হাসান ইমন

  ২০ মে, ২০১৯

সড়কপথে ঈদযাত্রা

সুখবরের সঙ্গে থাকছে শঙ্কাও

আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষ সড়কপথে বড় ধরনের দুর্ভোগ ছাড়া যাতায়াত করতে পারবে—এমন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিশেষত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের তিনটি সেতু খুলে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও গাজীপুর-কালিয়াকৈর সড়কে ভোগান্তির শঙ্কা রয়ে গেছে। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, সব শঙ্কা কাটিয়ে স্বস্তিকর হবে এবারের ঈদযাত্রা।

ধারণা করা হচ্ছে, এবার ঈদে লক্ষাধিক লোক রাজধানী ছাড়বে। এ ছাড়া পাশের গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জসহ দেড় কোটি মানুষ ঈদ করতে দেশের বিভিন্ন স্থানে রওনা দেবে। তাদের এই যাত্রা শুরু হতে পারে ৩০ মে বৃহস্পতিবার থেকে। এ যাত্রা শুরু হচ্ছে ঝড়-বৃষ্টির মাসে। এমনিতেই ঈদের সময় সড়ক-মহাসড়কে যানবাহনের বাড়তি চাপ থাকে। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এলোমেলো হয়ে যায়। তার ওপর রয়েছে মহাসড়কের বেহাল দশা। এসব রাস্তাঘাট মেরামত ও চলাচল উপযোগী না করলে যাত্রীদের অশেষ দুর্ভোগ পোহাতে হবে। তবে আশার বাণীও কম নয়।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক : মেঘনা ও গোমতী সেতু সংস্কারের কারণে এ সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট নিয়মিত ব্যাপার ছিল। এ রুটে সাধারণত ৬ ঘণ্টা সময় লাগলেও এখন তা হয়ে দাঁড়িয়েছে ১০ ঘণ্টায়। তবে এবার সড়কপথে ঈদযাত্রায় সবচেয়ে বড় স্বস্তির খবর হলো মেঘনা আর গোমতী সেতুর উদ্বোধন। সব কিছু ঠিক থাকলে ২৫ মে খুলে দেওয়া হবে সেতু দুটি। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গতি আসবে, কাটবে স্থবিরতা। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, এরই মধ্যে ৯৯ শতাংশ নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। ২৫ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করবেন। এবার এই রুটে যানজট থাকবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক : দেশের ব্যস্ত সড়কগুলোর মধ্যে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অন্যতম। ২০১৬ সালে দুই লেনের মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণের প্রকল্প হাতে নেয় সরকার; যা ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এ প্রকল্পে নতুন করে ১২টি আন্ডারপাস, দুটি ওভারপাস ও দুটি সার্ভিস লেন যুক্ত হওয়ায় কয়েক দফা বেড়েছে সময়। যার কাজ শেষের পথে। তবে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন হওয়ার কথা থাকলেও বাদ সাধতে পারে হাঁটুভাঙ্গা, ভাতকুড়া, দেওয়াহাট, জামুর্কিবাজার, করটিয়া বাইপাস কিংবা নারিন্দা মোড়। ঈদযাত্রার আগে এসব এলাকার খানাখন্দ সংস্কার না হলে হতে পারে ভোগান্তি। তবে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বিভিন্ন ব্যবস্থার কথা জানায় প্রশাসন ও প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। জয়দেবপুর-এলেঙ্গা ফোর লেন প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার অমিত কুমার চক্রবর্তী বলেন, টাঙ্গাইল অংশে তিনটি আন্ডারপাসের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ঈদে সেগুলো জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

এদিকে, গাজীপুর-কালিয়াকৈর সড়কেও দুর্ভোগের শঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া উন্নয়ন বিড়ম্বনায় বেশ ভুগতে হতে পারে ঢাকা থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত এলাকায়। সেক্ষেত্রে বিপাকে পড়বেন ময়মনসিংহ রুটের যাত্রীরা। ভুলতা-গাউছিয়া ওভারপাস খুলে দেওয়ায় এবার আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে। সেক্ষেত্রে স্বাচ্ছন্দ্য হবে ওই এলাকায় চলাচল। অন্যদিকে ঢাকা-মাওয়া, ঢাকা-পাটুরিয়া রুটেও চলছে সড়ক সংস্কারের কাজ। এতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামীদের ঈদযাত্রায় ভোগান্তি চরমে উঠতে পারে বলে ধারণা পরিবহন ব্যবসায়ীদের।

এ প্রসঙ্গে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের এইচডিএম বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, সড়কের চিত্র গত বছরের চেয়ে ভালো। ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কের তিনটি সেতু ও জয়দেবপুর থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত আন্ডারপাসসহ অন্যান্য সড়কের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। এতে যানজটের আশঙ্কা গতবারের চেয়ে অনেকটা কম হবে। তবে এখনো কত শতাংশ সড়ক খারাপ বা ভালো এ রিপোর্ট এখন পর্যন্ত আসেনি।

এদিকে, গতকাল সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, এবার ঈদযাত্রা অনেক স্বস্তিদায়ক হবে। অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এবার পরিস্থিতি ভালো।

তিনি বলেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের জয়দেবপুর থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত চারটি আন্ডারপাস নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের দ্বিতীয় মেঘনা ও গোমতী সেতুর ৯৯ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ২৫ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রকল্পগুলোর শুভ উদ্বোধন করবেন। উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সম্পন্ন হওয়ায় ঈদযাত্রায় দুর্ভোগ হবে না।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ঈদযাত্রা,সড়কপথ,সুখবর,শঙ্কা,ভোগান্তি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close