মিরপুরে গুপ্তধনের সন্ধান বন্ধ ঘোষণা
রাজধানীর মিরপুরে গুপ্তধনের গুঞ্জনে সব ধরনের খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ ঘোষণা করে দিয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। বাড়িটিতে তালা দিয়ে তালার চাবি ম্যাজিস্ট্রেট তত্ত্বাবধানে নিয়েছেন এবং বাড়িটি পুলিশ হেফাজতে থাকবে। আজ রোববার দুপুরে ঢাকা জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ এ ঘোষণা দেন।
এর আগে গতকাল শনিবার মিরপুর ১০ নম্বর সেকশনের ১৬ নম্বর রোডের ১৬ নম্বরের একতলা বাড়িটি শনিবার সকাল থেকে ২০ জন শ্রমিকের মাধ্যমে উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছিল।
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘গতকাল সাড়ে ৪ ফুট খননের পর বাড়িটির ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা দেখা যায়। এমনিতেই বাড়িটি অনেক পুরাতন। এছাড়া বাড়ির আশেপাশে যেভাবে সাধারণ মানুষ ভিড় জমাচ্ছে তাতেও যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে ঘটতে পারে। সার্বিক বিবেচনা করে আমরা খনন কাজ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাড়িটি বিশেষজ্ঞদের দ্বারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেয়া হবে। বিশেষজ্ঞরা বিষয়টি নিশ্চিত করলে আবারও উদ্ধার কাজ শুরু করা হবে। সে পর্যন্ত বাড়িটি পুলিশ হেফাজতে থাকবে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘ বাড়িটিতে গুপ্তধন রয়েছে এমন সংবাদ এলাকাবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ায় সকলের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছিল। এ কারণে পুলিশের সহায়তা প্রাথমিকভাবে গুপ্তধন উদ্ধারে কাজ শুরু করা হয়। যেহেতু চার ফিট মাটি খনন করার পরও কিছু পাওয়ায় যায়নি, সে কারণে এখন বিশেষজ্ঞদের পারামর্শ নেয়া প্রয়োজন।’
মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দাদন ফকির জানান, ‘দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসে বললেন যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া আর কোনো খনন কাজ হবে এবং তিনি আপাতত খনন কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। বাড়িটিতে তালা মেরে চাবি ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে থাকবে এবং বাড়িটি পুলিশ হেফাজতে থাকবে।’
সরেজমিনে দেখা যায়, আজকেও গুপ্তধন খনন কাজ দেখতে ভিড় জমিয়েছেন উৎসুক জনতা। তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে এবং দাঁড়িয়ে একনজর গুপ্তধন দেখার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন।
জানা যায়, পাকিস্তান আমলে বাড়িটি ছাড়ার সময় মালিক দিলদাশ খান প্রায় দুই মণ স্বর্ণ পুতে রেখে গেছেন বলে সহকর্মীর কাছে শুনেছেন পাকিস্তানে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিক সৈয়দ আলম। দু’বছর আগে দেশে এসে বাড়ির একটি রুমও ভাড়া নিয়েছিলেন সৈয়দ আলম। কিন্তু অন্য ভাড়াটিয়ার কারণে স্বর্ণ উত্তোলন প্রচেষ্টা সফল হয়নি তার। পরে খননে অনুমতি চান বাড়ির বর্তমান মালিক মনিরুল। তাকে অনুমতি না দিলে জটিলতা তৈরি হওয়ায়, একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে খননের সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ।
অন্যদিকে, এই বাড়ির বর্তমান মালিক ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম বলেন, আমি গত আট বছর আগে এই বাড়িটি ক্রয় করেছি। বর্তমানে দুইজন কেয়ারটেকার এই বাড়িতে বাস করেন। মিরপুর পল্লবীতে আমার আরেকটি বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করি।
পিডিএসও/তাজ