স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক
রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে সহযোগিতার আশ্বাস ভারতের
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সপ্তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার দিল্লিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাংলাদেশের ১৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
বৈঠকে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের নিরাপদে ও দ্রুত স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে ভারত সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
২০১৭ সাল থেকে চার কিস্তিতে ভারত সরকার বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নাগরিকদের মানবিক সহযোগিতা দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
বৈঠকের শুরুতে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ভারতের সদ্য প্রয়াত সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ায় ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নমূলক কাজে ভারত সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
উভয় মন্ত্রী বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, যেটি ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় থেকে শুরু হয়েছিল তা স্মরণ করেন এবং তা আরো বাড়বে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
দু’দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, ভাষা, গণতান্ত্রিক বৈশিষ্ট্য, ধর্ম নিরপেক্ষতা, উন্নয়ন সহযোগিতা ও অন্যান্য সব বিষয়ে গভীর মিল রয়েছে এবং দুই দেশের সুপ্রতিবেশিমূলক সম্পর্ক পৃথিবীর মধ্যে এক অনন্য দৃষ্টান্ত বলে তারা মনে করেন।
নিরাপত্তা এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনাসহ সব বিষয়ে দু’দেশ অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে বলে মন্ত্রীরা সভায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।
বৈঠকে কার্যকর সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় তাদের প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং এ উদ্দেশ্যে দুই দেশের সীমান্তরক্ষা বাহিনীর পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ করার উপর গুরুত্ব দেন। বাংলাদেশের সীমানা/ভূমি ব্যবহার করে কোনো সন্ত্রাসী, জঙ্গি, ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী যাতে ভারতসহ অন্য কোনো দেশের ক্ষতি সাধন করতে না পারে সে বিষয়ে বাংলাদেশের গৃহীত নীতির ভূয়সী প্রশংসা করেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমনের প্রয়োজনীয়তার কথা দুই মন্ত্রী পুনর্ব্যক্ত করেন। সভায় মাদকপাচার ও চোরাচালান প্রতিরোধে উভয় দেশ যৌথভাবে কাজ করবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ ও ভারতের পুলিশ বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতার বিষয়ে উভয় পক্ষ সম্মত হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সভা শেষে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে বাংলাদেশ ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানান বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
পিডিএসও/হেলাল