সম্পাদকীয়

  ১৩ আগস্ট, ২০২০

কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ গতিশীল হোক

কর্মসংস্থান সৃষ্টিই যখন লক্ষ্য, তখন তাকে ইতিবাচক এবং শুভ বলতেই হয়। বিশেষত গোটাবিশ্ব যখন অর্থনৈতিক মন্দায় পর্যুদস্ত, তখন নিজেকে বাঁচানোর জন্য এ সিদ্ধান্তের কোনো বিকল্প নেই। কেননা, নিজের পায়ে শক্ত করে দাঁড়াতে না পারলে এ সময় কারো মুখাপেক্ষী হয়ে থাকাটা হবে আত্মহত্যার সামিল। আর সে কারণেই বলতে হয়, সরকার ঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। করোনার ভয়াবহ আক্রমণে যখন বিধ্বস্ত পৃথিবীর উৎপাদন-বণ্টন এবং ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়েছে; তখন নিজেকে বাঁচানোর দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হবে। বাংলাদেশ সরকার সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড়। তার এই দৃঢ় সিদ্ধান্তের প্রতি আমাদের সমর্থন শতভাগ।

তথ্যমতে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির লক্ষ্যে দেশে প্রায় ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। এসব অঞ্চলে আগামী ১৫ বছরের মধ্যে অন্তত কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। তবে তা এক দিনেই নয়। ধারাবাহিকভাবে তা সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। একই সঙ্গে একই ধারাবাহিকতায় দেশে বেকারের সংখ্যা কমে আসবে। পরিকল্পনার মধ্যে চট্টগ্রামের মীরসরাই, সীতাকুন্ড এবং ফেনীর সোনাগাজীতে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর’ অন্যতম। এ অর্থনৈতিক অঞ্চলটির আয়তন প্রায় ৩০ হাজার একর; যার অনেকটা অংশজুড়ে রয়েছে মীরসরাই। এ অঞ্চলসমূহের প্রকল্পগুলো চালু হলে দেশ বেকারমুক্ত হওয়ার সম্ভাবনার কথা বলছে বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটি (বেজা)। ইতোমধ্যেই এ অঞ্চলের অবকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে। এই খাতে বিশ্বব্যাংকের ৫০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার কথা রয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা দাঁড়াবে ৪ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ডিজিটাল এন্টারপ্রেনারশিপ (প্রাইড) ফর বেজা প্রজেক্ট শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় এ ঋণ দেবে সংস্থাটি। প্রকল্পের আওতায় সরকারের পক্ষ থেকেও ৩৮৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। ফলে প্রকল্পের আওতায় মোট ৪ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা খরচ করা হবে। বর্তমানে প্রকল্পের কাজ অব্যাহত রয়েছে। বিশ্বব্যাংক বোর্ড এরই মধ্যে ৫০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করেছে। ২০১৫ সালে যাত্রা শুরু হয়ে ২০৩০ সালে এর কাজ শেষ হবে। এর মাঝেই পার হতে চলেছে পাঁচ-পাঁচটি বছর। সামনে আর একটি দশক। যেভাবে কাজ এগিয়ে চলছে, তা অব্যাহত থাকলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমরা নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখার সৌভাগ্য অর্জন করব। এ ছাড়া পণ্য বহুমুখীকরণের মধ্য দিয়ে দেশের রফতানি আয় বৃদ্ধি ও বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জনের সুযোগ তৈরি হবে। একই সঙ্গে দেশ দারিদ্র্যমুক্ত হওয়ার পথে অনেকটা এগিয়ে যাবে।

অনেক দুঃখ আর কষ্টের প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে বাংলাদেশ এখন এমন এক সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক দেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তা আমাদের সুন্দর এক চিন্তার ক্ষেত্রকে প্রসারিত করছে। আমরা মনে করি, আমাদের দুঃখের দিন, কষ্টের মুহূর্ত শেষ হতে চলেছে। আগামী প্রজন্ম নিশ্চয়ই এক নান্দনিক পৃথিবীতে বসবাসের সুযোগ পাবে।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কর্মসংস্থান,সম্পাদকীয়,প্রকল্প
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close