাসীর কাছে নান্দনিক এ প্রকল্পের গ্রহণযোগ্যতা ‘দীর্ঘমেয়াদি করার জন্য’ পুরো প্রকল্প রক্ষণাবেক্ষণের একটি পূর্ণাঙ্গ কর্মসূচি নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এজন্য রাজউক এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৫ ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেডকে এ প্রকল্প রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দিয়ে বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ এবং একটি পরিচালন স্কিম প্রস্তাব আকার পাঠিয়েছে রাজউক। রাজউকের প্রস্তাবে হাতিরঝিল প্রকল্পের জন্য বার্ষিক ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭ কোটি ৭৫ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। প্রকল্প থেকে বার্ষিক ৯ কোটি ৯৭ লাখ ৫০ হাজার ৪৮৪ টাকা আয় হবে বলে রাজউকের প্রস্তাবে বলা হয়েছে।

বাকি ১৭ কোটি ৭৮ লাখ ৩৫ হাজার ৫১৬ টাকা সরকারি কর্মসূচি ব্যয় হিসেবে সংগ্রহ করা জন্য প্রস্তাবে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চেয়েছে রাজউক। তবে মন্ত্রণালয়ে সংশোধন হয়ে রক্ষণাবেক্ষণ খরচ ২০ কোটিতে আসে। সেখানে ৮ থেকে ৯ কোটি টাকা হাতিরঝিল প্রকল্প থেকে নেওয়া হবে। আর বাকি টাকা সরকার অর্থায়ন করবে। এ বিষয়ে রাজউক হাতিরঝিল প্রকল্পের পরিচালক ও প্রধান প্রকৌশলী এ এস এম রায়হানুল ফেরদৌস বলেন, হাতিরঝিল প্রকল্পটির কাজ ৯৫ শতাংশ শেষ। এ প্রকল্পটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ২৫ সদস্যবিশিষ্ট সেনাবাহিনীর একটি ইউনিটের হাতে দেওয়া হবে। ক্যাপ্টেন বা মেজর লেভেলের একজন প্রধান হয়ে প্রকল্পটি মনিটরিং করবে। প্রকল্পটির মোট খরচ দাঁড়াবে ২ হাজার ২৬০ কোটি টাকা।

তিনি আরো বলেন, প্রকল্পটি রক্ষণাবেক্ষণে বছরে মোট খরচ হবে ১৮ থেকে ২০ কোটি টাকা। যার মধ্যে হাতিরঝিলে নির্মিত দোকান, কারপার্কিং ও বিভিন্ন অবকঠামো থেকে বছরে আয় হবে ৮ থেকে ৯ কোটি টাকা। বাকি টাকা সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।

ভবিষ্যতে পুরো খরচটা হাতিরঝিল প্রকল্প থেকে আসবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা বলেন, হাতিরঝিলে প্রকল্পের ভেতর যা যা হওয়ার কথা সবই নির্মিত হয়েছে। নতুন করে আর কোনো কিছু হবে না। সুতরাং এ প্রকল্পের খরচ ৫০ শতাংশ সরকারি অর্থায়নে হবে।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালে হাতিরঝিল সমন্বিত উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। শুরুতে এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৪৭৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১০ সালের জুন মাসে। প্রথম দফা সংশোধনীতে এক বছর সময় বাড়ানো হয়। সেসময় ব্যয় বাড়ে ৮ কোটি টাকা।

দ্বিতীয় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ আরো দেড় বছর বাড়ানো হয়। সে সময় প্রকল্প ব্যয় ৪৯০ কোটি টাকা বেড়ে হয় ১ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা। তৃতীয় দফায় ব্যয় বাড়ে ২৬৫ কোটি টাকা, আর মেয়াদ বাড়ে ২০১৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত। ২০১৫ সালে চতুর্থবারের মতো প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হলেও ব্যয় বাড়ানো হয়নি। ২০১৭ সালে আরেকবার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়, যা এ বছরের জুনে শেষ হওয়ার কথা। এ পর্যন্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হয় ২ হাজার ২৬০ কোটি টাকা।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সরকারি সহায়তা,হাতিরঝিল,রক্ষণাবেক্ষণ,প্রকল্প
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close