‘নৌকা ঠেকানো কেন, অপরাধটা কী?’
নৌকায় ভোট দিয়ে মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেকেই নৌকা ঠেকাতে চান, নৌকা ঠেকানো কেন, অপরাধটা কী?’
শনিবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘নৌকায় ভোট দিয়ে মানুষ ভাষার অধিকার পেয়েছে, স্বাধীনতা পেয়েছে, উন্নয়নশীল দেশে উন্নিত হতে পেরেছে বাংলাদেশ। তাহলে কি নৌকা ঠেকিয়ে রাজাকার, যোদ্ধাপরাধীদের আবার ক্ষমতায় আনতে চান? আমি জানি, যারা সামরিক শাসকদের উচ্ছিষ্ট খেয়ে বড় হয়েছে তাদের মুখেই এ কথা মানায়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই বলেন, গণতন্ত্র আনবে, কোথায়? স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স আমরা নিয়ে এসেছি। আমাদের শাসনামলে ছয় হাজারের বেশি স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়েছে। গণতন্ত্র না থাকলে মানুষ নির্বাচনে ভোট দিল কীভাবে? ২০১৪ সালে বাধা দিয়েছে, উৎখাত করতে পারেনি।’
দেশের প্রবৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের উচ্চ প্রবৃদ্ধির হার কেন-এটাকে অনেকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেন। তারা বলেন, উচ্চ প্রবৃদ্ধি নাকি ভালো না। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি বাড়লে কাদের আঁতে ঘা লাগে, যারা হাড্ডি-কঙ্কালসার মানুষকে দেখিয়ে দেখিয়ে বিদেশ থেকে অর্থ আনে, সম্পদের পাহাড় গড়ে তাদেরই আঁতে ঘা লাগে।’
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সফল উৎক্ষেপণ এবং উন্নয়নসহ দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে এ সংবর্ধনা দেওয়ার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ।
এ সংবর্ধনা জনগণকে উৎসর্গ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “কবিগুরুর ভাষায় বলতে চাই, ‘এ মনিহার আমায় নাহি সাজে।’ আমার সংবর্ধনার প্রয়োজন নেই, আমি জনগণের সেবক। জনগণ কতটুকু পেল সেটাই আমার কাছে সব থেকে বিবেচ্য বিষয়। আজকে যে সংবর্ধনা, এ সংবর্ধনা তো আমার প্রয়োজন নেই। এ সংবর্ধনা আমি উৎসর্গ করছি বাংলার জনগণকে, উৎসর্গ করছি এ দেশের মানুষকে।”
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সকাল থেকেই রাজধানীসহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে জড়ো হয়েছেন দলটির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। ব্যানার এবং ফেস্টুন নিয়ে খণ্ড খণ্ড মিছিলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিভিন্ন ফটকের সামনে অবস্থান নিয়েছেন তারা। সেখানে তল্লাশি পেরিয়ে একে একে ভেতরে প্রবেশ করছেন নেতাকর্মীরা।
এ সময় নেতাকর্মীদের হাতে জাতীয় পতাকা, দলীয় পতাকা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যাতে পুরো অনুষ্ঠানের সময় এটি বর্ণিল সাজে দেখায় সবাইকে। এর আগে গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বর্ণিল আয়োজনের প্রতিশ্রুতি ছিল। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাংস্কৃতিক পরিবেশের মধ্য দিয়ে শুরু হবে সংগঠনটির আনুষ্ঠানিকতা।
আজকের এই অনুষ্ঠান সফল করার জন্য গত ১৫ দিন ধরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কাজ করছেন বলে জানা গেছে। অনুষ্ঠানে ঢাকা ও আশেপাশের প্রায় ৬০ কিলোমিটার মধ্যে যেসব নেতাকর্মী আছেন তারা এসে উপস্থিত হন।
আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতাকর্মীরা যাতে দেশবাসীর মাঝে নৌকা প্রতীকের পক্ষে প্রচারণা চালাতে পারে সে বিষয়ে আজ প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিতে পারেন বলে জানা গেছে।
পিডিএসও/রিহাব