reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২০ জুলাই, ২০১৯

‘সরল বিশ্বাসের সঙ্গে ‌‘দুর্নীতি’ শব্দটি কীভাবে এলো’

সরল বিশ্বাসের সঙ্গে ‌‘দুর্নীতি’ শব্দটি কীভাবে এলো, তা জানেন না বলে মন্তব্য করেছেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ আয়োজিত দুর্নীতি দমনে আইনজীবী এবং বিচার বিভাগের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভায় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

‘সরল বিশ্বাস’-এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, ‘এ ব্যাপারে আমার উত্তর একেবারে সহজ। একটি প্রশ্নের বিপরীতে আমি যে উত্তরটি দিয়েছিলাম, সেটির ভিডিও ক্লিপ আপনাদের কাছে আছে। সেখানে আমি দুর্নীতি শব্দ উচ্চারণ করিনি। আপনারা দেখতে পারেন। দুর্নীতি শব্দটি কীভাবে আসলো আই হ্যাভ নো আইডিয়া।’

দুর্নীতি শব্দটি যারা এনেছেন সেটা তাদের দায় জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমার দায় নেই মোটেও। আমি কোনো ব্যাখ্যা দিতে প্রস্তুত নই। কারণ আপনারা আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন আমি বিষয়টি পরিষ্কার করেছি।’

এর আগে গত ১৮ জুলাই ডিসি সম্মেলনের শেষ দিনে ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘সিআরপিসি (প্যানাল কোড) অনুযায়ী, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যদি সরল বিশ্বাসে কোনো দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন সেটি অপরাধ বলে গণ্য হবে না। সেটিকে বড় করে সমস্যা মনে করার কথা নয়। তবে সরল বিশ্বাস যেন সরল বিশ্বাসই থাকে, তা নিশ্চিত হতে হবে।’‘আমাদের উদ্দেশ্য মামলা করা নয়, দুর্নীতি প্রতিরোধ করা। দমন তার পরে’ আরও যোগ করেন তিনি।

কিন্তু তার এ বক্তব্য বিকৃত করে পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। আদতে দুদক চেয়ারম্যান সরল বিশ্বাসের সঙ্গে দুর্নীতির সম্পর্কের কোনো কথাই বলেননি। এ প্রসঙ্গেই আজ বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন ইকবাল মাহমুদ।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘অনেকেই বলেন সরকারদলীয় মন্ত্রী-এমপিদের কিছু করা হয় না। আমার জানা মতে, আন্ডার প্রসিকিউশন, আন্ডার ইনভেস্টিগেশনের নামে ইনকোয়ারিতে ১০-১৫ জন রয়েছেন সরকারদলীয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এক দলে রয়েছেন ১৫ জন, আরেক দলে রয়েছেন ১২ জন, আরেক দলের ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ইনকোয়ারিতে আছেন প্রায় ২৫ জন। এ ছাড়া ঊর্ধ্বতন আমলা থেকে শুরু করে জয়েন সেক্রেটারি পর্যন্ত প্রায় ১৫ জন আছেন। ইনভেস্টিগেশনের সময় তথ্য প্রকাশ হলে সেটি বিব্রতকর হয়ে পড়ে। সেজন্য সব তথ্য জানিয়ে দেওয়া একটু অসুবিধার বিষয়। এরপরও কীভাবে যেন সেই তথ্য পাচার হয়ে যায়। সেটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ, সেই দায় আমার।’

তিনি আরও বলেন, ‘দুদক আকাশ থেকে উড়ে আসেনি। এখানে যারা কাজ করেন, তারা কিন্তু বিদেশ থেকে আসেনি। আমরা সবাই এই সমাজের মানুষ। আমরা সবাই এই মাটির সন্তান। আমরা এই সমাজেরই অংশ। সমাজের অন্যান্য জায়গায় যা হয়,আমার এখানে তা হয় না— কথাটা ঠিক নয়। ছোট গাছ উপড়ে ফেলার যতটা সহজ, বট গাছ উপড়ে ফেলাটা কঠিন। তাই বলে যে, আমরা বট গাছ ধরছি না তা নয়।’

ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘দুদক আইন যারা করেছেন, তারাও যথেষ্ট চিন্তা-ভাবনা করেই করেছেন। আমার বলতে দ্বিধা নেই এমন কোনও নথি আমি পাইনি যেখানে ফলস পাওয়া যায় না। এখন আপনি যদি বলেন অ্যাকশন নিন। তাহলে আমার ৪৭৪ জন স্টাফের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নিতে হবে। তাহলে তো আর প্রতিষ্ঠান থাকবে না।’

সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি না হয় সেই বিবেচনায় আপনারা নিউজ করবেন। কারণ প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রের, সরকারের নয়। ব্যক্তির ক্ষতি হলে অসুবিধা নেই। আমাদের ব্যর্থতা আছে। সে ব্যর্থতা কাটানোর জন্য কী করা যায় সেটা আপনারা বলুন। সবার সম্মিলিত প্রয়াস ছাড়া দুর্নীতি দমন সম্ভব না।’

হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের সভাপতি মনজিল মোরসেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম, বিচাপতি মো. নিজামুল হক ও সাবেক আইন মন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম।

পিডিএসও/রি.মা

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সরল বিশ্বাস,দুর্নীতি,দুদক চেয়ারম্যান
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close