নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৬ আগস্ট, ২০১৮

আজ খুলছে সরকারি অফিস

পথে পথে কর্মজীবীদের ভিড়

প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবী মানুষ। তিন দিনের ঈদের ছুটি এবং দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটি শেষে আজ রোববার থেকে সরকারি অফিস, আদালত খুলছে। এদিকে চিরচেনা যানজটের শহর ঢাকা ছিল ভিন্নরূপে। পথঘাট ছিলে একেবারেই ফাঁকা। তবে ঈদের ছুটি শেষে নগরীতে ফিরতে শুরু করেছেন কর্মব্যস্ত মানুষ। কমলাপুর রেলস্টেশন, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এবং বাস টার্মিনালে লক্ষ্য করা গেছে রাজধানী ফেরা যাত্রীদের ভিড়।

গতকাল শনিবার সকালে কমলাপুল রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকায় ফিরছেন মানুষ। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে অধিকাংশ ট্রেন নির্ধারিত সময়ের পরে এসে স্টেশনে পৌঁছায়। এতে ভোগান্তি বেড়েছে যাত্রীদের। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালেও ছিল প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করে ঢাকা ফেরা মানুষের ভিড়। দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা অধিকাংশ লঞ্চেই ছিল অতিরিক্ত যাত্রী। আপনজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পেরে সবার চোখে মুখেই ছিল আনন্দ আর উচ্ছ্বাসের ছাপ। ভোর থেকে সদরঘাটে পৌঁছেছে প্রায় অর্ধশতাধিক লঞ্চ। এর মধ্যে বরিশাল থেকে ১৩টি লঞ্চ এসেছে। কিন্তু ফিরতি যাত্রায় যাত্রীর পরিমাণ কম ছিল বলে জানান কির্তনখোলা-২ লঞ্চের সুপারভাইজার শফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, রোটেশন অনুযায়ী বরিশাল থেকে ১৩টি লঞ্চ ছেড়ে আসলেও তেমন যাত্রী হয়নি। আমাদের লঞ্চে আজ প্রায় ৮০০ লোক এসেছে কিন্তু এই চাপ যখন বাড়বে তখন এর তিনগুণ যাত্রী হবে। আশা করা যাচ্ছে আজ ও আগামীকাল এই চাপ হবে।

ঈদের ছুটি কাটিয়ে বরিশাল থেকে ঢাকা ফিরেছেন শাহজাহান। সঙ্গে মা ও ছোট ভাই। তিনি বলেন, যাওয়ার সময় ভিড় ছিল। আসার সময় ভিড় নাই। অনেক সময় লঞ্চে যাত্রীর কারণে হাঁটার জায়গাও থাকে না, কিন্তু আজ তেমন ভিড় ছিল না। যে যার মতো জায়গা নিয়ে শুয়ে-বসে ঢাকায় ফিরেছে।

অপর এক যাত্রী গোলাম মর্তুজা সপরিবারে ঢাকায় ফিরেছেন পটুয়াখালী থেকে। মোস্তফা বলেন, যে রকম ভিড় হবে ভেবেছিলাম, তা ছিল না। পটুয়াখালী থেকেও বেশি লোক ওঠেনি। আমাদের অনেকেই বাড়ি থেকে আসেনি। অনেকে বেশি ছুটি নিয়ে গেছে। আবার ঢাকায় যারা দিন মজুরের কাজ করে এমন লোকেরা আসবে আরো কয়েক দিন পরে। কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার তাড়াহুড়ো যাদের ছিল, তারা আগেই ঢাকায় পৌঁছেছেন।

রাজধানীর প্রবেশপথ গাবতলীতে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ রাজধানীতে ফিরছেন। ঈদের চতুর্থ দিনে ফেরার যাত্রায় বাস টার্মিনালগুলো দেখে মানুষের ভিড় খুব একটা লক্ষ্য করা যায়নি। তবে যারা ফিরছেন, সবারই তাড়া কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার।

দুপুর পেরিয়ে বিকেল গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের আগমন বাড়তে থাকে। সন্ধ্যার পর এ সংখ্যা আরও বাড়বে বলে কাউন্টারগুলো থেকে বলা হয়। এছাড়া ঢাকায় মানুষের পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে গণপরিবহনেও যাত্রীর চাপ বাড়ছে। সপ্তাহজুড়ে এ চাপ থাকবে বলে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

ফেরার পালায় এখনও মহাসড়কে খুব বেশি যানজট না থাকায় স্বস্তিতে ফিরছেন সাধারণ মানুষ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদুল আজহার ছুটি শেষে রাজধানীতে যাত্রী নিয়ে যানজট ছাড়াই ফিরছে হানিফ, শ্যামলী, এসআর, দেশ ট্রাভেলস, ন্যাশনাল, ডিপজল, পাবনা এক্সপ্রেস, নাবিল, কেআর, টিআর, শাহ ফতেহ আলীসহ ঈদ সার্ভিসের বাসগুলো।

গাইবান্ধা থেকে আল হামরার এসি বাস এসে কল্যাণপুরে থামে দুপুর সাড়ে ১২টায়। বাসটির সুপারভাইজার মনির হোসেন জানান, রাস্তায় বিশেষ যানজট ছিল না। তবে গতি কখনো কখনো কম ছিল। যমুনার টোল প্লাজায় সময় একটু বেশি লেগেছে। এ ছাড়া পথে তেমন সমস্যা হয়নি।

বাসটির গোবিন্দগঞ্জের যাত্রী ফিরোজ মিয়া জানান, স্ত্রী-সন্তান নিয়ে গ্রামে গিয়েছিলাম। মাটির টান অনুভব করেছি। ফিরতে মন চাইছিল না। মনে হচ্ছিল আরো কয়টা দিন থেকে আসি। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। চাকরির সুবাদে ফিরতেই হলো রাজধানীতে।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ঈদ উদযাপন,ঢাকায় ফিরছে মানুষ,ভিড়
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close