নিজস্ব প্রতিবেদক

  ৩১ মে, ২০১৯

সড়ক, ট্রেন ও নৌপথে ঈদযাত্রা

আজ স্টেশনে ভিড় বাড়বে

ঈদের আর মাত্র ৩ দিন বাকি। তাই আর এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করতে চাচ্ছে না কেউই। এরই মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে অফিস থেকে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছেন অনেকেই। বিশেষ করে শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী ও ব্যাচলররা রাজধানী ছেড়েছেন। আর যারা পরিবার নিয়ে বাড়ি ফিরবেন তাদের অনেকেই আজ ঢাকা ছাড়বেন। তাই সড়ক, ট্রেন ও নৌপথের টার্মিনালগুলোতে ভিড় বাড়বে ঘরমুখো মানুষের।

গতকাল নগরীর বিভিন্ন টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাড়ি ছুটছে মানুষ। সাপ্তাহিক ছুটির দুই দিনের মুখে টার্মিনালমুখী ছিল হাজার হাজার মানুষ। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে অনেকেই এখন ঢাকা ছাড়ছেন। ফলে রাজধানীর আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল ও কমলাপুর রেলস্টেশনে স্বাভাবিক দিনের চেয়ে ভিড় ছিল অনেক বেশি। অবশ্য এখনো সড়ক ও রেলপথে উপচেপড়া ভিড় সৃষ্টি হয়নি। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, আগামী সোমবার দুপুর থেকে সড়কপথে ভিড় কয়েকগুণ বাড়বে। তবে নৌপথে প্রচ- ভিড় দেখা গেছে। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের পন্টুনে পা ফেলার জায়গা ছিল না। যাত্রীদের কারো কাধে ব্যাগ, কারো হাতে লাগেজ কিংবা সুটকেস। যেন কয়েক দিনের প্রস্তুতি নিয়ে তারা ছুটছেন নাড়ির টানে, শ্যামল প্রকৃতির টানে। তবে প্রিয়জনের সান্নিধ্য পাওয়ার আনন্দ ছিল সবার চোখে-মুখে।

অবশ্য বাড়ি যাওয়ার পাশাপাশি ঈদের পর ফিরে আসা নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন যাত্রীরা। যারা আগাম টিকিট কাটেননি তারা বাড়ি যাওয়া-না যাওয়া নিয়ে দোলাচলে পড়েছেন। অবশ্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘ঈদযাত্রা নিয়ে আমার কোনো শঙ্কা নেই। শঙ্কা, উদ্বেগ ও আশঙ্কা যা ছিল সেটা কেটে গেছে। রাস্তায় সমস্যা নেই, সমস্যা শুধু যানবাহনের শৃঙ্খলায়। যানবাহনে শৃঙ্খলা এলে আমার মনে হয় যানজট হবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘এবার একটা সমস্যা হবে গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর সড়কে। এ রাস্তায় বিআরটিএ’র কাজ চলছে। আমি সেখানে গাজীপুরের মেয়রকে অনুরোধ করেছি, তিনি ঈদে সেখানে ৩০০ স্বেচ্ছাসেবক নিযুক্ত করবেন। সেখানে একটু অস্বস্তি হবে। এই অংশ ছাড়া বাংলাদেশের আর কোথাও সমস্যা হবে না।’

গতকাল দুপুরের পর থেকে যাত্রীবোঝাই বাস ছাড়তে থাকে গাবতলী, সায়েদাবাদ ও মহাখালী আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে। বিকালে গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, আগের দুই দিনের চেয়ে গতকাল যাত্রীর চাপ অনেক বেশি। বেশির ভাগ বাস পূর্বনির্ধারিত সময়ে ছেড়ে গেলেও আগেভাগে টার্মিনালে এসে হাজির হন যাত্রীরা। এসব অপেক্ষমাণ যাত্রীর সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ঈদের বেশ কয়েক দিন আগেই তারা বাড়ি যাচ্ছেন শুধু ভয়াবহ ভিড় আর যানজট থেকে রক্ষা পেতে।

বাস ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব আবু রায়হান বলেন, ৩ ও ৪ জুন বাদে ঈদযাত্রায় এবার চাপ হওয়ার সম্ভাবনা কম আছে। এ দুই দিন টিকিটের চাপও বেশি ছিল। তবে আশা করছি সড়কের কিছুটা উন্নতি হওয়ায় ভোগান্তি কম হবে।

সড়ক ও রেলপথের চেয়ে নৌপথে তুলনামূলক বেশি ভিড় ছিল গতকাল। সন্ধ্যায় দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটের লঞ্চ যাত্রীবোঝাই হয়ে ছেড়ে গেছে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে। কয়েকজন যাত্রী জানালেন, ভিড় বেড়েছে তবে উপচেপড়া ভিড় এখনো হয়নি। সেই ভিড়ের আগেই ঢাকা ছাড়তে এই আগাম যাত্রা তাদের। এদিকে সকাল থেকে একের পর এক ছেড়ে যায় চাঁদপুর, ফরিদপুরসহ কাছাকাছি দূরত্বের লঞ্চগুলো। এসব লঞ্চে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। বরিশাল অঞ্চলের তুলনায় অপেক্ষাকৃত ছোট এসব লঞ্চের ছাদে যাত্রীদের ভ্রমণ করতে দেখা গেছে। যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছোট লঞ্চগুলোর জন্য আগাম টিকিট লাগে না। ঘাটে এসেই টিকিট পাওয়া যায়। অনেক ক্ষেত্রে লঞ্চেই ভাড়া নেওয়া হয়। ফলে যাত্রীদের নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়।

এদিকে ট্রেনের আগাম টিকিট নেয়া যাত্রীদের ঈদযাত্রা শুরু হবে আজ শুক্রবার। কিন্তু আগেই গতকাল ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে কমলাপুর রেলস্টেশনে। ট্রেনে চলতি টিকিটে হাজার হাজার যাত্রী গতকাল ঢাকা ছেড়েছেন। কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়ার সময় ট্রেনের ছাদে যাত্রী না উঠলেও রাজধানীর উপকণ্ঠ টঙ্গী ও জয়দেবপুর স্টেশন থেকে হাজার হাজার যাত্রী ছাদে চেপেছেন। জয়দেবপুর ও টঙ্গী স্টেশন থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে কমলাপুর রেলস্টেশনকে।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ঈদযাত্রা,সড়ক,ট্রেন,নৌপথ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close