নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

পৌর মেয়রদের সঙ্গে মতবিনিময়

প্রতিটি পৌরসভাকে স্বাবলম্বী হতে হবে : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

সামষ্টিক উন্নতির স্বার্থে দেশের পৌরসভাগুলোকে নিজেদের আয়ে স্বাবলম্বী হতে হবে। এ লক্ষ্যে মেয়রদেরকে বহুমুখী কর্মপন্থা নির্ধারণে উদ্যোগী হতে হবে। সরকার টাকা দেবে এমন মনোবৃত্তির উপর পৌরসভা গড়ে উঠেনি। অনুমোদন দেওয়ার পূর্বশর্তই ছিল নিজেদের আয়ে চলবে। তাই বেতন ভাতার জন্য কর্মচারীরা রাস্তায় নামবে, বিক্ষোভ করবে—এটা হতে পারে না। তারপরও দুর্বল পৌরসভাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে স্বাবলম্বী করার ব্যাপারে সরকারের সহযোগিতাও প্রসারিত থাকবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম।

রোববার সকালে রাজধানীর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ৩২৮টি পৌরসভার মেয়রের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

সভার শুরুতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব হেলাল উদ্দিন আহমেদ মেয়রদের উদ্দেশে স্বাগত বক্তব্য দেন। পরে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মেয়রদের মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে সভার মূল কাজ শুরু করেন। মতবিনিময়ে মন্ত্রীকেই মডারেটরের ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে।

মতবিনিময়ের শুরুতে বাংলাদেশ পৌরসভা সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র রকিফুল ইসলাম কতোয়াল মেয়রদের পক্ষ থেকে স্বাগত বক্তব্য দেন। পরে সংগঠনের সভাপতি ও নীলফামারী পৌরসভার মেয়র দেওয়ান আহমেদ কামাল নিজেদের দাবিসম্বলিত একটি লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন।

লিখিত দাবি উপস্থাপনে তারা বলেন, পৌরসভার আয় বাড়াতে ভূমি কর ২% থেকে বাড়িয়ে ১০% করা, রেজিস্ট্রি বাবদ ২%-এর পরিবর্তে ৪%, জন্ম নিবন্ধন ফি ও টেন্ডার সিডিউল বিক্রির প্রাপ্ত অর্থ পৌর ফান্ডে জমা দেওয়া যেতে পারে। এছাড়া ইমারত নির্মাণ ও পুনর্নির্মাণ বাবদ ফি ২০০৯ সালের আইন অনুযায়ী পৌরসভা পাওয়ার কথা থাকলেও ৭ তলার উপরে কোনো ভবন তৈরি করা হলে তার ফি চলে যায় ডিসি অফিসের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে। এর বাইরে ব্যক্তিগত গাড়ির লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষমতা ছেড়ে উপস্থিত অনেক মেয়র সম্পূরক বক্তব্যও রাখেন।

পৌরসভা যেহেতু একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান তাই পরিকল্পিত নগরায়নের স্বার্থে পৌর এলাকাধীন সরকারি খাস ও অর্পিত জমি, পুকুর, জলাশয় ও অন্যান্য স্থানীয় সম্পদের ব্যবস্থাপনা, উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ পৌরসভার কাছে ন্যস্ত করা এবং পৌরসভার ভেতরে জেলা পরিষদের জমি, মার্কেট বা খালি জায়গা পৌরসভার অধীনে দেওয়ার দাবিও তোলেন তারা।

উপস্থিত মেয়রদের বক্তব্য শোনার পর স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সবার উদ্দেশে সমাপনী বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি বলেন, মানুষকে সেবা দিয়ে অর্থ আদায় করার সক্ষমতা অর্জন করাই হবে পৌরসভাগুলোর একমাত্র উদ্দেশ্য। মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশি অর্থশালী হয়েছে, একইভাবে মানুষের মাঝে আঞ্চলিকতার টান এবং সর্বোপুরি দেশপ্রেমও গড়ে উঠেছে। এখন প্রয়োজন সঠিক সেবা দিয়ে মানুষকে কর দিতে উদ্বুদ্ধ করা। কিন্তু অনেকে মনে করেন, জনগণ থেকে ট্যাক্স নিলে সে পুনরায় আর ভোট দেবে না। এমন চিন্তা করা কখনোই ঠিক না। কারণ, মানুষকে ২০০ টাকার বিনিময়ে দুই হাজার টাকার সুবিধা দিলে মানুষ অবশ্যই এতে সাড়া দেবে।

মো: তাজুল ইসলাম আরো বলেন, নতুন কিছু উদ্ভাবনী চিন্তা করতে হবে, সেবার মান বাড়াতে হবে, তবেই আপনারা জনগণের কাছে অধিক জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য হবেন। গতানুগতিকতা বাদ দিয়ে সেবার মানসিকতা গড়তে পারলে, তাছাড়া অঞ্চলভিত্তিক আয়বর্ধক কর্মসূচি বাড়াতে পারলে পৌরসভাগুলো নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পারবে।

আগত মেয়ররা মন্ত্রীর সঙ্গে এ ধরণের মতবিনিময়কে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটি একটি ভালো উদ্যোগ। আমরা ইতোপূর্বে এমনটা দেখিনি। সম্মিলিতভাবে দেশের সব মেয়রকে একজায়গায় করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় একটি উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মো. তাজুল ইসলাম,স্থানীয় সরকারমন্ত্রী,পৌরসভা,মতবিনিময়
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close