নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৮

ঢাকা সাজছে নতুনরূপে

ঢাকাকে পরিকল্পিত ও বসবাসের সুন্দর নগরী হিসেবে গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। নতুন এলাকার উন্নয়নে প্রাথমিকভাবে সরকার প্রায় চার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সঙ্গে নতুন যুক্ত হওয়া ৩৬টি ওয়ার্ডের নাগরিকদের স্বার্থে মাস্টারপ্ল্যান তৈরি ও একই সঙ্গে স্বল্পমেয়াদি সম্ভাব্য জরিপও করছে সরকার। গৃহীত এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করলে সম্পূর্ণ পাল্টে যাবে ঢাকার আশপাশের চিত্রও। বলা যায়, নতুন রূপে সাজছে ঢাকা।

সূত্র জানায়, নতুন এসব ওয়ার্ডের সার্বিক উন্নয়নের জন্য ডিএনসিসি প্রাথমিকভাবে প্রথম দফায় ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। অন্যদিকে ডিএসসিসি দুটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে প্রথম প্রকল্পে চারটি ইউনিয়নের জন্য ৭৫০ কোটি টাকা ও দ্বিতীয় পর্যায়ে বাকি চারটি ইউনিয়নের জন্য ৪৫০ কোটি টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ প্রথম প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে। দুই সিটির উন্নয়নে প্রাথমিকভাবেই ব্যয় করা হবে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা।

প্রকল্পে দুই সিটির ছোট-বড় সব রাস্তা নির্মাণ, সড়কবাতি স্থাপন, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতাল নির্মাণ, সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা চালু, সুপেয় পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া ওয়ার্ড কার্যালয় ও আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপন, কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ, পয়োনিষ্কাশনের সুব্যবস্থা করা, খেলার মাঠ ও পার্ক স্থাপন, বর্জ্য শোধনাগারসহ বিভিন্ন স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হবে। মূলত রাজধানীবাসীর মতো সব ধরনের সুবিধা দিতে সংশ্লিষ্ট যা যা প্রয়োজন, তার সবই করবে সরকার। এর মাধ্যমে নতুন যুক্ত হওয়া ওয়ার্ডগুলোকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৯ জুন সরকারের প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস-সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটিতে (নিকার) ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আটটি করে ইউনিয়ন যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে একই বছরের ৩০ জুলাই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে যুক্ত হওয়া ১৬ ইউনিয়নে মোট ৩৬টি নতুন ওয়ার্ড গঠন করে গেজেট প্রকাশ করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। এ নিয়ে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মোট ওয়ার্ডের সংখ্যা দাঁড়ায় ১২৯টিতে।

ডিএসসিসি সূত্র জানায়, গত ১২ জুলাই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ডিএসসিসির অধীনে আটটি ইউনিয়নের সরকারি খাসজমির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, ভূমি মন্ত্রণালয়, রেলওয়ে, সড়ক ও জনপথ অধিদফতর, জেলা প্রশাসক ও সংস্থার সব বিভাগীয় কর্মকর্তা, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী প্রকৌশলীদের নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে বেশ কয়েকটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সূত্র জানায়, ডিএসসিসির সঙ্গে নতুন যুক্ত হওয়া ওয়ার্ডগুলোতে মাস্টারপ্ল্যান তৈরি ও স্বল্পমেয়াদি সম্ভাব্য জরিপ চালানোর জন্য ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং (আইডব্লিউএম) নামে একটি সংস্থাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মো. বিলাল বলেন, নতুন ৮ ইউনিয়নের ১৮টি ওয়ার্ডের উন্নয়নে ইতোমধ্যেই আমরা চারটি ইউনিয়নের জন্য ৭৫০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করেছি। বাকি চারটি ইউনিয়নের সার্বিক উন্নয়ন কর্মকা- বাস্তবায়নে আমরা ৪৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছি। ফলে নতুন এলাকায় বসবাসরত নাগরিকদের প্রাথমিক সেবার উন্নয়নকাজ দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলছে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্যানেল মেয়র আলেয়া সারোয়ার ডেইজি বলেন, ঢাকাকে নতুন রূপে গড়ে তুলতে আমরা বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের আগের এলাকার সঙ্গে নতুন যুক্ত আটটি ইউনিয়নের বর্তমানে ঘোষিত নতুন ১৮টি ওয়ার্ডের সার্বিক উন্নয়নে ইতোমধ্যেই প্রায় ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ডিএনসিসির চারটি ডিপার্টমেন্ট একসঙ্গে কাজ করছে।

এ ছাড়া এলাকায় বিভিন্ন অবকাঠানো নির্মাণ ও পরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য প্রকৌশলসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে সব স্থাপনা নির্মাণ, স্থান নির্বাচন করাসহ প্রাথমিক জরিপ শেষে একটি প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়েছে। সরকারি বা খাসজমির পরিমাণসহ কোথায় কোথায় কোন কোন স্থাপনা নির্মাণ করা হবে তার উল্লেখ করা হয়েছে। এসব উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা গেলে ডিএনসিসির নতুন যুক্ত হওয়া ওয়ার্ডগুলোর চেহারাই পাল্টে যাবে।

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ঢাকা,ডিএসসিসি,ডিএনসিসি,ঢাকা সিটি করপোরেশন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close