না ফেরার দেশে মুক্তামনি
বাবা-মা আর চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেল; বিরল রোগ হেমানজিওমায় আক্রান্ত সাতক্ষীরার শিশু মুক্তামনি তার কষ্টের জীবন ছেড়ে চলে গেল না ফেরার দেশে। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কামারবায়সা গ্রামে বাবা-মায়ের সামনেই বুধবার সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে মৃত্যু হয় ১২ বছরের শিশুটির।
মুক্তামনির বাবা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘গত কয়দিন ধরেই তো অবস্থা খারাপ হচ্ছিল। আজ ভোরে বমি শুরু হলো। একবার পানি খেতে চাইলো। ওর দাদি গেল পানি আনতে। পানি আনতে আনতে সব শেষ।’ মুক্তামনির মৃত্যুতে তার বাড়িতে এখন শুধু কান্নার রোল। মা আসমা খাতুনের কিছু বলার ভাষাও আর নেই।
২০১৭ সালের জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়ে স্বাস্থ্য বিভাগের। প্রথমে স্বাস্থ্য সচিব তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। পরে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
এরপর ১১ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয় তাকে। সেখানে মুক্তামনির চিকিৎসায় গঠিত হয় বোর্ড। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ধরা পড়ে মুক্তামনির হাত রক্তনালীর টিউমারে আক্রান্ত। তারপর মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কয়েক দফা অস্ত্রোপচার করে অপসারণ করা হয় তার হাতের অতিরিক্ত মাংস পিণ্ড।
কয়েক দফা অস্ত্রপাচার শেষে গত বছরের ২২ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এক মাসের ছুটিতে বাড়ি আনা হয় মুক্তামনিকে। এরপর আর ঢামেকে যেতে রাজি হয়নি মুক্তামনি। বাড়িতেই কোনো মতে চলছিল তার চিকিৎসা।
পিডিএসও/হেলাল