জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে জনমত গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার বিকেলে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান। গত ২১ এপ্রিল থেকে তিন দিনের ব্রুনাই সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এই সংবাদ সম্মেলন করছেন।

বক্তব্যের শুরুতে শেখ হাসিনা গত ২১ এপ্রিল শ্রীলঙ্কায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিমের নাতি জায়ান চৌধুরীসহ (৮) সবাইকে স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, ‘এই বোমা হামলায় আমার ফুফাতো ভাই শেখ সেলিমের নাতি জায়ন চৌধুরী নিহত হয়েছে। জায়ানের বাবা মশিউল হক চৌধুরী গুরুতর আহত অবস্থায় শ্রীলঙ্কার হসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমি নিহতদের আত্মার মাগফেরাত এবং শান্তি কামনা করছি। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ব্রনাই বিমানবন্দরে নেমে বোমা হামলার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারি। সঙ্গে সঙ্গে আমি এই নৃশংস হামলার নিন্দা জানিয়ে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীকে শোকবার্তা পাঠাই।’

তিনি বলেন, ‘আমি এই কাপুরোষিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে জনমত সৃষ্টি ও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার কোনও শঙ্কা নেই, এমন কথা বলা যাবে না। কারণ জঙ্গিবাদ এখন আন্তর্জাতিক বিষয় হয়ে গেছে। তবে জঙ্গিবাদ নিয়ে আমরা সজাগ রয়েছি।

এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নিয়ে সব সময় উদ্বেগ থাকবেই। শান্তিপূর্ণ নিউজিল্যান্ডেও নৃশংস হামলা সম্ভব হয়েছে। আর বাংলাদেশে তো জঙ্গিবাদ লেগেই আছে। এই সন্ত্রাসী হামলা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে এদেশে শুরু হয়েছে। এরপর বিএনপি-জামায়াত ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। নির্বাচন ঠেকাতে তারা ২০১৩ সালের শেষ থেকে শুরু করে ২০১৪, ২০১৫ সালে অগ্নিসন্ত্রাস করে বহু মানুষ হত্যা করেছে। সর্বশেষ এই অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘জঙ্গিবাদ নিয়ে আমরা সজাগ রয়েছি। হলি আর্টিজানে হামলার পর থেকে আমাদের অবস্থানের কারণেই জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ব্রুনাই থেকে এসে গতকাল বৃহস্পতিবারও আমি সমস্ত সংস্থার প্রধানদের নিয়ে রাত পর্যন্ত বৈঠক করেছি। কিন্তু শুধু নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে জঙ্গিবাদ মোকাবেলা করা সম্ভব হবে না। এজন্যই বক্তব্যের শুরুতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে এর বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শ্রীলঙ্কাতে বোমা হামলায় উচ্চবিত্তরা জড়িত। তারা কেন জঙ্গিবাদে, আমার বুঝে আসে না। তারা আসলে এটা করে কি পাচ্ছে? নিজেরাও মরছে, অন্যদের ক্ষতি করছে। এজন্য বলছি, জঙ্গিদের কোনও দেশ নেই, ধর্ম নেই।’

লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী তার ব্রুনাই সফরের সফলতা ও বিভিন্ন বিষয়ে চুক্তির বিস্তারিত তুলে ধরেন। পিডিএসও/রি.মা