গাজী শাহনেওয়াজ

  ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

কাল উপজেলা নির্বাচনের তফসিল

পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে কাল রোববার। ভোটকেন্দ্র চূড়ান্ত করতে সংশ্লিষ্টদের চিঠি পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চিঠিতে ভোটকেন্দ্রের তালিকা প্রস্তুত করার পাশাপাশি আপত্তি নিষ্পত্তি সাপেক্ষে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তথ্য পাঠাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এদিকে উপজেলা সদরে ইভিএম ব্যবহারের লক্ষ্যে বিধি চূড়ান্ত করছে ইসি। এ পর্যন্ত ইভিএম প্রস্তুত আছে ২৫ হাজারের বেশি। খবর দায়িত্বশীল সূত্রের।

রোববারের পর যাতে সারা দেশে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের কাজ শেষ হয়, সেই লক্ষ্যে গত বৃহস্পতিবার কমিশন থেকে মাঠ অফিসে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সূত্র মতে, সংসদ নির্বাচন ও উপজেলা নির্বাচন দুটি দুই মেয়াদে হলেও কাছাকাছি সময়ে হয়ে আসছে। ফলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির সঙ্গে একত্রে এ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে থাকে কমিশন। অতীতের মতো এবারও একই নিয়ম অনুসরণ করেছে কমিশন। ফলে এই নির্বাচন অনুষ্ঠানের কাজ অনেকটা এগিয়ে রেখেছে কমিশন।

যে কোনো নির্বাচনী কর্মযজ্ঞের মধ্যে নির্বাচনের সামগ্রী কেনাকাটা একটা জটিল প্রক্রিয়া। এরই মধ্যে এ কাজটি সম্পন্ন হয়েছে। এখন ভোটকেন্দ্র ও ভোটার তালিকা প্রণয়নের কাজ শেষ হলেই নির্বাচন নির্বিঘ্নে করতে সক্ষম হবে ইসি। তবে ভোটকেন্দ্র নতুন করে করার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন কমিশনের মাঠ অফিসের কর্মকর্তারা।

তারা জানান, সংসদ নির্বাচনের কেন্দ্রকে ভিত্তি ধরে উপজেলা নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে। সংসদ নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র ৪০ হাজার ১৯৩টি হলেও উপজেলায় এই সংখ্যা কমে আসবে। সারা দেশে ১১টি সিটি করপোরেশন রয়েছে, সেখানকার কেন্দ্রগুলো উপজেলার সংখ্যা থেকে বাদ পড়বে।

সংশ্লিষ্টরা আরো জানান, সংসদ নির্বাচনের তুলনায় ভোটকেন্দ্র কমলেও কক্ষের সংখ্যা বেড়ে যেতে পারে। সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের বিপরীতে কক্ষ ছিল প্রায় ৩ লাখ। এবার উপজেলায় এ সংখ্যা ছাড়িয়ে যেতে পারে। কমিশন থেকে সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্র ও কক্ষ স্থাপনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা ছিল, একটি কক্ষে ৫০০ থেকে ৬০০ ভোটারের বেশি হবে না। সেখানে উপজেলা ভোটে কক্ষপ্রতি ভোটার সংখ্যা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে ৩০০ থেকে ৪০০ জন। এ হিসাবে কেন্দ্র না বাড়লেও কক্ষ বাড়াতে হবে।

সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রের নীতিমালায় বলা ছিল, গড়ে ২ হাজার ৫০০ ভোটারের জন্য একটি করে ভোটকেন্দ্র এবং গড়ে ৬০০ পুরুষ ভোটারের জন্য ও ৫০০ নারী ভোটারের জন্য একটি করে ভোটকক্ষ নির্ধারণ করতে হবে। এখন পর্যন্ত দেশে ভোটার ১০ কোটি ৪১ লাখ ৪২ হাজার ৩৮১ জন। এ ভোটার ধরেই সংসদের ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

এদিকে পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনও সংসদের প্রণীত ভোটার তালিকানুযায়ী হবে। এ বছর নির্বাচনের কারণে ভোটার তালিকা হালনাগাদ না হওয়ায় বিদ্যমান তালিকার আলোকে ভোট হবে। নীতিমালায় বলা আছে, ভোটকেন্দ্র স্থাপনে প্রার্থী এবং ঝুঁকিপূর্ণ কিংবা যোগাযোগ ব্যবস্থা সমুন্নত রেখে কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা করতে হবে। কিন্তু সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুত করা কেন্দ্র অনুযায়ী নির্বাচন হওয়ায় এ সুযোগ কম। একজন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখনো উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়নি। কারা প্রার্থী হবেন, কারা হবেন না, এখনো আমরা জানি না। তবে কমিশনের নির্দেশনা রয়েছে একটি কক্ষে সর্বোচ্চ ৪০০ ভোটারের ব্যবস্থা রাখা যাবে।

এদিকে কাল নির্বাচন কমিশন থেকে এ নির্বাচনে ভোটের তারিখ ঘোষণা তথা তফসিল ঘোষণার সব প্রস্তুতি নেওয়া আছে। ৪৯৩টি উপজেলার মধ্যে সব সদর উপজেলায় ইভিএমে ভোট নেওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে। সেই হিসেবে প্রস্তুত করা হচ্ছে ইভিএম। এরই মধ্যে কমিশনের কাছে ২৫ হাজার ইভিএম এসে পৌঁছেছে। আরো ৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকার ইভিএম প্রকল্পের মধ্যে ৫০০ কোটি টাকা ছাড় পেয়েছে। তিন দফায় ইভিএম কেনা হবে। এসব কেনা ইভিএম দিয়ে উপজেলাসহ অন্য ভোট হবে।

প্রসঙ্গত, ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশে প্রথমবার, ১৯৯০ সালে দ্বিতীয়বার ও ২০০৯ সালে তৃতীয়বারের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হয়। ওই বছর একই দিনে ৪৭৫টি উপজেলায় এ নির্বাচন হয়। আর ২০১৪ সালে ধাপে ধাপে উপজেলা নির্বাচন করা হয়।

এদিকে উপজেলা ও সিটিসহ স্থানীয় স্তরের সব নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের জন্য ইভিএম বিধিমালা সংশোধন করছে ইসি। সংসদ নির্বাচনের আদলে এ বিধি প্রণয়ন করতে চায় ইসি। গত বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত একটি সভা হয়েছে। একই দিন মাঠ অফিসে পাঠানো চিঠিতে স্বাক্ষর করেন নির্বাচন ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয় শাখা-১ এর সহকারী পরিচালক রওশান আরা।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
উপজেলা নির্বাচন,তফসিল,ইসি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close