reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষা

সেনাবাহিনীকে সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী

সেনাবাহিনীকে গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার বিষয়ে মনযোগী হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমান সরকারের আমলে উন্নয়ন তুলে ধরে অশুভ ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি যেন বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে না পারে সে বিষয়েও প্রতিরক্ষা বাহিনীতে সতর্ক থাকার তাগিদ দেন সরকার প্রধান।

বৃহস্পতিবার নাটোরের কাদিরাবাদ সেনানিবাসে কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্স ষষ্ঠ কোর পুর্নমিলনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সকালে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে নাটোর যান তিনি। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে যান সেনানিবাসে। এ সময় সেনাপ্রধান আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাকে অভ্যর্থনা জানান। পরে শেখ হাসিনা যোগ দেন পুনর্মিলনীতে। প্রধানমন্ত্রী সেখানে হুড খোলা গাড়িতে চড়ে সেনা সদস্যদের কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন এবং সালাম গ্রহণ করেন। এরপর বক্তব্য দেয়া শেষে নবীন সদসদের সঙ্গে ফটোশেসনে অংশ নেন।

সেনাবাহিনীকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পবিত্র সংবিধান এবং দেশের সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় আপনাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক যেকোনো হুমকি মোকাবেলায় সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে। দেশের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি আধুনিক উন্নত ও সুখীসমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণেও সেনাবাহিনীকে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে হবে।

সেনাবাহিনী তার একাগ্রতা, কমদক্ষতা এবং নানাবিধ জনসেবামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য সার্বজনীন আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে উল্লেখ করে এই বাহিনীর সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্কের বিষয়টিও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। বলেন, আমার দুই ভাই শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল ও শহীদ লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। শেখ জামাল ১৯৭৫ সালে রয়াল মিলেটারি সেন্ট হার্স্ট থেকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ শেষে কমিশন শেষে সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়। আমি আপনাদের মাঝে আমার হারানো ভাইদের খুঁজে পাই।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ফোর্সেস গোল ২০৩০ অনুযায়ী সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নে নেয়া নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। সেনাবাহিনীতে অনেক ইনফ্রেন্টি রেজিমেন্ট, আধুনিক যানবাহন, হেলিকপ্টার, যুদ্ধাস্ত্র এবং অন্যান্য সরঞ্জাম সংযোজনের পাশাপাশি সিএমএইচে উন্নতমানের চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করার কথা তুলে ধরেন তিনি।

সেনা সদস্যদের বেতন ও রেশন বৃদ্ধি, উন্নতমানের প্রশিক্ষণ, আবাসন, ব্যারাক ও মেসের ব্যবস্থা করার কথাও তুলে ধরেন সরকার প্রধান। বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশের উন্নয়নের বর্ণনাও দেন। ২০০৫ সালে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২২ শতাংশে নামিয়ে আনা, মাথাপিছু আয় ৫৪৩ ডলার থেকে এক হাজার ৬১০ ডলারে, গড় আয়ু ৭২ বছরে উন্নীত হওয়া, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নয় গুণ বেড়ে ৩৩.৩৪ বিলিয়ন ডলার হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি। থ্রিজির পরে ফোরজি যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল, পায়রা বন্দর, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল, এলএনজি টার্মিনাল, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, ‘ষড়যন্ত্র’ পায়ে ঠেলে নিজ অর্থে পদ্মাসেতু নির্মাণ প্রকল্পের কথাও তুলে ধরেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাংলাদেশকে বিশ্বের মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। এজন্য সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে। কোনো অশুভ ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি যেন দেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে না পারে, সেজন্য সকলকে সজাগ থাকতে হবে।

যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দুর্ঘটনায় দুর্গতদের সাহায্য ও সহযোগিতায়, মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের সহায়তায় সেনাবাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা। এর ফলে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হওয়ার বিষয়টিও তুলে ধরেন। বলেন, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে সেনাসদস্যদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকায় দেশের ভাবমূর্তি বিশ্বে উজ্জ্বল হয়েছে।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
প্রধানমন্ত্রী,গণতন্ত্র ও সংবিধান,সেনাবাহিনী,শেখ হাসিনা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist