হাসান ইমন

  ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

ডিএসসিসির নতুন সেবা

বিদেশে থেকে স্বজনের কবরে দেওয়া যাবে ফুল

৭ দিন আগেই মোবাইলে নোটিফিকেশন চলে যাবে

পিতা-মাতা ও আত্মীয় স্বজনের কেউ মারা গেলে দেশের বাইরে থেকেও কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা যাবে। এছাড়া মৃত্যুবার্ষিকীতে কোরআন খানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করতে পারবেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এসব আয়োজনের জন্য নির্ধারিত দিনের সাত দিন আগে মৃত ব্যক্তির স্বজনের মোবাইলে নোটিফিকেশন চলে যাবে। তবে এর জন্য নির্ধারিত ফি পরিশোধ করতে হবে।

অনলাইনের মাধ্যমে এই নতুন সেবাটি চালু করতে যাচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এছাড়া মৃত্যু সনদ পেতে এখন আর সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে না। অনলাইনে আবেদন করলেই মৃত্যু সনদ পাওয়া যাবে। ডিএসসিসির তিনটি কবরস্থানে দাফন করা মৃত ব্যক্তিদের বিভিন্ন তথ্য নিয়ে একটি ওয়েব পেজ চালু করতে যাচ্ছে সংস্থাটি, যা থেকে এই সেবাটি দেওয়া হবে। মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে মেয়র সাঈদ খোকন কার্যক্রমটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ওই ডাটাবেজে মৃত ব্যক্তির বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত সন্নিবেশিত করা হয়েছে। মারা যাওয়ার তারিখ, দাফনের সময়, মৃত্যুর কারণ এবং ওয়ারিশদের তথ্য সংযুক্ত করা হয়েছে। এসব তথ্য দেখতে হলে প্রথমেই ডিএসসিসির ওই ওয়েব পেজে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্টেশনের জন্য ব্যক্তির নাম, ব্যক্তিগত তথ্য এবং ফোন নম্বর লাগবে। রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে নির্দিষ্ট পাসওয়ার্ড দিয়ে সাইটটিতে লগইন করতে হবে। সেখানে তার একটি প্রোফাইল তৈরি হবে। প্রোফাইল থেকে মৃত্যু সনদের জন্য আবেদন করা যাবে।

এজন্য আবেদনের সঙ্গে মৃত ব্যক্তির দাফনের রশিদ সংযুক্ত করতে হবে। এরপর মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মৃত্যু সনদের নির্ধারিত ফি পরিশোধ করতে হবে। তখন ডিএসসিসি ওই মৃত ব্যক্তির ডেথ সার্টিফিকেট প্রস্তুত করে তার প্রোফাইলে পাঠাবে। এ সময় ব্যবহারকারী একটি নোটিফিকেশন মেসেজ পাবেন। তখন যেকোনো জায়গা থেকে এটি ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যাবে। এছাড়া মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীদের সম্পত্তি নিয়ে বিভিন্ন ঝামেলাও নিরসন হবে বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জমি বা অন্যান্য সম্পত্তি বণ্টনের দায়িত্ব থাকা কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা মৃত ব্যক্তি বা তার ওয়ারিশদের তথ্য সহজেই দেখতে পাবেন। রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে একাউন্টধারী গ্রাহক সব মৃত ব্যক্তির তথ্য দেখতে পাবেন। এ ক্ষেত্রে দাফন করার সময় দেওয়া একটি সিরিয়াল নম্বর দিয়ে সার্চ করলে সহজেই কাক্সিক্ষত ব্যক্তির সব তথ্য চলে আসবে।

এই ওয়েব পেজের মাধ্যমে বিদেশে অবস্থানরত নাগরিকরা তাদের আত্মীয়-স্বজনের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কোরআন খানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল করাতে পারবেন। এই পেজে যথা সময়ে তাদেরকে এলার্মিং করা হবে। পরে এসব আয়োজনের ছবি ও ভিডিও ক্লিপস ওয়েব পেজে আপলোড করা হবে, যা ওই ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজনসহ সবাই দেখতে পাবেন।

এছাড়া গুগল ম্যাপের মাধ্যমে নিকট আত্মীয়ে কবরের সর্বশেষ অবস্থান, ছবিও দেখা যাবে। তারা চাইলে রিয়েল পিকচার পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আর এসব আয়োজনের জন্য থাকবে ডিএসসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও সমাজকল্যাণ বিভাগ। তবে এর জন্য টাকা পরিশোধ করতে হবে।

ডিএসসিসির তিনটি কবরস্থানের মধ্যে কার্যক্রমটি প্রথমে আজিমপুর কবরস্থানে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হবে। এতে সুফল পেলে জুরাইন ও খিলগাঁও কবরস্থানকেও প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। এরইমধ্যে আজিমপুর কবরস্থানের গত এক বছরের মৃত ব্যক্তিদের ডাটা সংগ্রহ করেছে ডিএসসিসি। এই ডাটাগুলো তাদের ওয়েব পেজে সংযুক্ত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এর আগের ৫ বছর, এরপর ১০ বছরের ডাটা সংগ্রহ করা হবে। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর তা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আইসিটি বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার মো. আবু তৈয়ব রোকন বলেন, এই উদ্যোগটি বাস্তবায়ন হলে মৃত ব্যক্তির সব তথ্য সহজে পাওয়া যাবে। ওয়ারিশদের মধ্যে সম্পত্তি বণ্টনের সুবিধা হবে। কেউ চাইলে বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে সহজেই মৃত ব্যক্তির তথ্য ও ডেথ সার্টিফিকেট নিতে পারবেন। অনেকেই আছেন কর্মব্যস্ততার কারণে বাবা-মা বা আত্মীয়-স্বজনের মৃত্যুবার্ষিকী ভুলে যান। সে ক্ষেত্রে মৃত্যুবার্ষিকীর সাত দিন আগে ও মৃত্যুবার্ষিকীর দিন আত্মীয়-স্বজনের কাছে এই সার্ভিসের মাধ্যমে বার্তা পাঠানো হবে। যা মৃত ব্যক্তির স্বজনদের প্রোফাইলে নোটিফিকেশন আকারে চলে যাবে।

ডিএসসিসির আইসিটি সেল সূত্রে জানা গেছে, ওয়েব পেজটি চালু করার সব কাজ সম্পন্ন হলেও ডেথ সার্টিফিকেটের ডিজাইনের কাজ চলছে। এটি তৈরির কাজ করছে সংস্থাটির সমাজকল্যাণ বিভাগ। চাহিদা অনুযায়ী, এসব ডেথ সার্টিফিকেট মৃত ব্যক্তির স্বজনদের মধ্যে সরবরাহ করা হবে।

"পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন,অনলাইন,মেয়র সাঈদ খোকন,ডাটাবেজ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist