মুফতি মুহাম্মাদ যুবাইর খান

  ০১ জুন, ২০১৮

মুসাফির বা সফরকারী ব্যক্তির রোজা

আজ শুক্রবার পবিত্র মাহে রমজানের ১৫তম দিন। আর মাগফিরাতের দশকের পঞ্চম দিন। আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে এই মাসে প্রত্যেক মুসলমানের ওপর রোজা রাখা ফরজ। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা অনুগ্রহ করে কিছু মানুষের জন্য বেশি কষ্ট হলে রোজা ছাড় দিয়েছেন যে, তারা এ সময়ে রোজা না রেখে অন্য সময়ে তা পূর্ণ করতে পারেন। এর মধ্যে অসুস্থ ও সফররত ব্যক্তি অন্যতম। কারণ কাজের প্রয়োজনে অনেকের ছুটে যেতে হয় এক স্থান থেকে অন্য স্থানে। কখনো কখনো এক দেশ থেকে অন্য দেশে পাড়ি জমাতে হয়। অনেক সময় সফরের কারণে রোজা রাখা খুব কষ্ট হয়ে যায়। এজন্যই আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন, রমজান মাস, এটা সেই মাস যে মাসে কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে, যা বিশ্বমানবতার জন্য পথপ্রদর্শক ও সুস্পষ্ট নিদর্শন এবং হক ও বাতিলের মাঝে সুস্পষ্ট পার্থক্যকারী। কাজেই এখন থেকে যে ব্যক্তি এই মাস পাবে, সে যেন এর úূর্ণ মাস রোজা রাখে। আর যে ব্যক্তি অসুস্থ বা সফরে থাকবে, সে যেন অন্য সময় সমপরিমাণ রোজার সংখ্যা পূর্ণ করে। (সুরা বাকারা : ১৮৫)।

পবিত্র কোরআনের আলোচ্য আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা অসুস্থ ব্যক্তির সঙ্গে সফররত ব্যক্তির ওপর রোজা রাখার বাধ্যবাধকতাকে কিছুটা শিথিল করেছেন। এদের ওপর রোজা রাখা বা না রাখাকে তাদের ইচ্ছা ও পছন্দের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন।

এ থেকে বোঝা যায়, সফরকালে রোজা রাখাটা জরুরি কোনো বিষয় নয়। তবে কোরআন-হাদিসের আলোচনা থেকে এ কথা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, সফরকালে রোজা রাখার বিষয়টিকে ইচ্ছা ও পছন্দের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার কারণ হলো সফরকারীর কষ্ট দূর করা। আর এই ছেড়ে দেওয়া মানে একেবারে ছেড়ে দেওয়া নয়। রমজান মাসে সফর বা অন্য কোনো কারণে যে কয়টি রোজা রাখা সম্ভব হয়নি, রমজানের পর অন্য যেকোনো সুবিধাজনক সময়ে তা আদায় করতে হবে। আর যদি সফরকারী কোনো ব্যক্তি মনে করে, সফরকালে রোজা রাখলেও তার কোনো অসুবিধা হবে না, তাহলে সে রোজা রাখতে পারবে; এবং এটাই হবে তার জন্য অতি উত্তম।

মাসআলা : ক. মুসাফিরের জন্য সফর অবস্থায় রোজা না রাখার সুযোগ আছে। তবে বেশি কষ্ট না হলে রোজা রাখাই উত্তম। আর অস্বাভাবিক কষ্ট হলে রোজা রাখা মাকরুহ। এ অবস্থায় রোজা না রেখে পরে কাজা করে নেবে। (রদ্দুল মুহতার ২/৪২১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৪০৩)।

খ. সফর অবস্থায় নিয়ত করে রোজা রাখা শুরু করলে তা ভাঙা জায়েজ নয়। কেউ ভেঙে ফেললে গোনাহগার হবে। তবে কাফফারা দিতে হবে না। শুধু কাজা করবে। (রদ্দুল মুহতার ২/৪৩১)।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে শরিয়তের বিধানাবলি বুঝে সে অনুযায়ী আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist