নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৪ মার্চ, ২০১৯

রাজধানীতে এবারও জলাবদ্ধতার শঙ্কা!

প্রতি বছরই জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় রাজধানীবাসীকে। একটু বৃষ্টিতেই বড় বড় রাস্তার পাশাপাশি অলিগলিতেও দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। ভারী বর্ষণে ছন্দপতন হয় রাজধানীবাসীর স্বাভাবিক চলাচলে। আসন্ন বর্ষা মৌসুমেও জলাবদ্ধতার জোর আশঙ্কা রয়েছে রাজধানীতে।

মূলত নগরীর পানি নিষ্কাশন পথগুলো আবর্জনায় ভরাট হয়ে আছে। ড্রেনেজ লাইনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করায় সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় সব রাস্তাঘাট। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভারী বৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিকভাবে পানি ধারণের জন্য নগরীতে উপযুক্ত জলাধার নেই। সেই সঙ্গে পাম্পগুলোর ভারী বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের ক্ষমতাও সীমিত। ফলে এবারও ঢাকার অনেক স্থানে জলাবদ্ধতা থাকবে।

রাজধানীতে বৃষ্টি হলেই প্রতি বছর বেশি জলাবদ্ধতা দেখা যায় মিরপুর, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, গ্রিনরোড, কাঁঠালবাগান, কারওয়ানবাজার, তেজকুনিপাড়া, তেজতুরীবাজার, গার্ডেন রোড, ধানমন্ডি ২৭ নম্বর রোড, শান্তিনগর, মালিবাগ, মৌচাক, মতিঝিল, আরামবাগ, পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোড, উমেশ দত্ত রোড, বংশাল রোড, টিকাটুলী, মুগদা, খিলক্ষেত ও বঙ্গভবন এলাকায়।

জানা গেছে, রাজধানীতে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের জন্য সাড়ে আট কিলোমিটার বক্স কালভার্ট এবং ৩৫০ কিলোমিটার স্টর্ম সুয়ারেজ লাইন রয়েছে। এর মধ্যে বক্স কালভার্ট ও ড্রেন দেখাশোনার দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার।

এছাড়া দুই সিটি করপোরেশনের আওতায় ড্রেন রয়েছে প্রায় ২ হাজার ৪০০ কিলোমিটার এবং প্রায় ৪০০ কিলোমিটার আছে ওয়াসার। বৃষ্টির পানি এই দুই মাধ্যমে বিভিন্ন জলাশয়, খাল বা নদীতে প্রবাহিত হয়। প্রতি বর্ষা মৌসুম শেষে ৮০ শতাংশ বক্স কালভার্ট ও স্টর্ম সুয়ারেজ লাইন ভরাট হয়ে যায়।

নিয়মিত পরিষ্কার না করায় ড্রেনগুলো ময়লা-আবর্জনায় ভর্তি হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশন বিঘিœত হয়। ফলে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। সেই ধারণা থেকে এবারও রাজধানীতে জলবদ্ধতার আশঙ্কা রয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বলেন, ডিএসসিসি এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক নির্মাণ, নর্দমা, জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ নির্মাণ ও সংস্কার, ফুটপাত নির্মাণ ও প্রশস্তকরণে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ কাজ শেষ হলে ডিএসসিসির বাসিন্দারা স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে পারবেন। ড্রেনগুলো প্রশস্ত করা হলে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা কিছুটা হলেও নিরসন হবে।

জানা গেছে, ঢাকার জলাবদ্ধতাপ্রবণ এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য চলতি অর্থবছরে তিন সংস্থা বড় বাজেটের কাজ শুরু করছে। জলাবদ্ধতারোধে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, গত বছর বর্ষা মৌসুমের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে চলতি বছরে ওয়াসার কাজের গতি বাড়াতে হবে। তা না হলে এ সমস্যার নিরসন হবে না। অন্যদিকে সিটি করপোরেশন মূলত নতুন লাইন তৈরিতে ব্যস্ত। আগের ড্রেনগুলোর যেসব স্থান ভরাট হয়ে গেছে তা পরিষ্কারের ব্যাপারে তাদের আরো মনোযোগী হতে হবে। এটা করা না হলে জলাবদ্ধতা পিছু ছাড়বে না।

আসন্ন বর্ষায় জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে করণীয় ঠিক করতে সম্প্রতি মেয়র আতিকুল ইসলাম খান ডিএনসিসির বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করে বলেছেন, আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি জলবদ্ধতা থেকে কিছুটা হলেও নগরবাসীকে মুক্তি দিতে। যদিও বর্ষা মৌসুম প্রায় চলে এসেছে, এই অল্প সময়ের মধ্যে শর্ট টার্মে কী কী করা যায় তা নিয়ে আমরা আলোচনার মাধ্যমে কাজ করছি।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
জলাবদ্ধতা,রাজধানী,ভারী বর্ষণ,পানি নিষ্কাশন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close